ফের তৃণমূলের বিরুদ্ধে নেতা-কর্মীদের মারধর ও পার্টি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগে সরব হল সিপিএম। বর্ধমানের ভাতার ও উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলের দুই ঘটনাতেই অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তবে ভাতারে সিপিএম কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে আক্রমণের অভিযোগও রয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ৪২ জন। তাঁদের মধ্যে ২৪ জন মহিলা।
সিপিএমের অভিযোগ, রবিবার সন্ধ্যায় ভাতারে একটি দলীয় সভা সেরে নাসিগ্রামে ফেরার সময়ে আক্রান্ত হন স্থানীয় বড়বেলুন ২ পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রীজিৎ কোঙার (গত বিধানসভা ভোটে ভাতার কেন্দ্রে সামান্য ভোটে হেরেছিলেন), কৃষক নেতা অনুপম রায়-সহ পাঁচ জন। কিন্তু অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের পরিবর্তে পুলিশ গ্রামে এসে সিপিএমের লোকজনের বাড়িতেই ভাঙচুর চালায়। সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমল হালদারের অভিযোগ, “মহিলাদের শ্লীলতাহানিও করা হয়েছে। পুলিশ যে গাড়ি নিয়ে গিয়েছিল, তাতে দু’পেটি মদ পাওয়া গিয়েছে। দলের তরফে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিত ভাবে গোটা ঘটনা জানানো হচ্ছে।”
বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা অবশ্য দাবি করেন, “সব অভিযোগ মিথ্যা। পুলিশই আক্রান্ত হয়েছিল। কাউকে মারধর করা হয়নি।” তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক অলোক দাসের দাবি, “সিপিএম পরিকল্পিত ভাবে ভাতারে অশান্তি সৃষ্টি করছে।” ভাতার থানার বক্তব্য, গণ্ডগোলের খবর পেয়ে একটি গাড়িতে সাত পুলিশকর্মী নাসিগ্রামে তদন্তে গিয়েছিলেন। কিন্তু নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে স্থানীয় সিপিএম সমর্থকেরা তাঁদের তাড়া করেন। পালাতে গিয়ে গাড়িটি নয়ানজুলিতে নেমে গেলে ঘিরে ধরে ইট ছোড়া হয়। কৃষকসভার নেতা অনুপমবাবুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েই পুলিশকর্মীরা প্রাণে বাঁচেন। সোমবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে তোলা হলে মহিলাদের জামিন দেওয়া হয়। কিন্তু ১৮ জন পুরুষকে ১ জুলাই পর্যন্ত জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার রাতেই সিপিএমের জগদ্দল গ্রাম আঞ্চলিক কমিটির কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূলের হুমকিতে গত এক বছর কাঁকিনাড়া-পানপুরের ওই কার্যালয় বন্ধ ছিল। রবিবার তা খুলে সভা করায় হামলা চালানো হয়। নৈহাটির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী রঞ্জিত কুণ্ডুুর বক্তব্য, “সভা সেরে বাড়ি ফেরার সময়ে তৃণমূলের লোকজন আমাদের নেতাদের কটূক্তি করে। ইট-পাটকেলও ছোড়ে। এক নেতাকে মারধর করা হয়। কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়।” ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের তৃণমূল নেতা অর্জুন সিংহ অবশ্য বলেন, ‘‘এ সব সিপিএমের সাজানো নাটক। ওরা বুঝতে পারছে, মানুষ ওদের সঙ্গে নেই। তাই এই সব গল্প তৈরি করছে।’’ |