|
|
|
|
বিড়ম্বনায় মেদিনীপুর পুরসভা |
এক সঙ্গে দুই সংস্থাকে অনুমতি, বন্ধ হল কাজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
একই কাজের জন্য দুই সংস্থাকে পুরসভার অনুমতি দেওয়া নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মেদিনীপুরে। এক সংস্থার লোকজন যখন কাজ করছিলেন, তখন অন্য সংস্থার লোকজন এসে বাধে দেন। দুই সংস্থার কাছেই পুরসভার অনুমতিপত্র রয়েছে। পরিস্থিতি দেখে শেষমেশ সংশ্লিষ্ট কাজই বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। পুরসভার বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে ভুল হয়ে গিয়েছে। এক কর্মীর জন্যই নাকি এই ভুল!
তবে, পুর-কর্তৃপক্ষের এ হেন ব্যাখ্যায় শোরগোল থামছে না। কারণ, একটি সংস্থাকে কাজের অনুমতি দিয়েছিলেন পুরপ্রধান প্রণব বসু। অন্য সংস্থাকে অনুমতি দেন উপ-পুরপ্রধান এরশাদ আলি। মেদিনীপুর শহরের একাধিক এলাকায় রাস্তার ডিভাইডারে রেলিং দেওয়া হয়েছে। এখন গাঁধী-মূর্তির কাছ থেকে এলআইসি মোড় পর্যন্ত রাস্তার ডিভাইডারে রেলিং দেওয়ার কাজ চলছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে সেই কাজই বন্ধ হয়েছে। এ দিন সকালে একটি সংস্থার কাজ শুরুর সময়ে অন্য একটি সংস্থার লোকজন এসে দাবি করেন, তাঁদের কাছেই এ কাজের অনুমতিপত্র রয়েছে। যে সংস্থা কাজ করছিল, তাঁদের লোকজনও অনুমতিপত্র দেখান। |
|
থমকে রয়েছে ডিভাইডারে রেলিং বসানোর কাজ। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন পুরপ্রধান। তিনি জানান, আলোচনার পরেই ফের কাজ শুরু হতে পারে। তার আগে নয়। কেন এই সমস্যা? পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার ডিভাইডারে রেলিং বসানোর জন্য ২০১০ সালেই এক সংস্থাকে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সে-সময়ে একটি সংস্থাকে দেওয়া অনুমতিপত্রে সই করেছিলেন পুরপ্রধান প্রণব বসু। অন্য দিকে, চলতি বছরে অন্য এক সংস্থাকে গাঁধী-মূর্তির কাছ থেকে এলআইসি মোড় পর্যন্ত রাস্তার ডিভাইডারে রেলিং বসানোর অনুমতি দেন উপপুরপ্রধান এরশাদ আলি।
মেদিনীপুর পুরসভা এখন জোটের দখলে। পুরপ্রধান তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন। উপপ্রধান কংগ্রেসের প্রতীকে। এমন ঘটনায় দুই দলের কাউন্সিলরদের মধ্যেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অনেকের বক্তব্য, একই কাজের জন্য দু’টো আলাদা সংস্থাকে অনুমতি দেওয়া হয় কী করে? পুর-কর্তৃপক্ষের অবশ্য সাফাই, এক কর্মীর জন্যেই নাকি এই পরিস্থিতি। পুরপ্রধান বলেন, “২০১০ সালে একটি সংস্থাকে সংশ্লিষ্ট কাজের অনুমতি দিয়েছিলাম। উপপুরপ্রধান তা জানতেন না। তাই অন্য এক সংস্থাকে অনুমতি দিয়েছেন।” তাঁর বক্তব্য, “সমস্যার কথা জেনেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। আপাতত কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি। পরে আলোচনার মাধ্যমে এ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।” উপপুরপ্রধান বলেন, “ভুল থেকেই এ ঘটনা ঘটেছে। আগে থেকে কাউকে অনুমতি দেওয়া আছে জানলে নতুন করে আর অনুমতি দিতাম না।”
দুই পদাধিকারীর বক্তব্যে অবশ্য পুর-কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবই সামনে আসছে। আগামী বছরই ভোট মেদিনীপুর পুরসভায়। তৃণমূল ও কংগ্রেস জোট পরিচালিত বর্তমান পুরবোর্ড সব বিষয়েই ‘ব্যর্থ’ এবং পুর-প্রশাসন ভেঙে পড়েছে বলে এখন থেকেই অভিযোগ তুলছে বিরোধী বামেরা। রেলিংয়ের অনুমতি সংক্রান্ত ঘটনা পুর-প্রশাসনের দুর্দশাই সামনে আনছে বলে তাদের অভিযোগ। |
|
|
|
|
|