সেই পাস, পাস আর পাস! তিকিতাকা!
কত রকমের পাস যে স্পেনের এই প্রজন্মটা খেলতে পারে তা শুধু দু’চোখ ভরে দেখতে হয়। ম্যাচের কিক-অফ করেছিল স্পেন। সেখান থেকে বিরতি পর্যন্ত বল পজেশন রাখল ৬৭ ভাগ। তবু স্পেন গোলের খুব বড় সুযোগ তৈরি করতে পারল না।
হোসে মোরিনহো যে বার ইন্টার মিলানকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতিয়েছিল একটা দারুণ স্ট্র্যাটেজি নিয়েছিল-- বিপক্ষ অর্ধে কখনও ট্যাকল কোরো না। আর নিজেদের অর্ধে এত ফুটবলার জড়ো করে রাখো যাতে বিপক্ষ সহজে পাস খেলতে না পারে। সোমবার রাতে টিভিতে দেখলাম প্রায় সেই একই ছবি। ক্রোয়েশিয়া সেই মোরিনহো মডেলেই খেলার চেষ্টা করছিল। এই ধরনের ম্যাচে ভাল উইং-প্লে না হলে গোল করা মুশকিল। স্পেনেরও তাই হচ্ছিল। |
শেষ আটে যেতে ক্রোয়েশিয়াকে এই ম্যাচে অন্তত ২-২ ড্র করতে হত। যদি ইতালি আয়ার্ল্যান্ডকে হারায়। আর ইতালি ড্র করলে তো হারলেও ক্রোয়েশিয়াই কোয়ার্টার ফাইনালে যেত। এই সব অঙ্ক মাথায় রেখে যে স্পেন এবং ক্রোয়েশিয়া দু’দলই নামেনি তার প্রমাণ পেলাম তোরেস বা মান্ডজুকিচদের খেলায়। আগের দু’ম্যাচের ছক পাল্টে এ দিন ৪-৫-১ ছকে দলকে খেলাল ক্রোয়েশিয়া বস স্লাভেন বিলিচ। ক্রোয়েশিয়া নিজেদের অর্ধে পায়ের জঙ্গল তৈরি করে রাখায় অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে থমকে যাচ্ছিল ইনিয়েস্তাদের পাসিং। স্পেন এই সময় পর্যন্ত আটটা শট নিল গোলে। যেগুলো আটকাতে খুব সমস্যায় পড়তে হয়নি ক্রোট গোলকিপার প্লেতিকোসাকে।
স্পেনীয় আক্রমণের উল্টো দিকে বরং ম্যাচের সেরা সুযোগটা পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়ার রাকিটিচ। মডরিচের ক্রসে ওর জোরালো হেড দুর্দান্ত বাঁচায় কাসিয়াস। তার কিছু পরেই ক্রোয়েশিয়া চলে গেল দুই ফরোয়ার্ডে। আগের ম্যাচের ৪-৪-২ ছকে। ওদের গোল করার তাগিদ অনেক বেশি ছিল। প্রতি-আক্রমণে ঝাঁঝ একটু বেশিই ছিল ওদের। উইং আক্রমণে একবার-দু’বার গোলের কাছাকাছি পৌঁছেও গিয়েছিল। তবে লাভ হয়নি। |
দ্বিতীয়ার্ধে দেল বস্কি আবার তোরেসকে তুলে নামাল উইঙ্গার নাভাসকে। কিছু পরে সিলভাকে তুলে নামাল ফাব্রেগাসকে। স্পেনের ছক তখন ৪-৩-৩ ঠিকই, কিন্তু কোনও প্রতিষ্ঠিত স্ট্রাইকার নেই। কিন্তু গোল এল সেই ছকেই। বদলি নাভাসই জয়ের গোলটা করল ইনিয়েস্তার পাস থেকে। ক্রোট-ডিফেন্স তখন অফসাইড ভেবে থমকে দাঁড়িয়ে। সেই পাসিংয়েই গোল তুলে নিল স্পেন।
ড্র করলেই শেষ আট নিশ্চিত এই অবস্থায় নেমে স্পেনের তাগিদ কোথাও কম ছিল বলে মনে হল। জেতার থেকেও ওদের কাছে খেলার ইচ্ছেটাই বেশি ছিল। বেশি ইচ্ছে ছিল নিজেদের ছন্দটা বজায় রাখার। উল্টো দিকে ক্রোয়েশিয়া প্রতি-আক্রমণে চেষ্টা করল। গোল করার তাগিদ অনেক বেশি দেখাল। কিন্তু হার মানল পাসিংয়ের সামনে। |