মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির আর্ট গ্যালারিতে শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি দুই শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে এসজেডিএর কর্মশালা। সবে মাত্র মঞ্চে উঠেছেন শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। রয়েছেন জলপাইগুড়ির বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা সহ অনেকেই। মঞ্চের একপাশে রাখা অতিথিদের আসন পর্যন্তও পৌঁছননি তাঁরা। আচমকা লোডশেডিং। ঝুপ করে অন্ধকার নামল অডিটোরিয়ামে। এসজেডিএর আধিকারিকরা পকেট থেকে মোবাইল বের করে টর্চ জ্বালিয়ে অতিথিদের আসনে বসালেন। অন্ধকার মঞ্চে আলো দিতে দর্শকাসন থেকেও কেউ কেউ মোবাইল টর্চের আলো ফেললেন মঞ্চের ওপরে। তার পর শুরু হল, বিদ্যুতের অপেক্ষা। আর্ট গ্যালারিতে নিজস্ব জেনারেটেরের ব্যবস্থা নেই। এদিনের অনুষ্ঠানের জন্য বাইরে থেকে জেনারেটরও ভাড়া করা হয়নি। সকলের বিরক্তি আঁচ করে এসজেডিএ-এর অফিসাররা ঘনঘন ফোন করতে শুরু করলেন বিদ্যুৎ পর্ষদের দফতরে। তাতেও কোনও ফল মিলল না। শেষ পর্যন্ত সোমবার অডিটোরিয়ামের পাশে একটি অনুষ্ঠানে ব্যবহারের পরে রাখা দুটি জেনারেটরের মালিককে খুঁজে এনে সেখান থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে মঞ্চের দু-একটি আলো জ্বালানো হল। |
তার পরে আলো-আধারি মঞ্চেই শুরু হলো অনুষ্ঠান। সব মিলিয়ে পৌনে ১ ঘণ্টা অন্ধকারে বসে তাকতে হল খোদ চেয়ারম্যানকে। এ ঘটনায় আর্ট গ্যালারির হাল নিয়ে জলপাইগুড়ির বাসিন্দাদের মধ্যে ফের ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, আধুনিক ভাবে গড়ে তোলা সরকারি অডিটোরিয়ামে নিজস্ব জেনারেটরের ব্যবস্থা করা নিয়ে টালবাহানা চলছে। একাধিক সাংস্কৃতিক দলের কর্তাদের অভিযোগ, যে কোনও অনুষ্ঠানে ভাড়া করা জেনারেটরের ব্যবস্থা করতে হয়। যদিও আর্ট গ্যালারির সব আলো ভাড়া করা জেনারেটর দিয়ে চালানো যায় না। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রও চলে না। এদিন এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান বলেন, “আমি সত্যিই লজ্জ্বিত। আর্ট গ্যালারির কিছু সংস্কার সম্প্রতি করা হয়েছে। কিন্তু একটি নিজস্ব জেনারেটরের ব্যবস্থাও করা দরকার। পাশাপাশি আর্ট গ্যালারির রক্ষনাবেক্ষণ খরচ তুলতে যে কোনও ছোটবড় অনুষ্ঠানই যেন আর্ট গ্যালারিতে আয়োজন করা হয়। সে ব্যাপারে জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা বলব।” এসজেডিএর জলপাইগুড়ির আধিকারিক দীপেশ বণিক বলেন, “এদিন আগে থেকে জেনারেটেরের ব্যবস্থা করা ছিল না বলে বিপত্তি হয়েছে।” এদিনের কর্মশালায়, দুই শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে একটি পেশাদারি সংস্থাকে দিয়ে করানোর সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে. সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি দুই শহরেই গত তিন বছরে দু চাকা বা চারচাকা গাড়ির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে. যানজট সমস্যা সমাধানে ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য শহরের পাশ দিয়ে বিকল্প রাস্তা তৈরির প্রস্তাব যেমন রয়েছে, তেমন শহরে ফুটপাতের সংখ্যা বৃদ্ধি করে সেখানে মানুষজনের চলাচলের সুযোগ বৃদ্ধির মতো সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান এসজেডিএর চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা হবে। এসজেডিএ চাইছে অদূর ভবিষ্যতে শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ির যানচলাচল ব্যবস্থা মসৃণ করতে।” এসজেডিএ কারিগরি বিশেষজ্ঞ কমিটি সদস্য উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেতা সাংকৃত্যায়ন বলেন, “শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি শহর ছুঁয়ে এশিয়ান হাইওয়ে যাচ্ছে, সে কারণে এই ধরনের উদ্যোগ জরুরি ছিল।” |