প্রবন্ধ ১...
উচ্চশিক্ষার মরুভূমিতে প্রেসিডেন্সির মরূদ্যান?
ই লেখা রাজ্যের উচ্চশিক্ষা নিয়ে। কিন্তু গোড়ায় একটু ব্যক্তিগত জবানবন্দি জুড়লে পাঠক মার্জনা করবেন। সম্প্রতি সরকারের উচ্চশিক্ষানীতি নিয়ে ভিন্ন মত ব্যক্ত করেছি ও একটি সম্মাননীয় কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছি। সে দিন টিভিতে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর এক সাক্ষাৎকারে অন্য অনেক বিষয়ের সঙ্গে এ সম্বন্ধেও তাঁর অভিমত শুনলাম। এমন ক্ষেত্রে রাজনীতিকরা প্রায়ই সমালোচকদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন। ব্রাত্য বসু কিন্তু যে সংযম ও সৌজন্যের পরিচয় দিলেন, তা আমাকে শুধু আশ্বস্ত নয়, মুগ্ধ করেছে। তাই আরও মনে হয়েছে, অপরাধবোধ এড়াবার তাগিদেই আমার মতগুলি স্পষ্ট করে বলা দরকার। সমাজও জানতে পারবে, হয়তো সরকারও নিরপেক্ষ বিচারে একটু ভেবে দেখবেন।
উপলক্ষ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, তাই দিয়েই শুরু করি। প্রেসিডেন্সিকে সরকার বলে-কয়েই বিশেষ নজরে দেখছেন। এর একটা খুব ভাল দিক আছে। এই প্রথম এ রাজ্যে কোনও সরকার আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষার পক্ষে জোর গলায় সওয়াল করলেন। (এই মানের প্রতিষ্ঠান আগেও এখানে গড়ে উঠেছে সে প্রসঙ্গে পরে আসছি কিন্তু কর্তৃপক্ষের ঔদাসীন্য বা খোলাখুলি বিরোধের সঙ্গে লড়ে।) আর প্রেসিডেন্সির উপাচার্য ও উপদেষ্টামণ্ডলীকে সাধুবাদ, তাঁরা অত্যন্ত দ্রুত ও সক্রিয় ভাবে দেশ-বিদেশে বার্তা ছড়িয়ে ভাল শিক্ষকদের ডেকে আনার নতুন নজির স্থাপন করেছেন। আমাদের গয়ংগচ্ছ কেরানিসুলভ নিয়োগনীতির কুশীলবরা দেখে শিক্ষা নিতে পারেন।
সুপ্রতিষ্ঠিত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবন।
এর পরই কিন্তু প্রশ্নের শুরু। প্রেসিডেন্সির জয়যাত্রা প্রশস্ত করতে তাকে নানা বিধিনিষেধ থেকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে, অধ্যাপকদের দেওয়া হচ্ছে বাড়তি সুযোগ ও দক্ষিণা। সহকারী অধ্যাপক বার্ষিক এক লক্ষ, সহযোগী অধ্যাপক দু’লক্ষ ও পূর্ণ অধ্যাপক তিন লক্ষ টাকা পাবেন ভ্রমণ, গবেষণা ইত্যাদির জন্য; রাজ্যের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এক পয়সাও নয়। প্রেসিডেন্সির জন্য বরাদ্দ হয়েছে পূর্ণ প্রোফেসরের চেয়েও বেশি বেতন ও অনুদান-সহ কুড়িটি পদ, পাঁচটিতে অনেকটাই বেশি, অন্য কোথাও একটা জোটেনি। সরকারের এই দু’টি বরেই প্রেসিডেন্সি অন্যদের তুলনায় বড় সুবিধা পেল। আরও নানা প্রস্তাব আছে, তবে সেগুলি (যত দূর জানি) এখনও গৃহীত হয়নি।
