যে কোনও বড় টিমের সঙ্গে ছোট টিমের ম্যাচ হলে যা হয়ে থাকে, ইতালি-আয়ার্ল্যান্ড ম্যাচটায় তারই অ্যাকশন রিপ্লে দেখছিলাম। বড় টিমের বল পজেশন বেশি থাকবে, গোলে শট বেশি হবে, কর্নারের সংখ্যা বেশি হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ত্রাপাতোনির মতো একজন বিশ্ববিখ্যাত ইতালীয় কোচ যখন আয়ার্ল্যান্ডের দায়িত্বে, কোথাও না কোথাও রক্ষণে নতুন কিছু আশা করেছিলাম। সে দিক দিয়ে দেখলে প্রাপ্তি শূন্য। পেনাল্টি বক্সে একগাদা লোক বাড়িয়ে পায়ের জঙ্গল তৈরি করে গোল আটকানোর চেষ্টা করা ছাড়া আয়ার্ল্যান্ডের কাছ থেকে কিছুই পেলাম না। রাত জেগে এই ফুটবল না দেখলেও চলে।
|
কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে সোমবার জিততেই হত ইতালিকে। ধরে নিয়েছিলাম, শুরু থেকেই অল-আউট ফুটবল খেলবে ইতালি। মুহূর্মুহূ আক্রমণ আছড়ে পড়বে আইরিশ বক্সে। ৪-৩-১-২ ফর্মেশনে টিমটাকে সাজিয়েছিলেন প্রান্দেলি। এই ফর্মেশনে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের। যে দায়িত্বটা ছিল দি রোসির। সামনে দুই ফরোয়ার্ড বলতে দি নাতালে আর কাসানো। রোসি নিজের দায়িত্বটা ঠিকই পালন করছিল, কিন্তু আয়ার্ল্যান্ডের অ্যাটাকিং থার্ডে এসে হারিয়ে যাচ্ছিল ইতালির আক্রমণ। যেটা স্পেন বা জার্মানির ক্ষেত্রে হবে না।
শেষ বারোটা ম্যাচে হারেনি ইতালি, এই তথ্য নিশ্চয়ই ইতালি সমর্থকদের আশ্বস্ত করবে। কিন্তু সাফ বলছি, এই ইতালি যদি নকআউট পর্বে অভাবনীয় উন্নতি না করে, ওদের বেশি দূর যাওয়ার কথা নয়। কী সব ফুটবলারের জন্ম দিয়েছে ইতালি! সেই দেশে প্রতিভার অভাব হল কি না জানি না। পাওলো রোসি, স্কিলাচি, বাজ্জিও, ভিয়েরা, দেল পিয়েরোর দেশে স্ট্রাইকার কি না বালোতেলি বা কাসানো! টিমটায় মাঝারিয়ানার ছড়াছড়ি। তবে বড় টিম, একটা ঐতিহ্য আছে। সে দিক দিয়ে উতরে গেল গ্রুপে। একমাত্র গোলটা সেটপিস থেকে। ঠিক সময়ে মাথা ছুঁইয়ে হেডটা করেছিল কাসানো। শেষ দিকে বালোতেলির গোলটা অসাধারণ। শূন্যে হাফ-টার্নে ভলি। গোটা ম্যাচে ওটাই একমাত্র মনে রাখার মতো মুহূর্ত। |
গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচ এ বারে ইউরোয় প্রায় শেষ, কোয়ার্টার ফাইনালে কে কার সঙ্গে খেলবে তা-ও প্রায় ঠিক। কিন্তু এখন পর্যন্ত জার্মানি ছাড়া কোনও টিমের খেলায় ধারাবাহিকতা দেখতে পেলাম না। এক একটা বড় টুর্নামেন্ট লোকে মনে রাখে কেন? নতুন কোনও তারকার আবির্ভাব হবে, প্রত্যাশার বাইরে কোনও টিম চমক দেবে, নতুন কোনও ফর্মেশন নিয়ে ফুটবল বিজ্ঞানীরা কাটাছেঁড়া করবে, তবে না মনে রাখব কোনও টুর্নামেন্ট। এটা যদি বিচার্য হয়, এ বারের ইউরোয় হতাশই হয়েছি। নতুন কোনও ভাল স্ট্রাইকার চোখে পড়ল না, মনে রাখার মতো বল প্লেয়ার পেলাম না। |