এক শিক্ষককে গুলিতে ঝাঁঝরা করে মেরে পালিয়েছে একদল দুষ্কৃতী। মঙ্গলবার বেলা ৮টা নাগাদ কালিয়াচক থানার সুজাপুর বাজারে ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত শিক্ষকের নাম ওবেইদুল্লা শেখ ( ৩২)। তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। দুষ্কৃতীরা শিক্ষককে গুলি করে খুন করে চলে যাওয়ার পরে বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করার আশ্বাস দেওয়া বিক্ষোভকারীরা পথ অবরোধ তুলে নেয়। শিক্ষক খুনের পরেই এলাকার সমস্ত দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “নিহত ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি খুনের চেষ্টার মামলা রয়েছে। পুরানো রেষারেষির জেরেই ঘটনা বলে সন্দেহ হচ্ছে। ৩ জনকে শনাক্ত করা গিয়েছে। তাঁদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।” বাসিন্দার একাংশের বক্তব্য, নিহত শিক্ষক এবিটিএ সদস্য হলেও তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছিলেন। তৃণমূলের মিটিং-মিছিলে বাসিন্দারা তাঁকে দেখেছেন। ঘটনাচক্রে, শিক্ষককে খুনের ঘটনায় যুক্ত হিসেবে যাঁর দিকে অভিযোগের তির, সেই হায়দর আলিও তৃণমূল সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত। ওই ঘটনার আড়ালে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয় রয়েছে কি না তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের মালদহের সভানেত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেছেন, “খুনের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।” মালদহের সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “নিহত শিক্ষক আমাদের এবিটিএ-সদস্য ছিলেন। হতে পারে তিনি ইদানীং তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছিলেন। সেটা খোঁজ নিতে হবে। তবে জেলায় আইনশৃঙ্খলার অবস্থা যে ভাল নয় তা ফের স্পষ্ট হয়ে গেল। দুষ্কৃতীরা এত বেপরোয়া হয়ে উঠছে কেন?” পুলিশ সত্রে জানা গিয়েছে, ৪ এপ্রিল সুজাপুরের গয়েশবাড়ি এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক হায়দর শেখ সুজাপুর হাসপাতালে ওষুধ কিনতে গিয়ে আক্রান্ত হন। তাঁকে পেছন থেকে গুলি করা হয়। হায়দর শেখ কালিয়াচক থানায় তাঁর উপর হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওবেদুল্লা সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সম্প্রতি হায়দর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এলাকার বাসিন্দাদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, হায়দর একসময়ে কংগ্রেস করলেও বেশ কিছুদিন আগে তৃণমূলে যোগ দেন। পক্ষান্তরে, তাঁর বিরোধী পক্ষ বলে পরিচিত ওবেইদুল্লাও ইদানীং তৃণমূলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বুধবার ওবেইদুল্লার এক ভাইয়ের মেয়ের বিয়ে। এদিন সকালে বাইকে চড়ে ওবেইদুল্লা সুজাপুর বাজারে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, ওই সময়ে হায়দর শেখ ও তাঁর দুই ভাই পর পর তিন গুলি করে। গুলি খেয়ে রাস্তায় ওবেইদুল্লা রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে তিন ভাই হাঁটতে চলে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের অভিযোগ। পুলিশ সুপার জানান, সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের ধরার জন্য জোরদার তল্লাশি চালানো হচ্ছে। |