বেসরকারি পিটিটিআই (প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠান) এবং বিএড কলেজগুলির পড়ুয়াদের কাছ থেকে ‘যথেচ্ছ’ ফি নেওয়া বন্ধ করতে সেগুলিকে নির্দিষ্ট ফি-কাঠামোর আওতায় আনতে চায় রাজ্য সরকার। সোমবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ওই তথ্য জানিয়ে বলেন, “পিটিটিআইয়ের ছাত্রছাত্রীরা রেজিস্ট্রেশন না-পেলে তা সংশ্লিষ্ট ছাত্র বা ছাত্রীর দোষ হিসাবে দেখা হবে না। ওই ঘটনার জন্য দায়ী থাকবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাকেন্দ্র।” কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র প্রশ্নোত্তর পর্বে রাজ্যের পিটিটিআইয়ের সংখ্যা মন্ত্রীর কাছে জানতে চান। জবাবে মন্ত্রী বলেন, “ওই সংখ্যা ১০৪।” রাজ্যে আরও ৪৩টি নতুন পিটিটিআই খোলা হচ্ছে বলেও মন্ত্রী জানান।
পাশাপাশি এ দিন বিধানসভায় প্রাথমিক বিদ্যালয় সংক্রান্ত কিছু তথ্যও উঠে এসেছে। কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতো শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জানতে চান, রাজ্যে নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের কোনও পরিকল্পনা সরকারের আছে কিনা, থাকলে কতগুলি বিদ্যালয় তৈরি হতে পারে এবং তার মধ্যে পুরুলিয়ায় ক’টি বিদ্যালয় হবে? মন্ত্রী জানান, সরকারের ১,১৮৬ টি নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় তৈরির পরিকল্পনা আছে। তার মধ্যে পুরুলিয়ায় হবে ৯১ টি। সিপিএম বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার অতিরিক্ত প্রশ্ন ছিল সরকার কীসের ভিত্তিতে প্রাথমিক স্কুল স্থাপনের জায়গা বাছছে? মন্ত্রী জানান, কেন্দ্রের শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী প্রত্যেক ব্লকে ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটারের মধ্যে একটি করে প্রাথমিক স্কুল থাকার কথা। সেই আইন এবং ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী প্রাথমিক স্কুল খোলা হবে। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য জানান, কেন্দ্রের শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী, প্রত্যেক শিশুর বাড়ির পড়শি এলাকায় স্কুল থাকার কথা। সেই এলাকার পরিধি নির্ধারণ করা রাজ্যের দায়িত্ব। এ রাজ্যের সরকার মার্চ মাসে ওই বিষয়ে বিধি তৈরি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, গ্রামে এক কিলোমিটার এবং শহরে আধ কিলোমিটার অন্তর প্রাথমিক স্কুল থাকতে হবে। যার প্রেক্ষিতে সূর্যবাবুর প্রশ্ন, “সুতরাং ব্রাত্যবাবু প্রত্যেক ব্লকে ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটারের মধ্যে নতুন স্কুল গড়ার কথা বলে নিজেদের তৈরি ওই বিধিকেই কি অস্বীকার করছেন না?” মন্ত্রীর অবশ্য ব্যাখ্যা, তিনি নতুন স্কুল গড়া নিয়ে কথা বলেছিলেন। সূর্যবাবু ‘গুলিয়ে ফেলে’ সেখানে স্কুলে শিশু ভর্তির প্রসঙ্গ এনে ফেলেছেন। এসইউসি বিধায়ক তরুণ নস্করের প্রশ্নের জবাবে ব্রাত্যবাবু জানান, রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলিকে উচ্চ প্রাথমিকে, উচ্চ প্রাথমিকগুলিকে মাধ্যমিক স্তরে এবং মাধ্যমিক স্কুলগুলি উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত করার কাজ চলছে। |