মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি চায় বিরোধীরা
আসন পুনর্বিন্যাস, জিটিএ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু
জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে গোর্খা আঞ্চলিক প্রশাসন (জিটিএ)-র নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিল রাজ্য সরকার। জিটিএ-র আসন পুনর্বিন্যাসের জন্য সোমবার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য। তবে এই আসন পুনর্বিন্যাস হয়েছে পুরনো দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদের এলাকার ভিত্তিতেই।
দার্জিলিং সদর, কার্সিয়াং, কালিম্পং মহকুমা এবং শিলিগুড়ির ১৮টি মৌজা নিয়ে পরিষদের মোট ২৮টি আসন ছিল। ওই এলাকার আসন পুনর্বিন্যাসের পরে হয়েছে ৪৫টি আসন। রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষ জানিয়েছেন, সপ্তাহখানেকের মধ্যে জিটিএ নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তিও জারি হবে। গত শনিবার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে বৈঠকে শ্যামল সেন কমিটির সুপারিশের তথ্যগত ত্রুটি খতিয়ে দেখতে একটি তিন সদস্যের কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিটির চেয়ারম্যান হন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের বিশেষ সচিব মনোজ অগ্রবাল। ঠিক হয়, পরে অন্য দু’টি নাম চূড়ান্ত করা হবে। মুখ্যসচিব এ দিন বলেন, “এখনও বাকি দু’জনের নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দু’এক দিনের মধ্যে তা হয়ে যাবে।” তবে হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি শ্যামলবাবুর নেতৃত্বাধীন কমিটির রিপোর্টের তথ্য যাচাইয়ের জন্য ফের রাজ্য সরকারের সচিব পর্যায়ের কমিটি গঠন ‘আইন বহির্ভুত’ কাজ বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। পাহাড় নিয়ে সাম্প্রতিকতম পরিস্থিতির উপরে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতি দাবি করেছে বিরোধী শিবির। সেন কমিটির রিপোর্ট পেশ হওয়ার পরে জটিলতা কাটাতে মোর্চার নেতৃত্বের সঙ্গে দু’দিন আগে আলোচনায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভার অধিবেশন চালু থাকাকালীন ওই আলোচনা হওয়ায় সেই বিষয়ে বিধানসভাকে অবহিত করার দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। বিধানসভায় এ দিনই জিটিএ সংক্রান্ত বিধি পেশ হয়েছে। সেখানে নেপালি তফসিলি বা অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য কোনও সংরক্ষণের উল্লেখ না-থাকায় সেই ব্যাপারেও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চেয়েছে বিরোধী বামফ্রন্ট। পাবর্ত্য বিষয়ক দফতরও রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে এ দিন পাহাড়ে ফেরেন মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি ও অন্য নেতারা। মোর্চা সূত্রের খবর, তাদের প্রতিনিধিদল পাহাড়ে পৌঁছতে দেরি হওয়ায় পূর্ব নির্ধারিত কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক বাতিল করা হয়। দার্জিলিঙে যাওয়ার পথে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে রোশন বলেন, “শ্যামল সেনের রিপোর্ট পক্ষপাতমূলক বলে আমরা অভিযোগ করেছি। আমরা ৩৯৬টি মৌজা চেয়েছিলাম। দেওয়া হয়েছে মাত্র ৫টি! এটা মানার কোনও প্রশ্ন নেই। সরকার আমাদের দাবির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে বলেই একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।” সেন কমিটির সুপারিশ যে তথ্যের উপরে নির্ভর করে, তা যাচাই করতে সরেজমিনে সব এলাকা পরিদর্শন করা হয়নি বলেই রিপোর্ট নিয়ে তাঁরা আপত্তি করেছেন বলে রোশন জানিয়েছেন। যদিও বিরোধী দলনেতা সূর্যবাবুর মতে, নতুন এলাকা অন্তর্ভুক্তির দাবি খতিয়ে দেখার জন্য কমিটি গড়ার কথা জিটিএ বিলে না-রাখলেও চলত। কিন্তু বিলে শেষ পর্যন্ত তার উল্লেখ থাকায় এবং বিলটি আইনে পরিণত হওয়ায় ওই কমিটি ‘পূর্ণ মর্যাদা’ পেয়েছিল। তার রিপোর্টের পরে আবার নিম্ন পদমর্যাদার কমিটি ‘আইন বহির্ভুত’।
জিটিএ ভোটে অংশগ্রহণ করবেন কি না, সেই প্রশ্নে রোশন এ দিন বলেন, “বুধবার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে বিষয়টি আলোচনা হতে পারে। দলের সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।”
বিধানসভা চত্বরে বিরোধী দলনেতা সূর্যবাবু এ দিন মন্তব্য করেছেন, “আশঙ্কা দূর করে আমরা আশা পোষণ করছি, পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে এবং জিটিএ নির্বাচন হবে।” পাহাড়ে এখন ‘একতরফা শান্তি’ রয়েছে বলে মন্তব্য করে সূর্যবাবুর মত, জিটিএ নিবার্চনে যদি নির্দিষ্ট একটি দলের (মোর্চা) বাইরে কারও প্রচার বা প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ না-থাকে, তা হলে কোনও অগ্রগতি হবে না। ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ জিটিএ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
অধিবেশনের উল্লেখ-পর্বে এ দিন সূর্যবাবু জিটিএ-তে নেপালি তফসিলি সংরক্ষণের সুযোগ নিয়ে রাজ্য সরকারের বিবৃতি চান। তিনি বলেন, “অল ইন্ডিয়া নেপালি শিডিউল কাস্ট অ্যাসোসিয়েশন মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়েছিল। একই চিঠি বিমল গুরুঙ্গও মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়েছিলেন। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, জিটিএ-র মধ্যে তফসিলিদের সংরক্ষণের কথা বলা নেই। এ বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে বিবৃতি চাই।” যার জবাবে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি পরিষদীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে পরে যা করার করব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.