পুরসভা নির্বাচনের প্রায় ছ’সপ্তাহ পরে দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র পারিষদদের নাম ঘোষণা করা হল। যদিও মঙ্গলবারও তাঁদের দফতর ঘোষণা করা হয়নি। আজ, বুধবার দফতর ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়।
সিপিএমের হাত থেকে তৃণমূল পুরসভা ছিনিয়ে নেওয়ার তিন সপ্তাহ পার করে, গত ২৯ জুন শপথ নিয়েছিলেন কাউন্সিলরেরা। মেয়র অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় ও চেয়ারম্যান সুপ্রভাত মণ্ডলও সে দিন শপথ নেন। কিন্তু মেয়র পারিষদদের নাম ঘোষণা করা হয়নি। এ দিন ঘোষণা হওয়া মেয়র পারিষদদের তালিকায় রয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি তথা আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য তথা বর্তমানে তৃণমূল নেতা প্রমোদ সরকারেরা। ডেপুটি মেয়র হিসাবে মনোনীত হয়েছেন আসানসোলের বিধায়ক ও মেয়র তথা এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়। বাকি মেয়র পারিষদেরা হলেন সুস্মিতা ভুঁই, লাভলি রায়, মণি সোরেন, মণি দাশগুপ্ত ও মধুসূদন মণ্ডল। |
ডেপুটি মেয়র হিসাবে যিনি নির্বাচিত হয়েছেন, গোপালমাঠ এলাকার নেতা সেই অমিতাভাবাবু কিন্তু বরাবর প্রভাতবাবুর বিরোধী গোষ্ঠী হিসাবেই শিল্পাঞ্চলে পরিচিত। শিল্পাঞ্চলের রাজনীতিতে অপূর্ববাবু ও প্রভাতবাবুর আলাদা গোষ্ঠীর কথাও জানেন বহু বাসিন্দাই। যদিও দলের উচ্চতর নেতৃত্বের চাপে পুরভোটের আগেই সেই ‘দূরত্ব’ তাঁরা মিটিয়ে নিয়েছিলেন তাঁরা। মেয়র পারিষদদের তালিকায় থাকা বাকিরা দলীয় সংগঠনে তেমন ‘হেভিওয়েট’ নন। সেদিক থেকে দেখতে গেলে, কার্যত পুরসভার দখল নিজের হাতেই রাখলেন অপূর্ববাবু।
মেয়র পারিষদের তালিকায় লক্ষ্যণীয় ভাবে নেই ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা এক সময়ের পুরসভায় বিরোধী দলনেতা বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের নাম। এই নিয়ে চার বার কাউন্সিলর হলেন তিনি। এ বার অবশ্য প্রথমে প্রার্থীই করা হয়নি তাঁকে। একেবারে শেষ মুহূর্তে এক রকম জোর করেই মনোনয়ন দাখিল করেন তিনি। তখনই ইঙ্গিত ছিল বলে তাঁর অনুগামীদের দাবি। দীর্ঘদিন ধরে অপূর্ববাবুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হলেও পুর নির্বাচনের আগে থেকেই তাঁদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছিল বলে দলেরই একাংশের ধারণা।
শিল্পাঞ্চলের রাজনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান, কাকে ক্ষমতায় আনা হবে আর কাকে আনা হবে না, সেই অঙ্ক মেলাতে গিয়েই মেয়র পারিষদদের নাম চূড়ান্ত করতে এত সময় লেগেছে। যদিও অপূর্ববাবু বা তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক অলোক দাস, কেউই সে কথা স্বীকার করতে চাননি। অপূর্ববাবু বলেন, “পুর এলাকায় কী কী সমস্যা রয়েছে, কী ভাবে মোকাবিলা করতে হবে, তার রূপরেখা তৈরি করতেই সময় কেটে গিয়েছে।” অলোকবাবুর দাবি, “কখনও কখনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে সময় একটু বেশিই লাগে।” |