‘অরেঞ্জ, শেম অন ইউ। তোমাদের লজ্জা হওয়া উচিত।’
‘রোনাল্ডো গোল করতেই পুরো টিমটা যেন পক্ষাঘাতে কাবু হয়ে পড়ল!’
‘বার্ট ফান মারউইক, এ বার দায়িত্ব ছাড়ো। টিমটা তো শেষ হয়ে গেল।’
একের পর এক শিরোনাম। ছোট থেকে বড়, মাঝারি থেকে মেজোডাচ মিডিয়া রীতিমতো তুলোধোনা করে ছেড়ে রবেনদের। বিদ্রুপ, হতাশা, ক্ষোভ উপচে পড়ছে। কোথাও মুণ্ডুপাত চলছে নেদারল্যান্ডস কোচের। কোথাও বা আবার ফুটবলারদের কাঠগড়ায় তুলে বলা হচ্ছে, ডাচ ফুটবলে একটা কালো দিন উপহার দিয়ে গেলেন রবেন-স্নাইডাররা। স্রেফ নিজেদের ইগোর যুদ্ধকে ধরে রাখতে।
আর এর মাঝেই কি না টিমে বিভাজনের ইঙ্গিত! |
ইতিহাস বলছে, আজ পর্যন্ত বড় টুর্নামেন্টে ডাচরা যে দুর্দান্ত সব টিম নিয়েও কিছু করে দেখাতে পারেনি, তার পিছনে মূল কারণ টিমে নানা শিবির তৈরি হয়ে যাওয়া। ফুটবলারদের আভ্যন্তরীণ ঝামেলা। যার নবতম নমুনা পেশ করলেন আর্জেন রবেন এবং রাফায়েল ফান ডার ফার্ট। রবেন সরাসরি জানিয়ে দিলেন, ইউরোয় টিম যা খেলেছে তাকে জঘন্য ছাড়া কিছু বলা যায় না। কোচ মারউইকের দোষ নেই। যাবতীয় দোষ ফুটবলারদের।
পর্তুগালের বিরুদ্ধে লজ্জার হারের পর রবেন প্রায় ফুঁসতে ফুঁসতে ক্যামেরার সামনে আসেন। এবং এসে আঠাশ বছরের ডাচ মহাতারকার গোলাগুলি এ রকম: “শিবিরের ঝামেলাগুলোকে তো ড্রেসিংরুমে থাকতেই হবে। আমি এ নিয়ে কথাই বলতে চাই না।” “আমি বাসে উঠে পড়তে চাই। কিন্তু ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হচ্ছে, কারণ এটাই আমার কাজ।” “পুরো টিমটা ডুবিয়েছে। ফুটবলারদের সবার আয়নার সামনে দাঁড়ানো উচিত। ইউরোর মতো টুর্নামেন্টে তিনটে ম্যাচের তিনটেতেই হেরেছি। জঘন্য খেলেছে নেদারল্যান্ডস।”
রাগে গরগর করছেন ফান ডার ফার্টও। পর্তুগালের বিরুদ্ধে অসাধারণ গোল করেও টিমকে জেতাতে পারেননি। তিনিও বলে রেখেছেন, “আমরা খারাপ খেলেছি। প্লেয়ারদেরই দায় নিতে হবে। খারাপ লাগছে ডাচ সমর্থকদের জন্য। হাজার হাজার মানুষ এসে এই কুৎসিত ফুটবল দেখে গেলেন।”
এক দিকে ফুটবলাররা এ ওর দিকে আঙুল তুলতে ব্যস্ত। উল্টো দিকে, আবার চাকরি যাওয়ার আশঙ্কা কোচ ফান মারউইকের। তাঁর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, ফর্মে থাকা ফান ডার ভার্টকে বসিয়ে নিজের জামাই ফান বোমেলকে খেলিয়ে গিয়েছেন। যিনি কি না কিছুই করতে পারেননি। যা আবার সহ্য হচ্ছে না বোমেলের। শুনিয়ে রেখেছেন, “গত দু’বছরে অনেক কিছুই বদলেছে। এ বার পরিবেশও অন্য রকম ছিল।” ডাচ কোচ জানাচ্ছেন, দায়িত্ব ছাড়া নিয়ে এখনও কিছু ভাবেননি। বলেছেন, “সবে তো ইউরো শেষ হল। এখনও কিছু ভাবিনি। তবে আমি খুব হতাশ। জানতাম, দু’বছর আগে বিশ্বকাপে যা করেছিল টিম, সেটা আবার করা কঠিন।” ডাচ কোচের চাকরি শেষ পর্যন্ত টিকবে কি না জানা নেই। আর টিকলেও তিনি টিমের এই ডামাডোল মেটাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। |