জেলা সদর বালুরঘাটকে পেছনে ফেলে মাধ্যমিকের ফলাফলে এগিয়ে গেল মহকুমা শহর গঙ্গারামপুর। গঙ্গারামপুর হাই স্কুলের ছাত্র সাদৃশ্য ভৌমিক এবারে মাধ্যমিকে ৬৫৯ নম্বর পেয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মধ্যে সম্ভাব্য সেরার তালিকায় রয়েছে। ওই স্কুলের সার্বিক ফলও এবারে জেলায় নামী স্কুল গুলির চেয়ে ভাল। কয়েকদিন আগেই গঙ্গারামপুর হাই স্কুলের উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়া বিশাল কুন্ডু জয়েন্ট এন্ট্রাসে ডাক্তারি বিভাগে পঞ্চম স্থান পেয়েছে। স্কুলে পঠন পাঠনে নিয়মাবর্তিতা ও ধারাবাহিকতার জন্যই ভাল ফল হয়েছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি। এই স্কুলে এবার ২৮৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৮৪ জনই সফল। স্টার পেয়েছে ১০০ জন পড়ুয়া। বালুরঘাটের গ্রামীণ এলাকার পতিরাম হাই স্কুলও রেজাল্টের বিচারে উপরের সারিতে উঠে এসেছে। এই স্কুলের মোট পরীক্ষার্থী ১৩৪ জনের মধ্যে ১২৯ জন সফলভাবে উত্তীর্ণ। সর্বোচ্চ অরিজিত রায় পেয়েছে ৬৪৬ নম্বর। স্টার পেয়েছে ১৪ জন। বরাবর মাধ্যমিকে জেলার বালুরঘাট হাই স্কুল এবং বালুরঘাট গার্লস হাই স্কুল নজর কাড়া ফল করলেও এবারে সর্বোচ্চ নম্বরের তালিকায় বেশ পিছিয়ে। বালুরঘাট হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ কুণ্ডুর কথায়, “সার্বিক ভাবে এবারে মাধ্যমিকের রেজাল্ট গতবারের মতোই। তবে বাংলা এবং ইতিহাসে নম্বর কম আসায় সর্বোচ্চ নম্বরের তালিকায় পড়ুয়ারা পিছিয়ে গিয়েছে। স্কুলের সেরা শুভদ্বীপ সাহা সর্বোচ্চ ৬৪৫ নম্বর পেয়েছে।” নম্বর নিয়ে একই অভিযোগ করেছেন বালুরঘাট গার্লসের প্রধান শিক্ষিকা ভবানী সরকার। এই স্কুলের সর্বোচ্চ ৬৫৩ নম্বর পৃথিবী মন্ডলের। এরপরে রয়েছে সায়ন্তনী মন্ডলের ৬৫০ এবং রিঙ্কি দাসের ৬৪৯ নম্বর। গঙ্গারামপুর হাই স্কুলের সাদৃশ্য ভৌমিক বাংলায় ৯০, অংকে ৯৮, ইংরাজিতে ৯৫, জীবন বিজ্ঞানে ৯৫, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৯, ইতিহাসে ৯১ এবং ভূগোলে ৯১ নম্বর পেয়েছে। গঙ্গারামপুরের ডাকবাংলো পাড়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ী দ্বীপেশ ভৌমিক ও গৃহবধূ সপ্তমী দেবীর পুত্র সাদৃশ্যের কথায়, “স্কুলে একদিন গরহাজির হলেই শিক্ষকেরা খোঁজ নিতে বাড়িতে আসতেন।” বই পড়া এবং গান শোনা সাদৃশ্যের পছন্দ। বড় হয়ে সে গ্রামে গিয়ে চিকিৎসা করতে চায়। শিক্ষকদের ক্লাসে নিয়মিত তালিমেই সাদৃশ্যের মতো অন্যান্য পড়ুয়াদেরও খুব বেশি গৃহশিক্ষক নির্ভর হতে হয়নি বলে স্কুল শিক্ষকদের দাবি। দ্বীপেশবাবু বলেন, “সাদৃশ্য চারজন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়েছে। স্কুলে নিয়মিত পঠনপাঠনই ওকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। বাড়িতে রোজ ৪-৫ ঘন্টার বেশি ওকে পড়তে হয়নি।” গঙ্গারামপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কমলেশ বসাক বলেন, “স্কুলের সমস্ত শিক্ষক টিম গড়ে পড়াশোনা করিয়েছেন। সেশন শুরুর প্রথম থেকেই ক্লাস ফাঁকি ছিল না।” পতিরাম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল আমিনের কথায়, “গ্রামের খুব গরিব ঘর থেকে আসা পড়ুয়াদের অধিকাংশেরই বাড়িতে গৃহশিক্ষক রাখার মতো আর্থিক পরিস্থিতি নয়।” স্কুলের পঠনপাঠনের উপর আগাগোড়া শিক্ষকেরা জোর দিয়েছেন। |