|
|
|
|
মজুরি-বৃদ্ধির নামে সুবিধা কম, অনশন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মজুরি বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু আগের তুলনায় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা। প্রতিবাদে সোমবার অনশনে বসলেন শালবনি ফিড প্ল্যান্টের কর্মীরা। সরকারি ওই কারখানার ওয়ার্কস্মেন ইউনিয়নের অভিযোগ, চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা দক্ষ কর্মীদের দিনে ৮ টাকা ৪৫ পয়সা মজুরি বৃদ্ধি করা হলেও ছেঁটে দেওয়া হয়েছে একাধিক সুবিধা। ইউনিয়নের সভাপতি সলিলকান্তি সাহা বলেন, “আমরা হিসেব করে দেখেছি, প্রকৃত মাইনে বৃদ্ধি হয়নি। মাইনে বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দাবিতেই অনশন। নিরাপত্তারক্ষীদেরও নিয়ম মেনে মাইনে দেওয়া হয় না। জঙ্গলমহলে থাকা সরকারি সংস্থা গরিব খেটে খাওয়া মানুষকে বঞ্চিত করছে বলেই প্রতিবাদে নেমেছি আমরা।” পরে স্থানীয় বিধায়কের অনুরোধে ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাসে কর্মীরা অনশন তুলে নিলেও দাবি না-মানা হলে ভবিষ্যতে বৃহৎ আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন তাঁরা। শালবনি ফিড প্ল্যান্টে দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক মিলিয়ে ২৫ জন কাজ করেন। এর বাইরে রয়েছেন কিছু নিরাপত্তারক্ষী। আগে দক্ষ কর্মীদের দিনে ১৬৯ টাকা মজুরি দেওয়া হত। ২০ টাকা ২৮ পয়সা পিএফের জন্য কেটে নেওয়া হত। শ্রমিকেরা হাতে পেতেন ১৪৮ টাকা ৭২ পয়সা। আর অদক্ষ শ্রমিকদের দিনে ১৪৫ টাকা মজুরি ছিল। পিএফ কাটার পর হাতে পেতেন ১২৭ টাকা ৬০ পয়সা। কিন্তু তারই সঙ্গে ক্যান্টিনে ভর্তুকি ছিল ৩ টাকা ২৫ পয়সা। আর সাবান-সহ অন্য সুযোগ-সুবিধার জন্য মাসে ১০০ টাকা করে শ্রমিকদের দেওয়া হত। দক্ষ শ্রমিকদের মাইনে বেড়ে হয়েছে ১৭৭ টাকা ৪৫ পয়সা। অর্থাৎ দিনে ৮ টাকা বেড়েছে। আর অদক্ষ শ্রমিকদের ১৫২ টাকা ২৫ পয়সা। অর্থাৎ ৭ টাকা ২৫ পয়সা বেড়েছে। কিন্তু বাকি সুবিধাগুলি ছাঁটাই করে দেওয়া হয়েছে। কারখানার কর্মী জগন্নাথ পাত্র, সুশীল ঘোষদের অভিযোগ, “মাইনে বাড়ানোর নামে বঞ্চনা করা হয়েছে। ঘুরপথে বাড়া মাইনে কেটে নেওয়ার চক্রান্ত করা হয়েছে। সংস্থার জন্মলগ্ন থেকে কাজ করে আসার পরেও আমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।” ১৯৮৮-৮৯ সালে সংস্থার জন্ম। ইউনিয়নের দাবি, ১৯৯৮ সাল থেকে একটানা সংস্থাটি লাভে চলছে। জন্মলগ্ন থেকে হিসাব করলে সংস্থার লাভ সাড়ে ৬ কোটি টাকা। লাভে চলা সত্ত্বেও শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ইউনিয়ন। কারখানার ঠিকাদার নিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীদের বেতন নিয়েও (মাত্র ১২০০ টাকা) প্রশ্ন তুলেছেন শ্রমিকেরা। সংস্থার সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার কাজল দে বলেন, “দাবি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাঁরা আলোচনায় মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।” আগামী সপ্তাহে দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক হবে। |
|
|
|
|
|