পাট্টা দেওয়ার দাবিকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীনদের হারিয়ে শিলিগুড়ি বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির কর্তৃত্ব দখল করল বিপক্ষ শিবির। শনিবার শিলিগুড়ি বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির ভোট হয়েছে। সোমবার ভোটের ফল প্রকাশ হয়। প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে যাঁরা বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির ক্ষমতায় ছিলেন তাঁরা পর্যুদস্ত হয়েছেন। ২১টি আসনের মধ্যে ১৭টিতেই জয়ী হয়েছেন। জয়ীরা প্রায় সকলেই নতুন মুখ। এই নতুনরাই এ বার নির্বাচনী প্রচারের সময়ে বিধান মার্কেটের ব্যবসায়ীদের পাট্টা দিতে বলে বলে দাবি তুলেছিলেন। অন্য দিকে, পুরানো কমিটির কর্তারা বিধান মার্কেটের আধুনিকীকরণের প্রস্তাবে সায় দিয়েছিলেন। বিদায়ী কমিটির সভাপতি বাদল গুহ নির্বাচনী ফল প্রকাশের পরে এদিন বলেন, “বোঝাই যাচ্ছে পাট্টার মতো স্পর্শকাতর বিষয় বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ীকে স্পর্শ করেছে। তবে এক সময়ে আমরাও পাট্টার জন্য চেষ্টা করেছিলাম। দেখা যাক, নতুন কমিটি ব্যবসায়ীদের পাট্টা দিতে পারে কি না।” নব নির্বাচিতদের পক্ষে ব্যবসায়ী চিত্তরঞ্জন দাস বলেন, “পাট্টা তো দেবে সরকার। এই ব্যাপারে আগে কখনই সঠিক ভাবে উত্থাপন করা হয়নি। আমরা সেকাজ করতে চাই। পাশাপাশি, বাজারের উন্নয়নে আমরাই রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব জমা দেব। ওই প্রস্তাবে কোনও ব্যবসায়ীকে নিজের ব্যবসার জায়গা ছাড়তে হবে না।” শিলিগুড়ি বিধান মার্কেটের আধুনিকীকরণ নিয়ে গত কয়েক দশক ধরেই রাজ্য সরকার চেষ্টা করছে। বাম আমলেও শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ির তৎকালীন চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এই ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক করেন। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। রাজ্য নয়া সরকার গঠনের পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বৈঠক করেন। ওই বৈঠকেও বিধান মার্কেট আধুনিকীকরণের প্রস্তাব পেশ করা হয়। কিন্তু নয়া পরিকল্পনায় কয়েকশো ব্যবসায়ীকে দোতলায় দোকানঘর দেওয়া হবে বলে জানানোর পরেই ব্যবসায়ীদের একাংশ পাট্টার দাবিতে পাল্টা আন্দোলনে নেমে পড়েন। একই সময়ে বিধান মার্কেটের নির্বাচন শুরু হওয়ায় এটাই মুখ্য বিষয় হয়ে ওঠে। পুরসভা কিংবা পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে আলোড়ন পড়ে যায়। পাট্টার দাবিকে সামনে রেখে প্রচার, পাল্টা প্রচার শুরু হয়। নির্বাচিত সদস্য দেবব্রত সাহা বলেন, “১৯৬২ সাল থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে ব্যবসা করছেন। বাজারের একাংশের ব্যবসায়ীদের দোকান লিজ দেওয়া হয়েছে। তা হলে আমরা পাট্টা পাব না কেন? পাট্টা পেলে আমরাও আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা নেব।”ব্যবসায়ী সমিতির সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার যে ২১ জন নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা হলেন, অভিজিৎ ঘোষ, প্রণব দাস, বাপ্পা সাহা, বাপন দে, চিত্তরঞ্জন দাস, হরেকৃষ্ণ পাল, গোপাল সাহা, সঞ্জীব দে, লিপটন সাহা, তমাল সরকার, অসীম কর্মকার, চিত্তরঞ্জন সাহা, রতন সাহা, দেবব্রত সাহা, বিধান ঘোষ, দেবাশিস চক্রবর্তী, সুব্রত সাহা, রতন বণিক, রাজু সাহা ও সুশান্ত সাহা। |