দু’টি প্রশ্ন। যতই অপরিহার্য হোক, কৃতী শিক্ষককুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্যের নানা শর্তের একটি। অন্যগুলির মধ্যে আছে নানা রকমের পরিকাঠামো, আছে প্রশাসন ব্যবস্থা, সর্বোপরি একটি পরিমণ্ডল ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, যা ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়-স্থাপন গাছ পোঁতার মতো বাড়তে সময় লাগে, রাতারাতি মগডাল গজায় না। একটি সমৃদ্ধ কিন্তু অধুনামলিন গ্রন্থাগার ও সীমিত কিছু বৈজ্ঞানিক সংগ্রহ ও সরঞ্জাম ছাড়া আজকের প্রেসিডেন্সি অতীত থেকে কিছুই উত্তরাধিকার পায়নি, বরং পেয়েছে কিছু আমলাতান্ত্রিক জঞ্জাল।
এমন অবস্থায় উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিক্ষকদের মনোবল অটুট রাখা ও কাজের রসদ জোগানো সহজ নয়। কর্তৃপক্ষের ও সর্বোপরি শিক্ষকদের নিজেদের চেষ্টায় তিলোত্তমাসম্ভব নিশ্চয় ঘটতে পারে, কিন্তু অনিবার্য ভাবে তিলে-তিলে, অনেক শ্রম ও কিছু গ্লানির বিনিময়ে। প্রচারের আড়ালে এ দিকটা ঢেকে রাখলে হতাশা অনিবার্য, বিশেষত নবাগত তরুণ শিক্ষকদের।
এ বার দ্বিতীয় প্রশ্নে আসি: রাজ্যের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক চিত্র, বিশেষত বর্তমান প্রেক্ষিতে। আত্মনিন্দুক বঙ্গসমাজের বদ্ধমূল ধারণা, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ষোলো আনা গোল্লায় গেছে। আঁস্তাকুড়ের মতো শিক্ষা-প্রাঙ্গণ আর রূঢ় নৈর্ব্যক্তিক জনসংযোগ থেকে ধারণাটি ঘনীভূত হয়। কিন্তু বাস্তব অবস্থা হল, পশ্চিমবঙ্গ আজও উচ্চশিক্ষায় ভারতের প্রথম সারিতে। দেশের নয়টি প্রতিষ্ঠিত ‘সম্ভাবনাময়’ বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি এ রাজ্যে; আই আই টি-র সমমর্যাদার জন্য বিবেচিত সাতটির দু’টি। রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘অ্যাকাডেমিক ইমপ্যাক্ট’ প্রকল্পে একমাত্র ভারতীয় সংযোজন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। দিল্লির অতি-বিশেষ দৃষ্টান্ত বাদ দিলে কেবল তামিলনাড়ুর খতিয়ান মোটের উপর তুলনীয় বা কিছু বিচারে শ্রেয়, অন্য কোনও রাজ্যে নয়।
রাজ্যের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলিতেও রয়েছেন কিছু অসামান্য শিক্ষক ও গবেষক: প্রেসিডেন্সির নবাগত শিক্ষকদের মধ্যে যাঁরা শ্রেষ্ঠ, তাঁদের চেয়ে কোনও অংশে ন্যূন নন, বরং প্রায়ই আরও অভিজ্ঞ ও কীর্তিমান। এত দিন ধরে তাঁরা অনেক কিছু করেছেন ও গড়েছেন, প্রেসিডেন্সিতে যা এখনও পরিকল্পনা মাত্র, সদিচ্ছা বা স্বপ্নের স্তরে।
