ফরাক্কাকে দূষণমুক্ত করতে উদ্যোগী হয়েছে এনটিপিসি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ফরাক্কা |
ফরাক্কায় নিজস্ব তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিকাঠামো নির্মাণ ও পরিবেশ সুরক্ষায় জোর দিল এনটিপিসি। এলাকার উন্নয়নে এ বছর ২ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে তারা। ওই টাকা স্বাস্থ্য, শিক্ষা প্রভৃতি খাতে খরচ করা হবে।
ফরাক্কা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার (কারিগরি) অসিত মুখোপাধ্যায় জানান, ৪৪৯৪ একর এলাকা জুড়ে মোট ২১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ৬টি ইউনিট চালু রয়েছে ফরাক্কায়। বছরে প্রায় ১ কোটি ৬ লক্ষ মেট্রিক টন কয়লা ব্যবহার হয় সেখানে। এই কয়লা থেকে প্রাপ্ত ছাই পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে প্রথম দিকে সমস্যার সৃষ্টি করলেও এখন ফ্লাই অ্যাশের লাভজনক ব্যবহার শুরু হয়েছে। জমি ভরাট, বাড়ি তৈরি মশলা উপাদান হিসেবে প্রয়োগ, অ্যাসবেস্টস, ইট উপাদান হিসেবে এই ছাই ব্যবহৃত হচ্ছে। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণে মাটি ভরাট করার জন্য ফরাক্কা থেকে বিপুল পরিমাণে ছাই ব্যবহার হচ্ছে। তিনি বলেন, “গত আর্থিক বছরে ২১.৫৯ লক্ষ মেট্রিক টন ছাই ব্যবহার হয়েছে যা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট উৎপাদিত ছাইয়ের ৮৬.৯৪ শতাংশ। তিনটি ‘অ্যাশ ব্রিক’ প্ল্যান্ট থেকে তৈরি ইট এনটিপিসি-র নিজস্ব চাহিদা পূরণে প্রভূত সাহায্য করেছে। দূষণ রুখতে ইতিমধ্যেই এলাকায় ২৩ লক্ষ ৩৪ হাজার গাছও লাগানো হয়েছে।”
ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ পায় এ রাজ্য, প্রায় ৩৩ শতাংশ। এ ছাড়া ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা, সিকিম এবং ডিভিসিকে বিদ্যুৎ দেওয়া হয় ফরাক্কা থেকে। কিন্তু কয়লা ও জলের ঘাটতি নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত এনটিপিসি কর্তৃপক্ষ।
ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার সিংহ ভাগই আসে ঝাড়খণ্ডের লালমাটিয়া থেকে।
অসিতবাবু বলেন, “সারা বছর স্বাভাবিক ভাবে ৬টি ইউনিট চালাতে ১১ মিলিয়ন টন কয়লার প্রয়োজন। কিন্তু তা পাওয়ার ক্ষেত্রে ইসিএল এবং রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়া থেকে উচ্চমানের কয়লা আনতে ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র লাগোয়া ফিডার ক্যানেলে একটি জেটি তৈরির কাজ আগামী এপ্রিল মাসেই শেষ হয়ে যাবে। এর ফলে হলদিয়া ডক হয়ে কয়লা আসতে পারবে জলপথে সরাসরি ফরাক্কায়। তাতে সঙ্কট মিটবে।” |