বেহাল ৩১ (সি) জাতীয় সড়ক মেরামতিতে রাজ্য সরকার উদ্যোগী না-হওয়ায় আজ, মঙ্গলবার হাতিঘিষায় লাগাতার অবস্থান আন্দোলনে নামার কথা ঘোষণা করল সিপিএম। প্রায় তিন বছর ধরে বিহার ও ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে না। তার জেরে চলতি বছরে গলগলিয়া থেকে বাগডোগরা পর্যন্ত ৩১ (সি) জাতীয় সড়ক পুরোপুরি বেহাল হয়ে পড়েছে। নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যও হয় এই সড়ক পথেই। গত কয়েকদিনের বর্ষায় হাতিঘিষার কাছে স্কুলডাঙি ও মেরিভিউ, বাগডোগরার কাছে কেষ্টপুর ও কিরণচন্দ্র চা বাগান, খড়িবাড়ি থেকে গলগলিয়া যাওয়ার রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বেহাল রাস্তার জন্য ওই রাস্তায় দুর্ঘটনাও লেগেই রয়েছে। পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক বিভাগে বহু বার আর্জি জানানোর পরেও মেরামতির ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। বাধ্য হয়েই তাঁদের আন্দোলনে নামতে হয়েছে। সিপিএমের হাতিঘিষা লোকাল কমিটির সম্পাদক মাধব সরকার বলেন, “আগে কখনও রাস্তাটি এমন বেহাল হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ বরাদ্দে গড়িমসি করলে রাজ্য সরকার প্রাথমিক ভাবে মেরামতির দায়িত্ব পালন করছে। এ বার কেউই রাস্তা মেরামতির ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনে নামা ছাড়া উপায় নেই। লাগাতার অবস্থানে কর্তাদের টনক না-নড়লে অন্য কথা ভাবতে হবে।” রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ার কথা অস্বীকার করছেন না পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরাও। তাঁদের বক্তব্য, ২০০৯-১০ সালে তাঁরা গলগলিয়া থেকে বাগডোগরা ৩৭.৭৫ কিলোমিটার রাস্তা ৭ মিটার চওড়া করে নতুন ভাবে তৈরির ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ভূতল পরিবহণ দফতরে ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে আর্জি জানান। তার পর থেকে প্রতি বছর নতুন করে ব্যয় বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হচ্ছে। টাকাই মেলেনি। তবে কয়েকদিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর গলগলিয়া থেকে পানিট্যাঙ্কি পর্যন্ত রাস্তা মেরামতির ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত মিলেছে। পানিট্যাঙ্কি থেকে বাগডোগরা পর্যন্ত রাস্তা মেরামতির জন্য ব্যয়প্রস্তাব অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তার মধ্যে পানিট্যাঙ্কি থেকে বাগডোগরা পর্যন্ত রাস্তাটি ১০ মিটার চওড়া করতে হলে জলের পাইল লাইন এবং বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর ব্যয় প্রস্তাবও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে হাতে টাকার পরে মেরামতির কাজ শুরু করতে আরও কয়েক মাস লাগবে। এই পরিস্থিতিতে জরুরিকালীন ভিত্তিতে রাস্তা মেরামতির জন্য পূর্ত দফতরের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে ২ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক (নবম) বিভাগের এগজিকিউটিভ অফিসার নির্মল মণ্ডল বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারি বরাদ্দ হাতে পেতে একটু সময় লাগবে। সেই জন্যই রাজ্য সরকারের কাছে জরুরিকালীন মেরামতির জন্য অর্থ চাওয়া হয়েছে। দিন সাতেকের মধ্যেই কিছুএকটা ব্যবস্থা হবে বলে আশা করছি।” বেহাল রাস্তা মেরামতির ব্যাপারে সরব হয়েছেন নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ কংগ্রেসের সুনীল ঘোষও। তিনি বলেন, “রাস্তায় হাল খুব খারাপ। প্রাণ হাতে করে মানুষকে যাতায়াত করতে হচ্ছে। প্রায়ই বাসিন্দারা বিক্ষোভে নেমে পড়ছেন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার জরুরিকালীন মেরামতির জন্য বরাদ্দ না-দিলে সমস্যা বাড়বে।” |