সঙ্গী জখম, পথ আটকে প্রতিবাদ হনুমান দলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বছর দেড়েক আগে জখম হনুমানের চিকিৎসার দাবিতে স্থানীয় গ্রামবাসীরা পথ অবরোধ করছেন এমন নজির রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে আবারও সেই একই ছবি দেখল ডেবরার হরিহরপুর। তবে সেই একই দাবিতে এ বার পথ অবরোধ করল একদল হনুমান!
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেকারের ধাক্কায় জখম হয়ে রাস্তার উপরেই পড়ে ছিল একটি হনুমান। মিনিট কয়েকের মধ্যে আশপাশ থেকে প্রায় ২০-২২টি হনুমান এসে বসে পড়ে রাস্তায়। ফলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ডেবরা-সবংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এমনকী, পথ চলতি সাধারণ মানুষও ‘অবরোধ’ এড়িয়ে রাস্তা পেরোনোর ঝুঁকি নেননি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিশ ও বন দফতরের কর্মীরা। জখম হনুমানটিকে উদ্ধার করা হয়। এরপরই হনুমানের দলটি এলাকা ছাড়তে শুরু করে। যদিও চিকিৎসা শুরু হওয়া সত্ত্বেও জখম হনুমানটিকে বাঁচানো যায়নি। আজ, বুধবার তার দেহের ময়নাতদন্ত হবে বলে বন দফতর সূত্রে খবর। দফতরের খড়্গপুর বিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “ট্রেকারের ধাক্কায় একটি হনুমান জখম হয়েছিল। চিকিৎসা শুরু করেও তাকে বাঁচানো যায়নি। আঘাত গুরুতর ছিল। তবে কর্মীরা সব রকম চেষ্টা করেছেন।”
কী ভাবে ওই হনুমানটি রাস্তার উপর চলে এল? বন দফতরের কর্তাদের প্রাথমিক ধারণা, সম্ভবত তাড়া খেয়েই হনুমানটি রাস্তার উপর চলে এসেছিল। সেই সময় সবংয়ের দিক থেকে ডেবরার দিকে আসা যাত্রীবাহী একটি ট্রেকারের ধাক্কাতেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
বছর দেড়েক আগেও হনুমানের চিকিৎসার দাবিতে অবরোধ হয়েছিল। দিনটি ছিল গত বছরের ৮ মে। তখন বিধানসভার ভোট-পর্ব চলছে। নিরাপত্তার জন্য আসা নাগা বাহিনীর জওয়ানরা ছিলেন স্থানীয় তেলিপুকুর হাইস্কুলে। আসার পর থেকেই ‘অমানবিক’ আচরণ করতে শুরু করেন জওয়ানরা। একটি হনুমানের হাত কেটে দেন তাঁরা। ওই হনুমানকে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। মাথায় কোপ মারার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ওই কোপ এসে পড়ে হাতের উপর। মূহুর্তে হনুমানের হাত কেটে রক্ত বেরোতে থাকে। হনুমানটির চিকিৎসার দাবিতে সে বার অবরোধ করেছিলেন স্থানীয় গ্রামবাসীরাই। অবরোধ হয়েছিল খড়্গপুর গ্রামীন এলাকার বসন্তপুরে, ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর।
এ দিনের ঘটনার পর হরিহরপুরের বাসিন্দা বলাই আদক বলেন, “হনুমানের দলটি এমন ভাবে বসেছিল যে কেউই রাস্তা পেরোনোর ঝুঁকি নেননি। পরে বন দফতরের কর্মীরা এসে হনুমানটিকে উদ্ধার করার পর ফের যান চলাচল শুরু হয়।” ডেবরা থানার ওসি কৃষ্ণেন্দু হোতা বলেন, “একদল হনুমান রাস্তার উপর বসে পড়ায় যান চলাচলে কিছু সমস্যা হয়েছিল। পরে জখম হনুমানটিকে উদ্ধার করার পর দলটি অন্যত্র চলে যায়। তখন ফের যান চলাচল শুরু হয়।” |