আমার অর্ধেক কর্মজীবন কেটেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকি অর্ধেকটা কিন্তু প্রেসিডেন্সিতে)। নিজের জ্ঞান থেকে তাই যাদবপুর সম্বন্ধেই দু-চার কথা বলি। আমার এক সহকর্মী রয়াল সোসাইটির দুর্লভ সম্মানের জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ে বিবেচনাধীন। আর এক জন আবহাওয়া পরিবর্তন নিয়ে নোবেলজয়ী রিপোর্টের অন্যতম প্রণেতা। পৃথিবীর একাধিক অগ্রণী বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ড, কর্নেল, লা সাপিয়েনৎসা তাঁদের ছাত্রদের এখানে পড়তে পাঠান। এখানকার অগুনতি ছাত্র বিদেশে উচ্চস্বীকৃতি লাভ করেন, বহু শিক্ষকের আন্তর্জাতিক মহলে অবাধ আদানপ্রদান; সারা বিশ্বের পণ্ডিতবর্গ নিয়মিত প্রচুর আসেন। যুগ্ম প্রকল্প সাধিত হয় বিপুল মাপে। গত দশ বছরে সক্রিয় সঙ্গীদের মধ্যে আছে অন্তত একশো ভিনদেশি বিশ্ববিদ্যালয়, রাষ্ট্রপুঞ্জের একাধিক সংগঠন, বিভিন্ন দেশের সরকার, জাপানের সাসাকাওয়া ফাউন্ডেশন ও ব্রিটিশ লাইব্রেরি।
জাতীয় স্তরে, কলা বিভাগে যাদবপুরে যতগুলি ইউজিসি স্বীকৃত ‘সেন্টার অব অ্যাডভান্সড স্টাডি’ আছে, ভারতে আর কোথাও নেই। বিজ্ঞানে ভারত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের স্বীকৃতিও প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে, অতএব মেলে নানা প্রকল্প ও বিশেষ অনুদান। প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রায় সব হিসাবে যাদবপুরের স্থান দেশের প্রথম পাঁচ-ছয়টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে, কখনও বা কিছু কিছু আই আই টি-র উপরে।
নিজের প্রতিষ্ঠানের ঢাক পেটাতে সংকোচ হয়, তবু একান্ত নিজের প্রেরণায় কিছুটা করলাম, কারণ কথাগুলো রাজ্যবাসীর জানা দরকার। কলকাতা, বেসু ও হয়তো কিছু মাত্রায় অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও অনুরূপ বিবরণ দিতে পারে। অথচ বর্তমান প্রচারযন্ত্রের কল্যাণে এই ধারণা বহাল যে রাজ্যের উচ্চশিক্ষাক্ষেত্র এক মরুভূমি, এত দিনে একটা মরূদ্যান সৃষ্টি হতে চলেছে, অতি বিশেষ ব্যবস্থা ও অর্থব্যয় ছাড়া সেটা সম্ভব নয়। বাস্তব দৃষ্টিতে বরং বলতে হয়, প্রেসিডেন্সির শ্রীবৃদ্ধি হবে, নিশ্চয় হবে; তবে আগামী দশ বছরে যদি তা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে উপরোক্ত পর্যায়ে পৌঁছতে পারে, সেটাই যথেষ্ট।
কিন্তু বর্তমান বৈষম্য চালু থাকলে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলির তত দিনে কী হবে? তাদের শিক্ষকরা কি কোনও স্বীকৃতি, কোনও উৎসাহ, কোনও অনুদান পাবেন না? তাঁদের কর্মধারা অব্যাহত রাখতে নবীনদের আকৃষ্ট করার কোনও সুযোগ জুটবে না? আমরা কি রাজ্যে একটার বেশি মেধাকেন্দ্র বরদাস্ত করব না? আর দু-চারটে থাকলে আপত্তি আছে, বিশেষত সেগুলি যখন তুলনায় যথেষ্ট এগিয়ে?
