স্কুল শিক্ষা দফতরের নিয়ম মেনে বছরের ২০০ দিনই মাধ্যমিক স্তরের পড়ুয়াদের অতিরিক্ত যত্ন নিয়ে রায়গঞ্জ করোনেশন হাই স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা ক্লাস করান। টেস্ট পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে স্কুলে কোচিং দেওয়া হয়। এ বারও মাধ্যমিক পরীক্ষায় টিম করোনেশনের নজরকাড়া ফলের পিছনে এটাই কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবার মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পরে জানা গিয়েছে, স্কুলের মোট ১৯৩ জন পরীক্ষার্থীর সকলেই পাশ করেছে। স্টার মার্কস পেয়েছে ১১৯ জন। ৬০০ বা তার বেশি নম্বর পেয়েছে ৫৩ জন। প্রথম বিভাগে পাশ করেছে ১৭২ জন। স্কুল তথা জেলায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে অনির্বাণ সাহা। ৬৫৩ নম্বর পেয়ে জেলায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ওই স্কুলের অপর পড়ুয়া বিজয় পোদ্দার। এ ছাড়াও ৬৫৩ নম্বর পেয়ে স্কুলের মধ্যে তৃতীয় স্থান দখল করেছে সৌমিক দেব। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “স্কুলের সমস্ত শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী, পরিচালন সমিতি, পড়ুয়া ও অভিভাবকদের বছরভর পরিশ্রমের জেরেই প্রতি বছর করোনেশনের পড়ুয়ারা মাধ্যমিকে ধারাবাহিক ভাল ফল করে। এ বছরও ভাল ফল করে অনির্বাণ সহ টিম করোনেশনের পড়ুয়ারা উত্তর দিনাজপুর জেলার মুখ উজ্বল করেছে।” স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত এই প্রসঙ্গে বলেন, “স্কুলের শিক্ষকরা মাধ্যমিক স্তরের প্রতিটি পড়ুয়ার ওপর আলাদা করে যত্ন নিয়ে ক্লাস করান। স্কুল কর্তৃপক্ষ, অভিভাবক ও পড়ুয়াদের কঠোর পরিশ্রমই প্রতি বছর মাধ্যমিকে ভাল ফলের চাবিকাঠি। এ বছর মাধ্যমিকে ভাল ফল হওয়ায় সমিতির তরফে স্কুলের সমস্ত শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী, পড়ুয়া ও অভিভাবকদের আমরা ধন্যবাদ জানিয়েছি।” অনির্বাণের বাবা অসীমবাবু একটি বিমা সংস্থায় চাকরি করেন। মা মণিকা দেবী গৃহবধূ। তাঁদের একমাত্র ছেলে অনির্বাণ বাংলায় ৮৩, ইংরেজিতে ৯৫, অঙ্কে ১০০, জীবন বিজ্ঞানে ৯৮, পদার্থবিদ্যায় ৯৯, ইতিহাসে ৯৬ ও ভূগোলে ৯৪ নম্বর পেয়েছে। অনির্বাণ বলে, “স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা সারা বছর পড়ুয়াদের পড়াশুনা নিয়ে নানা অসুবিধা ও সমস্যার কথা খোঁজ নিয়ে নিয়মিত ক্লাস করাতেন। সে জন্যই আমরাএই রকম ভাল ফল করতে পেরেছি। পড়াশুনা নিয়ে যে কোনও সমস্যায় শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমাদের সব সময় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।” অনির্বাণ বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে একাদশ শ্রেণিতে করোনেশন স্কুলেই ভর্তি হতে চায়। ভবিষ্যতে একজন চিকিৎসক হয়ে গরিবদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা করতে চায় সে। অনির্বাণ এ দিন বলে, “এত ভাল স্কুল ছেড়ে একাদশ শ্রেণিতে অন্য কোনও স্কুলে ভর্তি হওয়ার কথা ভাবতেই পারি না।” |