|
|
|
|
কাটোয়া ধর্ষণ-কাণ্ড |
রেলপুলিশ চার্জশিট দেয়নি ডাকাতিতে, বিরক্ত পুলিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাটোয়া |
নির্দিষ্ট সময়েই কেতুগ্রামের ধর্ষণ- মামলায় চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু একই ঘটনায় ট্রেন-ডাকাতির মামলায় এখনও চার্জশিট দিতে পারেনি রেলপুলিশ।
বর্ধমানের এক পুলিশকর্তা বলেন, “আমরা কার্যত শূন্য থেকে শুরু করেছিলাম। তা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। অথচ রেলপুলিশ এখনও তদন্তই শেষ করতে পারল না।” তাঁদের আশঙ্কা, এর ফলে বিচার বিলম্বিত হলে ধৃতেরা সুবিধে পেতে পারে। রেলপুলিশ সুপার (হাওড়া) মিলনকান্তি দাসের প্রতিক্রিয়া, “জেলা পুলিশের আশঙ্কা নিয়ে কিছু বলতে পারব না। তদন্ত শেষ হলে ঠিকই চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।”
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কাটোয়া-আমোদপুর ছোট লাইনে কেতুগ্রামের পাচুন্দি ও গোমাই স্টেশনের মাঝে ট্রেন দাঁড় করিয়ে গার্ড ও চালকের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে লুঠপাট চালায় দুষ্কৃতীরা। ট্রেন থেকে নামিয়ে ধর্ষণ করা হয় বীরভূমের কীর্ণাহার থেকে ফেরা এক মহিলাকেও। ওই সন্ধ্যাতেই জিআরপি-র কাটোয়া শাখায় লুঠপাটের অভিযোগ করেন ট্রেনের চালক ও গার্ড। রাতে রেলপুলিশের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন মহিলা। পরের দিন ঘটনাস্থলে যান রেলপুলিশের ডিজি দিলীপ মিত্র ও রাজ্য পুলিশের আইজি গঙ্গেশ্বর সিংহ। সিদ্ধান্ত হয়, ধর্ষণের ঘটনার তদন্ত করবে কেতুগ্রাম থানা।
কেতুগ্রাম থানা সূত্রে জানা যায়, চার্জশিট পেশ করার আগে তারা কাটোয়া থেকে দু’জন ও বীরভূমের লাভপুর থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল। চার্জশিট পেশ করার পরে ধর্ষণ-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত রেজাউল মির্জা ওরফে বাবু-সহ আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগকারিণী চার জনকে শনাক্তও করেছেন। কাটোয়া জিআরপি জানিয়েছে, ধৃতেরা ডাকাতিতেও যুক্ত ছিল। ডাকাতির মাল উদ্ধার করে পুলিশ তা জিআরপি-র হাতে তুলেও দিয়েছে। জিআরপি অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতেও নিয়েছিল। এর পরেও চার্জশিট দিতে দেরি কেন, তা জেলা পুলিশের কর্তাদের কাছে স্পষ্ট নয়।
জেলা পুলিশের বক্তব্য, ঘটনার ‘মূল অংশে’র তদন্ত করছে জিআরপি। জেলা পুলিশ তার একটা অংশের (ধর্ষণ) তদন্ত শেষ করেছে। জেলার এক পুলিশকর্তার আশঙ্কা, “নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জিআরপি চার্জশিট জমা দিতে না পারায় ধৃতরা ডাকাতির মামলায় জামিন পেয়ে যেতে পারে। মূল মামলায় জামিন পেয়ে গেলে ধর্ষণ-কাণ্ডেও জামিন পেতে তাদের সুবিধে হবে। সে ক্ষেত্রে জেল হাজতে রেখে ধৃতদের বিচার হবে না।” কাটোয়া বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অম্লান বন্দ্যোপাধ্যায়ও মনে করেন, “দু’টি চার্জশিট এক সঙ্গে জমা দিয়ে একটাই ঘটনা হিসেবে বিচার শুরু হলে ভাল হত। এখন আইনি জটিলতা দিলে অভিযুক্তরা সুবিধা পেয়ে যেতে পারে।”
কাটোয়া জিআরপি-র ব্যাখ্যা, যাত্রী থেকে রেলকর্মী-সহ অনেক লোকজনের সঙ্গে কথা বলে ডাকাতির সূত্র বের করতে হচ্ছে তাদের। তাই তদন্ত শেষ করতে দেরি হচ্ছে। কবে তা শেষ হবে, তারও সদুত্তর তারা দিতে পারেনি। |
|
|
|
|
|