ইছাপুর কোল ব্লকে প্রকল্প গড়ায় মানা, ক্ষিপ্ত বামেরা
কেন্দ্রীয় সরকারের কয়লা মন্ত্রকের থেকে ইছাপুর কোল ব্লকে কয়লা তোলার দায়িত্ব পেয়েছে রাজ্য সরকার। তাই ফরিদপুর ও অন্ডাল ব্লকের ১১টি মৌজায় কোথাও কোনও প্রকল্পের ছাড়পত্র দেবে না রাজ্য সরকার। সম্প্রতি এ কথা জানিয়ে ওই দুই বিডিও, এডিডিএ এবং দুর্গাপুর পুরসভার মেয়রকে চিঠি দিয়েছেন জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোরও। বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখেছেন আসানসোলের দুই বাম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী এবং রামচন্দ্র সিংহ। তবে বিষয়টিকে রাজ্যের অর্থনৈতিক ‘উন্নয়নের পক্ষে ইতিবাচক’ বলে দাবি করেছেন আসানসোলের তৃণমূল বিধায়ক তথা এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
ফরিদপুর ও অন্ডালের বিডিও, এডিডিএ এবং দুর্গাপুর পুরসভার মেয়রকে লেখা ওই গোপন চিঠিতে জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের তরফে ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনারেল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেড (ডব্লুবিএমডিটিসি) এই কোল ব্লকের কয়লা তুলবে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা জানান, ওই দু’টি ব্লকের উখড়া, খাঁদরা, ভদ্রপুর, সরপি, কেন্দুয়া, চম্পাবনি, বাঁশড়া, ইছাপুর, বাশগড়া, আমলুকা, বাঙ্গুরি এবং পাটসোরা মৌজায় প্রায় ১০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা রাজ্য সরকারকে কয়লা তোলার জন্য দেওয়া হয়েছে। তাই এই এলাকাগুলিতে কোনও প্রকল্প গড়ার জন্য রাজ্য সরকার ছাড়পত্র দেবে না। বিডিও-দের বিষয়টি কঠোর ভাবে পালনের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।
জেলাশাসক বলেন, “কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রক আগেই জানিয়েছে, যে সব অঞ্চলে মাটির তলায় কয়লা আছে সেখানে কোনও প্রকল্প গড়া যাবে না। রাজ্য সরকার ইছাপুর ব্লক পেয়েছে। সরকারের অনুমতি ছাড়া ওই সব এলাকায় প্রকল্প গড়ার ছাড়পত্র দেওয়া হবে না।” জেলাশাসক আরও জানান, সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, ঘোষিত ১১টি মৌজা এলাকায় কিছু আবাসন প্রকল্পের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই সংস্থাগুলি রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের অনুমতি ছাড়াই কাজ শুরু করেছে। ব্লক স্তরে এই বেআইনি কাজ আটকাতেও বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজ্য সরকারের এই বিধি-নিষেধের ক্ষুব্ধ বেশ কিছু এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের আশঙ্কা, এই ১১টি মৌজায় খোলামুখ খনি তৈরি করে কয়লা তোলা হলে বাসিন্দারা গৃহহীন হয়ে পড়বেন। কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রক ও রাজ্য সরকারের কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন আসানসোলের দুই সাংসদ সিপিএমের বংশগোপাল চৌধুরী ও সিপিআইয়ের রামচন্দ্র সিংহ। তাঁরা দাবি তুলেছেন, ওই ১১টি মৌজার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন ও এলাকার পরিবেশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক। তাঁদের আরও দাবি, খোলামুখ খনির বদলে ভূগর্ভস্থ খনি বানিয়ে কয়লা তুলুক সরকার।
আসানসোলের তৃণমূল বিধায়ক তথা এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “ইছাপুর কোল ব্লক রাজ্য সরকারকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। বামপন্থীরা নিছক বিরোধিতা করার জন্য সব ব্যাপারে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে থাকে। এ ক্ষেত্রেও তা-ই শুরু করেছে ওরা।”
কংগ্রেসের আসানসোল মহকুমা কমিটির সভাপতি রবিউল ইসলামের আবার বক্তব্য, “যে সব এলাকায় কোল ব্লক দেওয়া হয়েছে, সেখানকার বাসিন্দাদের উপযুক্ত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করলে আর কোনও বিতর্ক থাকবে না। তবে অযথা বিরোধিতা করে রাজ্যের অর্থনীতির ক্ষতি করাও ঠিক নয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.