পুজোর ‘ক্ষত’ দুই শহরের মাঠ-পুকুরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পুজো শেষ হয়েছে। মিটেছে প্রতিমা বিসর্জন-পর্ব। তবে এখনও পুরনো চেহারায় ফেরেনি মেদিনীপুর-খড়্গপুর, দুই শহরের একাংশ পুজোর মাঠ। যত্রতত্র আজর্বনা জমে রয়েছে। পুকুরেরও একই অবস্থা। ফলে জল দূষণের আশঙ্কাও রয়েছে।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ দুই শহরের বাসিন্দারা। যে সব মাঠে পুজো হয়, সেগুলি এলাকার ছেলেমেয়েদের খেলাধুলোর জায়গা। অনেক মাঠে স্থানীয়রা প্রাতর্ভ্রমণও করেন। আবর্জনা জমে থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সকলকেই। সমস্যার কথা মানছেন পুর-কর্তৃপক্ষও। খড়্গপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরপ্রধান তুষার চৌধুরী বলেন, “বেশ কয়েকটি পুকুর ও মাঠ পরিষ্কার করতে হবে। মঙ্গলবার পুরসভায় এসেই আমি সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছি। দ্রুত আবর্জনা সাফাইয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” একই আশ্বাস দিয়েছেন মেদিনীপুরের পুরপ্রধান পারিষদ (কনজারভেন্সি) সুনন্দা খান। তবে তাঁর বক্তব্য, “এ ক্ষেত্রে পুজো কমিটিগুলিকেও উদ্যোগী হতে হবে। কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলে মাঠ পরিষ্কারের ব্যবস্থা করতে হবে।” |
পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে তা উপেক্ষা করেই দুই শহরের বেশ কয়েকটি পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। এ বারও তাই হয়েছে। এ বছর আবার কাঁসাই নদীতে জল কম। সমস্যা এড়াতে একাংশ উদ্যোক্তা নদীমুখোই হননি। পুকুরেই সেরেছেন প্রতিমা নিরঞ্জন। ফলে সংশ্লিষ্ট পুকুরে জল দূষণের আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে। গত বুধবার থেকেই শুরু হয়েছিল বিসর্জন-পর্ব। মেদিনীপুর-খড়্গপুরে প্রায় ৩০০টি পুজো হয়। সরকারি নির্দেশ মেনে অধিকাংশ প্রতিমাই বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল। বেশিরভাগই পুকুরে। তারপর চার দিন পেরিয়েছে। তবে এখনও পুকুরগুলির হাল ফেরেনি। অনেক পুকুরের আশপাশ অপরিষ্কার। ভেজা খড় থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
পুকুরে বিসর্জন কি কোনও ভাবেই আটকানো যাবে না? পুর-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটিকে সচেতন হতে হবে। নদীরঘাটে সব ব্যবস্থাই থাকে। অথচ কিছু পুজোর উদ্যোক্তারা নদীতে না গিয়ে এলাকার পুকুরেই প্রতিমা বিসর্জন দেন। স্থানীয় মানুষের কথা তাঁদের ভাবা উচিত। কারণ, তাঁরাই ওই পুকুরের জল নানা কাজে ব্যবহার করেন। একই পরিস্থিতি দুই শহরের একাংশ খেলার মাঠে। খড়্গপুরের সুভাষপল্লি থেকে মেদিনীপুরের রাঙামাটি, বার্জটাউন, বিধাননগর প্রভৃতি মাঠে পুজো হয়। মণ্ডপ তৈরির জন্য মাটি খোঁড়া হয়। পুজোর ক’দিন এই মাঠগুলিতে কার্যত মেলা বসে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে জমা হতে থাকে আবর্জনা। পুজো শেষে এই সব আবর্জনা পরিস্কারের ব্যবস্থা করা হয়। |
মেদিনীপুরের পুরপ্রধান পারিষদ (কনজারভেন্সি) বলেন, “ইতিমধ্যে কয়েকটি পুকুর পরিষ্কার করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি মাঠে বিকেলে ছেলেমেয়েরা খেলাধুলো করে। সকালে অনেকে প্রাতর্ভ্রমণ করেন। আবর্জনা থাকলে সমস্যা হবেই। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটিগুলি উদ্যোগ নিলে সমস্যার দ্রুত সমাধান হতে পারে। আমরা সব রকম সহযোগিতা করব।”
|
ছবি দু’টি তুলেছেন সৌমেশ্বর মণ্ডল ও রামপ্রসাদ সাউ। |