নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
এবার আসন্ন পুরভোটে ‘তৃণমূলের সন্ত্রাস’-এর আশঙ্কা করলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে দলীয় দফতরে বসে ওই আশঙ্কা প্রকাশ করেন অশোকবাবু। তাঁর কথায়, “ছয়টি পুরসভা নির্বাচন হচ্ছে। এরমধ্যে তিনটিতে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় ছিল। এবার পরিস্থিতি অনেক কঠিন। আমরা রাজ্যে ক্ষমতায় নেই। সর্বত্র চাপা সন্ত্রাস, হুমকির রাজনীতি চলছে। পুলিশ-প্রশাসনের উপর নিরন্তর চাপ সৃষ্টি চলছে। তার পরেই পুলিশ-প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকলে মানুষ অবাধে ভোট দিতে পারলে আমরা ভাল ফল করবই।” তৃণমূল সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, আসন্ন ভোটে পর্যুদস্ত হওয়ার কথা মাথায় রেখেই আগাম আশঙ্কার অভিযোগ তুলেছে সিপিএম। উল্লেখ্য, ২৬ মে শিলিগুড়িতে রাজ্যের প্রাক্তন আবাসন মন্ত্রী গৌতম দেব অভিযোগ করেন, ‘সন্ত্রাসে’র কারণে আসন্ন পুরভোটে বামফ্রন্টের বড় কোনও ‘সাফল্য’ আসবে না। তার পরে এদিন প্রাক্তন পুরমন্ত্রীও একই সুরে কথা বলেছেন। তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, সন্ত্রাসের অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। হারের ভয়ে আগাম সিপিএম পুরানো ভাঙা রেকর্ড বাজাতে শুরু করেছে। তবে এদিন অশোকবাবু দাবি করেন, “অনেক বাধা, সন্ত্রাস রয়েছে। আমরা জেতার বিষয়ে খুবই আশাবাদী।” ইতিমধ্যে হলদিয়া এবং ধূপগুড়িতে পুরভোটের প্রচার গিয়েছেন অশোকবাবু। এই দুটি ছাড়াও দুর্গাপুর পুরসভাও বামেদের দখলে রয়েছে। তবে নতুন রাজ্য সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথমবার পুরভোট হচ্ছে। তৃণমূলের কেন্দ্রীয় স্তরের নেতা, মন্ত্রীদের প্রতিটি পুর এলাকায় টানা প্রচার শুরু করেছেন। উত্তরবঙ্গের ধূপগুড়ি পুরসভা এককভাবে ক্ষমতায় আসার ব্যাপারে আশাবাদী তৃণমূল নেতারা। সেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না হওয়ায় ভোটকাটাকাটিতে বামফ্রন্ট কিছু বাড়তি সুবিধা পেতে পারে বলে সিপিএম নেতারা মনে করছেন। আগামী ৩ জুন রাজ্যে পুরভোট। অশোকবাবু জানান, যে কটি পুরসভার ভোট হচ্ছে, সবকটি আমার আমলেই তৈরি হয়। পুরসভাগুলিতে উন্নয়নের কাজও হয়েছে। তবে নতুন সরকার আসার পর কাজ তো বন্ধ। পুরমন্ত্রীকে সরকারি কাজে একদিনও উত্তরবঙ্গে দেখা যায়নি। এখন ভোটের প্রচারে বিরোধীরা বোর্ড গঠন করলে রাজ্য সরকার টাকা দেবে না বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ, নেতারা নিয়ম করে ওই হুমকি দিচ্ছেন। এটা অসাংবিধানিক। উন্নয়ন নয়, ভয়ভীতির রাজনীতি করে তৃণমূল ক্ষমতা দখল করতে চাইছে বলে প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর অভিযোগ। এরই মধ্যে আজ, বুধবার শিলিগুড়ি পুরসভা অভিযানের ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট। বাঘাযতীন পার্ক থেকে মিছিল শহর পরিক্রমা করার পর পুরভবনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাবেন বামফ্রন্টের কর্মী সমর্থকেরা। পরে মেয়র গঙ্গোত্রী দত্তকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। দলের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার অভিযোগ, “শিলিগুড়ি শহরে উন্নয়নের কাজ পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। গরিব মানুষের প্রকল্পগুলি মুথ থুবড়ে পড়েছে। গত একমাস ধরে আমরা শহরে সভা, সই সংগ্রহ অভিযান চালিয়েছি। মেয়রের মাধ্যমে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে দাবি জানানো হচ্ছে।” জীবেশবাবুর অভিযোগ, শহরের মত একইভাবে গ্রামীণ এলাকাগুলিতে উন্নয়নের কাজের গতি নেই। আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। এর প্রতিবাদে ব্লকে ব্লকে, প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় সভা, মিছিল হয়েছে। কাল, বৃহস্পতিবার বাগডোগরার বিহার মোড়ে জনসভা করা হবে। সেখানে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বক্তব্য রাখবেন। |