একটা প্রস্তাব তাই বিনীত ভাবে পেশ করছি: আগেও করেছি, কৌতূহলী পাঠক প্রেসিডেন্সির উপদেষ্টামণ্ডলীর ওয়েবসাইট খুলে দেখতে পারেন। তার মূল নীতি খুব সহজ: কর্মস্থলের ভিত্তিতে নয়, মেধার বিচারে সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-গবেষকদের জন্য থাকুক বাড়তি সুযোগ ও পুরস্কার। তাতে প্রেসিডেন্সি যদি সত্যিই বেশি করে কৃতী শিক্ষকদের আকৃষ্ট করতে পারে, তাঁদের সম্মান ও সাম্মানিক প্রদানে অসুবিধা হবে না, যেমন হবে না অন্য সব জায়গার সমতুল্য শিক্ষকদের। তাঁদের ডেকে আনতে ও ধরে রাখতে সব বিশ্ববিদ্যালয় নিরপেক্ষ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে, সফল হলে তারাও পুরস্কৃত হবে প্রাতিষ্ঠানিক সম্মান ও অনুদানের দ্বারা।
একটা গুরুতর কথা অবশ্য না বললেই নয়। গত এক দশকে কী ব্যক্তিগত প্রাপ্তিতে, কী প্রাতিষ্ঠানিক অনুদানে কেন্দ্রীয় ও রাজ্যচালিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে বৈষম্য উৎকট ভাবে বেড়ে চলেছে। এতে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সমগ্র ভাবে তেমন উন্নতি দেখাতে পারেনি, কিন্তু রাজ্য-বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে। আই আই টি বা কেন্দ্রীয় গবেষণা-সংস্থার সঙ্গে তুলনাটা আরও মর্মান্তিক। এমন অবস্থায় চটজলদি সমাধান হিসাবে রাজ্য স্তরে একটি প্রতিষ্ঠানের উপর দাক্ষিণ্য বর্ষণের কথা মনে হতেই পারে, কিন্তু অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে আরও বেশি করে হতাশা ও অবনতির পথে ঠেলে দেওয়া হবে। যতই দুঃসাধ্য হোক, অন্য বহু ক্ষেত্রের মতো এখানেও কেন্দ্র-রাজ্যের একটা সার্বিক বোঝাপড়া ছাড়া গতি নেই। তার পথ বাতলানো এই প্রবন্ধের এক্তিয়ারের বাইরে।
একটা শেষ প্রসঙ্গের অবতারণা করব: অর্থ নয়, সুযোগ ও স্বাধীনতার। প্রেসিডেন্সির চাহিদা মেটাতে যে-সব বিশেষ ব্যবস্থা বা ছাড় দেওয়া হচ্ছে, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কি তার সুযোগ পাবে না? কোনও সাংগঠনিক পদক্ষেপ একটি শিক্ষায়তনের পক্ষে উপকারী হলে অন্যদের পক্ষে নয় কেন? প্রেসিডেন্সির আইন পরিবর্তন হচ্ছে সেখানকার সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর, অন্যদের হল তাঁদের অন্ধকারে রেখে। ফলে যাদবপুরের আইনে স্থান পেল অস্তিত্বহীন আইন ও ম্যানেজমেন্ট শাখা, পেল না ইউজিসি-অভিনন্দিত আন্তর্বিষয়ক কেন্দ্রগুলি, যেখানে অধিকাংশ বড় মাপের গবেষণা অনুষ্ঠিত হয়। যাদবপুরও ‘ইউনিটারি’ সংস্থা, রবীন্দ্রভারতীও। প্রেসিডেন্সির মতো তাদেরও পরিচালন ব্যবস্থা কেন দুইয়ের বদলে এক স্তরের হবে না? শিক্ষক নিয়োগে কেন সকলের মিলবে না একই স্বাধীনতা? অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়, ২০১১-র গোড়া থেকে প্রেসিডেন্সি বাদে রাজ্যের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রায় থমকে গেছে, বন্ধ আছে নানা জরুরি কাজ। কবে জট পুরোপুরি কাটবে তাও স্পষ্ট নয়।
পূর্বতন সরকার বহু অপকীর্তি করে থাকতে পারেন, কিন্তু তার প্রতিকারের ছক কষতে কষতে দেড় বছর ধরে রুটিন কাজকর্মও যথেষ্ট ব্যাহত হয়েছে, উন্নয়নের কথা ছেড়েই দিলাম। উন্নয়নের অভাবে, ন্যূনতম শিক্ষক ও পরিকাঠামোর অভাবে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কমবেশি বিপর্যস্ত, কলেজগুলি রীতিমত ধুঁকছে। উচ্চশিক্ষার উন্নতিসাধনে সরকার যে কমিটি গড়েছিলেন, সেখানে এ সব নিয়ে নানা সদর্থক আলোচনা হয়েছিল। কমিটির রিপোর্ট জমা পড়েছে বছরের গোড়ার দিকে। সেটি শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে তুলে দিতে সময় লাগবে আধ ঘণ্টা: আশা করা যাক, বছর শেষ হবার আগে কাজটি হবে। তবেই আমরা জানতে পারব উচ্চশিক্ষা নিয়ে সরকারের সম্যক পরিকল্পনা। আশা করব তার সুষ্ঠু ও সুষম রূপায়ণের।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে প্রোফেসর এমেরিটাস। মতামত ব্যক্তিগত।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.