লি-হেশ বিতর্ক
ক্রীড়ামন্ত্রীর পত্রাঘাতে বিপাকে টেনিস কর্তারা
লিম্পিক ডাবলস টিম-বিতর্কে ভারতীয় টেনিসের সর্বকালের সেরা ডাবলস প্লেয়ার লিয়েন্ডার পেজ এই মুহূর্তে কার্যত একঘরে! মহেশ ভূপতির পরে আজ রোহন বোপান্নাও লিয়েন্ডারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন। এক বিবৃতিতে এআইটিএ-কে বোপান্না সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, লিয়েন্ডারের সঙ্গে তিনি খেলতে রাজি নন। মহেশ আবার এ দিনই সর্বভারতীয় টেনিস সংস্থাকে চিঠি দিয়ে তাঁর পক্ষে লিয়েন্ডারের পার্টনার হওয়া সম্ভব নয় বলে দিয়েছেন। দেশের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সেরা প্লেয়ারের বদলে লিয়েন্ডারকে এখন ডাবলস সার্কিটে বিশাল অনভিজ্ঞ সোমদেব দেববর্মনকে নিয়ে অলিম্পিকে খেলা ছাড়া হয়তো আর অন্য রাস্তা নেই। সোমদেব আবার কাঁধের চোটের জন্য এ বছর একটাও ম্যাচ খেলেননি। দেশকে যিনি ডেভিস কাপে বহু স্মরণীয় জয় এনে দিয়েছেন সেই লিয়েন্ডারকে হয়তো অলিম্পিকে দুর্বল পার্টনার নিয়ে খেলতে হবে। ঘটনাপ্রবাহ সে দিকেই এগোচ্ছে।
সোমবারই কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অজয় মাকেন তাৎপর্যপূর্ণ টুইট করেছেন, ‘আমরা যখন দুটো টিম পাঠাতে পারি, তখন কেন একটা টিম পাঠাচ্ছি?’ আবার এ দিনই মহেশ ক্রীড়ামন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে আবেদন করেছেন যে, মন্ত্রী যেন দল নির্বাচন-বিতর্কে হস্তক্ষেপ করেন। ওয়াকিবহাল মহলের কেউ কেউ মনে করছেন, মাকেনের টুইট মহেশের তাঁকে লেখা চিঠিরই প্রতিক্রিয়া। জটিলতার সমাধান করতে ক্রীড়ামন্ত্রী এ দিন এআইটিএ প্রেসিডেন্ট অনিল খন্নাকে একটা চিঠিও লিখেছেন। যাতে তিনি কার্যত নির্দেশ দিয়েছেন যে, মহেশ এবং বোপান্না ফেডারেশনের কাছ থেকে যে সব প্রশ্নের জবাব ক্রীড়ামন্ত্রকের মাধ্যমে জানতে চেয়েছেন তার জবাব খন্না যেন মন্ত্রকের কাছে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পাঠান।
খন্নাকে লেখা চিঠিতে মাকেন বলেছেন, “অলিম্পিকে এআইটিএ নির্বাচিত লিয়েন্ডার-মহেশ জুটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে মহেশ এবং বোপান্না। ওরা আমাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, আমার মাধ্যমে ওরা ফেডারেশনের কাছে কয়েকটা প্রশ্নের জবাব চায়। ওদের জানার বিষয়গুলো এ রকম:
অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করা এবং প্রস্তুতির জন্য কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক অর্থ সাহায্য করে দেশের খেলোয়াড়দের। বোঝা যাচ্ছে না, যে জুটি (মহেশ ও বোপান্না) অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করেছে, সেই জুটিকে কেন পাঠান হবে না? অলিম্পিকে ফেডারেশন দুটো জুটি কি পাঠাতে পারে না?
ওরা দু’জনেই (মহেশ ও বোপান্না) লিয়েন্ডারের সঙ্গে জুটি বাঁধতে চায় না। চিঠি দিয়ে সেটা ফেডারেশনকে জানিয়েও দিয়েছে। অলিম্পিক টেনিসে চূড়ান্ত নাম পাঠাবার মাত্র দু’দিন বাকি। ফেডারেশন কি লিয়েন্ডারের পার্টনার হিসেবে কোনও জুনিয়র প্লেয়ারকে (সোমদেব) অলিম্পিকে পাঠাচ্ছে? সেক্ষেত্রে ফেডারেশন অন্য একটা জুটিকে (মহেশ-বোপান্না) কি উপেক্ষা করছে না?
বিশ্ব ডাবলস র‌্যাঙ্কিংয়ে টিম হিসেবে মহেশ-বোপান্না অন্য সব ভারতীয় জুটির থেকে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও কেন উপেক্ষিত হল?
মহেশ ও বোপান্নাকে ফেডারেশন ১০ মার্চ যে চিঠি পাঠায় সেখানে জানানো হয়নি যে, দেশের এক নম্বর ডাবলস প্লেয়ারকেই (লিয়েন্ডার) শুধু পাঠানো হবে অলিম্পিকে। তাতে এক নম্বর জুটি উপেক্ষিত হয়েছে। এর কারণ কী?
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর টুইট নিয়ে এআইটিএ-র অনেকে মনে করছেন, এটা আসলে ঘুরিয়ে তাদের প্রতি বার্তা যে, ক্রীড়ামন্ত্রক চায় লি-হেশ লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটাতে একটার বদলে দুটো ডাবলস টিম অলিম্পিকে যাক। এবং সেক্ষেত্রে টেনিস কর্তাদের সেটা শেষমেশ মেনে নিতেও হতে পারে। যেহেতু অলিম্পিকের প্রস্তুতির জন্য অন্য সব খেলার মতো টেনিসেও প্লেয়ারদের সিংহভাগ টাকাটা ক্রীড়ামন্ত্রকই দেয়। এই অবস্থায় এআইটিএ-র শীর্ষকর্তারা মঙ্গলবারই কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। নির্বাচন কমিটির এক সূত্র আবার জানালেন, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তাঁরাও ডাবলস টিম নির্বাচন নিয়ে পুনর্বিবেচনা করতে পারেন। ক্রীড়ামন্ত্রী টুইটে আরও প্রশ্ন তুলেছেন ‘দুটোর জায়গায় একটা ডাবলস টিম নির্বাচনের পিছনে যে লুকনো প্রশ্নটা থাকছে সেটা হল, মিক্সড ডাবলসে সানিয়া মির্জার পার্টনার কে হবে? গ্র্যান্ডস্লাম চ্যাম্পিয়ন মিক্সড ডাবলস জুটিকে কেন ডিসটার্ব করা হল?’
এর সঙ্গে ক্রীড়ামন্ত্রক জানতে ইচ্ছুক যে, যাঁরা গত চারটে অলিম্পিকে পদক জিততে ব্যর্থ, সেই জুটিকেই ফেডারেশন কেন এ বারও অলিম্পিকের জন্য নির্বাচিত করল? ফেডারেশন কি আলাদা ভাবে তিন প্লেয়ারের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের মনোভাব জেনে লিয়েন্ডার-মহেশ জুটির নাম প্রকাশ করেছে?
টেনিসমহল এখন দেখার অপেক্ষায়, মহেশদের ‘ভলি’র কী রিটার্ন আসে এআইটিএ-র কোর্ট থেকে!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.