বন্ধে সাড়া নেই জামালপুরে
খেতমজুর খুনের প্রতিবাদে জামালপুরে ১২ ঘণ্টা বন্ধ ডেকেছিল বামফ্রন্ট। কিন্তু তাতে তেমন সাড়া মেলেনি বলে দাবি করল পুলিশ ও তৃণমূল।
মঙ্গলবার বিকেলে বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ হোসেন মির্জা বলেন, “গোটা জামালপুরেই দোকানপাট খোলা ছিল। জীবনযাত্রা ছিল প্রায় স্বাভাবিক। কয়েক জায়গায় বন্ধ সমর্থকেরা জোর করে দোকানপাট বন্ধ করানোর চেষ্টা করে। পুলিশ সেই চেষ্টা বানচাল করে দিয়েছে।”
জামালপুরের তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিকও বলেন, “আমি সারা দিন জামালপুরে ঘুরে দেখেছি, সমস্ত দোকানপাট খোলা। যেখানে সংঘর্ষে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে, সেই নবগ্রামেও দোকান খোলা ছিল। মশাগ্রাম, পাড়াতল, শুঁড়ে কালনা, চকদিঘিতেও জনজীবন ছিল স্বাভাবিক। অরাজনৈতিক ঘটনায় রাজনীতির রং লাগানোর চেষ্টা মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদার অবশ্য অভিযোগ করেন, বন্ধ ব্যর্থ করতে তৃণমূলের লোকেরা নানা জায়গায় বাধা দিয়েছে। তাঁদের সমর্থকদের প্ররোচিত করার চেষ্টা হয়েছে। তাঁর দাবি, “তা সত্ত্বেও বন্ধ সফল হয়েছে।”
মজুরি বাড়ানোর দাবি নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে রবিবার মারে মৃত্যু হয় এক বৃদ্ধ খেতমজুরের। এই ঘটনায় পুলিশ সাত তৃণমূল নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। সিপিএমের দাবি, নিহত তাঁদেরই সমর্থক। জেলা জুড়ে যে সব জায়গায় মোটামুটি বৃষ্টি হয়েছে, সেখানেই শুরু হয়েছে খরিফ ধানের বীজতলা করা থেকে চারা রোপনের কাজ। সেই জায়গাগুলিতেই মজুরি বৃদ্ধির অন্দোলনকে হাতিয়ার করে খেতমজুরদের নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে সিপিএম তথা বামফ্রন্ট। জেলার কিছু জায়গায় প্রায় প্রতি দিনই মিছিল, সভা হচ্ছে। তৃণমূলের সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ছে সিপিএম।
অমলবাবুরল কথায়, “যে জায়গাগুলিতে ভাল বৃষ্টি হয়নি, সেখানে কিন্তু এখনও এই আন্দোলন হচ্ছে না।” ফলে, ভবিষ্যতে আরও কিছু জায়গায় তারা এই ধরনের আন্দোলনে নামবে বলে সিপিএম সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে। বস্তুত, কৃষকসভা প্রায় প্রতি বছরই প্রায় বিচ্ছিন্ন ভাবে মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে আন্দোলন করে। এত দিন শাসনক্ষমতায় থাকা সিপিএমের গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির নেতা বা প্রতিনিধিরা চাষি ও খেতমজুরদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসিয়ে মজুরি স্থির করে দিতেন। এবার তাতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। পঞ্চায়েতে অধিকাংশ জায়গায় সিপিএম ক্ষমতায় থাকলেও, রাজ্যে তারা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে।
জেলা কৃষকসভার সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল বলেন, “২০১০ সালের চাষের মরসুমে খেতমজুরদের নিয়ে আমরা যে আন্দোলন করি, তার ফলে চাষিদের মজুরি বেড়ে হয়েছিল ৬৪-৭০ টাকা। তার সঙ্গে দু কিলো চাল। কিন্তু আমরা চাইছি, সরকারের শ্রম দফতরের ন্যূনতম মজুরি আইন অনুসারে খেতমজুরেরা দৈনিক ১৭১ টাকা মজুরি পান।” তাঁর অভিযোগ, “এমন দিন নেই, যেখানে দু’দশ জন খেতমজুরকে স্থানীয় থানায় ডেকে আন্দোলন প্রত্যাহারের জন্য শাসানো হচ্ছে না। প্রশাসনের হিংস্র মনোভাবের জন্য আন্দোলনকারীদের সন্ত্রস্ত থাকতে হচ্ছে।” তাঁর প্রশ্ন, “রাজ্য সরকারের ন্যূনতম মজুরি আইন না মেনে যে লোকেরা মজুরি কম দিচ্ছেন, তাঁদের তো কই পুলিশ গ্রেফতার করছে না! তা হলে মজুরি বাড়াতে চেয়ে আন্দোলন করেই মানুষ অপরাধ করছেন! আর যাঁরা ন্যূনতম মজুরি আইন ভাঙছেন, তাঁরা ধোয়া তুলসীপাতা?” তৃণমূলের বর্ধমান জেলা পর্যবেক্ষক অলোক দাস পাল্টা বলেন, “আমরা চাই, শান্তিশৃঙ্খলা মেনে চাষের কাজ হোক, খেতমজুরেরা উপযুক্ত মজুরি পান। কিন্তু আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে সিপিএম গ্রামে-গ্রামে অশান্তি ছড়াচ্ছে। আমরা চাই, প্রশাসন এই অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা রুখুক।” পুলিশ সুপার বলেন, “থানায় ডেকে খেতমজুরদের শাসানোর অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। আমরা অশান্তি রোখার চেষ্টা করছি।” জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা বলেন, “কালনা ১ ও ২ এবং মন্তেশ্বর ব্লকে চাষি ও খেতমজুরদের মধ্যে বৈঠকে মজুরি স্থির হয়েছে। প্রতিটি মহকুমায় চাষি ও খেতমজুরদেরই বৈঠক করে সমস্যার মীংমাসা করতে হবে।”

—নিজস্ব চিত্র।

কলেজে নতুন পাঠ্যক্রমের দাবি
শতকরা ৬০ ভাগ নম্বর পেয়েও কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছেন না বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত পদ্মজা নাইডু কলেজ অব মিউজিকের বি মিউজ অনার্সের পড়ুয়ারা। কারণ, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বাহিরাগতদের জন্য আসন সংখ্যা সীমিত। এরই প্রতিবাদে ও কলেজে এম মিউজ পাঠ্যক্রম খোলার দাবিতে মঙ্গলবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকারকে স্মারকলিপি দিলেন ছাত্রীরা। উপাচার্য বলেন, “কলেজের অধ্যক্ষকে ফোন করে কেন ওই কলেজে এম মিউজিক পাঠ্যক্রেম খোলা হচ্ছে না, তার খোঁজ নিয়েছি। তিনি জানিয়েছেন, পরিকাঠামো ও শিক্ষকের অভাব রয়েছে।” এ বিষয়ে শীঘ্রই আলোচনা করে কলেজে ওই নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম খোলার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.