সেচের জন্য জল চেয়ে পথ অবরোধ করলেন মন্তেশ্বরের তিন গ্রামের কয়েকশো চাষি। ডিভিসি ক্যানালে জল দেওয়ার দাবিতে ভাগরা-মূলগ্রাম পঞ্চায়েতের ওই সব গ্রামের চাষিরা মঙ্গলবার সিজনে মোড়ে প্রায় দু’ঘণ্টা অবরোধ করেন। শুধু মন্তেশ্বরের চাষিরা নন, সেচের জল না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন রায়না ও মেমারির বহু চাষিও।
জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা অবশ্য এ দিন জানান, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সেচের জল সরবরাহ করার কথা ডিভিসি-র। কিন্তু নানা এলাকার চাষিরা অসুবিধার কথা জানানোয় ডিভিসি এবং সেচ দফতরের সঙ্গে কথা বলে সময়সীমা পেরোনোর পরেও এক সপ্তাহ দৈনিক ১৬ হাজার থেকে ১৮ হাজার একর ফুট জল সরবরাহের ব্যবস্থা হয়েছে।
মন্তেশ্বরের চাষিদের দাবি, এলাকায় বিকল্প সেচ ব্যবস্থা দুর্বল। আমন ধানের চাষ হয় বৃষ্টির উপরে নির্ভর করে। এ বার বর্ষা দেরিতে আসায় ধানচাষ শুরু হতে প্রায় এক মাস দেরি হয়েছে। বর্তমানে অনেক জমিতে ধানের শিস আসছে। এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজন হয় প্রচুর জলের। মাসখানেক ধরে ভারী বৃষ্টির দেখা নেই। তার উপরে আবার ডিভিসি-র ক্যানালে জল মিলছে না। ফলে জমিতে ফাটল দেখা দিচ্ছে। ধানগাছ শুকিয়ে যেতে বসেছে। সম্প্রতি ডিভিসি কর্তৃপক্ষ কিছুটা জল ছাড়লেও এলাকায় তা পৌঁছয়নি বলে চাষিদের দাবি। তাঁদের অভিযোগ, অন্য গ্রামে লকগেট বন্ধ করে ডিভিসি-র ছাড়া জল আটকে দেওয়া হয়েছে। |
মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ ক্যানালে পর্যাপ্ত জলের দাবিতে মন্তেশ্বরের সিজনা, উজনা ও ভাদাই গ্রামের বাসিন্দারা অবরোধে সামিল হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান মন্তেশ্বরের বিডিও প্রদীপকুমার বারুই। তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাস দিলে বেলা ১১টা নাগাদ অবরোধ ওঠে। অবরোধে যোগ দেওয়া চাষি তাপস ঘোষ, হায়দার শেখরা বলেন, “ধান এলাকার মূল অর্থকরী ফসল। এই সময়ে জমিতে প্রচুর জলের প্রয়োজন। তা না মেলায় ধানগাছ শুকিয়ে যেতে বসেছে। প্রশাসনেক বিষয়টি জানানোর জন্যই অবরোধ কর্মসূচি নেওয়া হয়।” আর এক চাষি সঞ্জীব ঘোষ জানান, গত কয়েক দিনে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ধানের শিস বেরোতে দেরি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে জমিতে পর্যাপ্ত জল না থাকলে দেরিতে বেরনো শিসের বেশির ভাগের শস্যদানা থাকবে না। ফলে চাষ করে বিপুল লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
কালনা মহকুমা কৃষি আধিকারিক স্বপন কুমার মারিক বলেন, “বিকল্প সেচ ব্যবস্থা না থাকা মন্তেশ্বরের নানা এলাকায় এ বার দেরিতে চাষ শুরু হয়েছে। এলাকাগুলিতে জলের প্রয়োজন রয়েছে। এ ক্ষেত্রে জল না মিললে ফলন কমে যেতে পারে।” জেলাশাসকের অবশ্য আশ্বাস, সেচের জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রায়নার চাষিরা ইতিমধ্যে জল পেতে শুরু করেছেন। অন্য এলাকাতেও শীঘ্র সমস্যা মিটবে বলে তাঁর আশ্বাস। |