ঋণ প্রদানকারী এক বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের ‘মানসিক অত্যাচার’ সহ্য করতে না পেরে সোমবার পূর্ণিমা ভাস্কর (৩২) নামে এক মহিলা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। বহরমপুর নিউ জেনারেল হাসপাতালে সেই রাতেই মারা যান পূর্ণিমাদেবী। পুলিশ ওই সংস্থার চার জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের মঙ্গলবার বহরমপুরের সিজেএম আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক অলি বিশ্বাস জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বলে সরকারি আইনজীবী বীরেশ্বর মুখোপাধ্যায় জানান।
ওই সংস্থার ঋণ প্রদানের সরকারি স্বীকৃতি রয়েছে কি না, পুলিশ খতিয়ে দেখছে। পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ধৃতদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। তদন্ত চলছে।” ধৃতদের মধ্যে সংস্থার মুর্শিদাবাদের এরিয়া ম্যানেজার অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা নারাকুল্লা সন্তোষ, বহরমপুর শাখার ম্যানেজার চক ইসলামপুরের মনোজকুমার মণ্ডল ছাড়াও রয়েছে দু’জন কর্মী বনগাঁর মনোজ দাস ও ইসলামপুরের গোলাম মোস্তাফা। পুলিশ জানতে পেরেছে, তিন বছর আগে বহরমপুর, লালবাগ ও ইসলামপুরে শাখা অফিস খুলে ওই সংস্থা স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা গোষ্ঠীভুক্ত সদস্যদের ঋণ প্রদান করে। বীরভূমের বোলপুরেও তাদের অন্য একটি সংস্থা রয়েছে। সংস্থার প্রধান কার্যালয় হায়দরাবাদে। পুলিশ জানায়, তিন বছরে জেলায় প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা ঋণ ওই সংস্থা দিয়েছে। সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা মাসিক ২৬ শতাংশ সুদে ঋণ দিয়ে থাকে। ২০১১-এর ডিসেম্বরে পূর্ণিমা ও দিলীপ ভাস্কর নামে এক দম্পতি ওই সংস্থার কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা ধার নেয়। সপ্তাহে ৩৪০ টাকা করে ৫১ সপ্তাহে ওই টাকা শোধের কথা ছিল। ২৭ সপ্তাহ নিয়মিত ঋণ শোধ করলেও তিন সপ্তাহ ওই টাকা জমা দেয়নি বলে অভিযোগ। টাকা আদায়ে সোমবার সংস্থার দুই কর্মী মনোজ দাস ও গোলাম মোস্তাফা সৈয়দাবাদের বাসিন্দা ওই দম্পতির বাড়িতে যায়। পূর্ণিমাদেবী একাই ছিলেন। ওই দুই কর্মী পড়শিদের সামনে ওই অপমানজনক কথা বলে। এর পরেই ওই মহিলা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। জেলাশাসক রাজীব কুমার বলেন, “ওই ধরনের কতগুলি সংস্থা জেলায় রয়েছে, তা তদন্ত করার জন্য মহকুমাপ্রশাসনকে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই সংস্থাগুলির ঋণ দেওয়ার কোনও সরকারি নথিপত্র রয়েছে কি না তাও তদন্ত করে দেখতে বলেছি।” |