নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
সিপিএমের কৃষক সংগঠনের দার্জিলিং জেলা কমিটির এক নেতার বাড়ি সহ পর পর দুটি বাড়িতে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে নগদ সহ ছয় লক্ষাধিক টাকার জিনিসপত্র নিয়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। সোমবার রাত ২টা নাগাদ ঘটনাটি মাটিগাড়া থানার মেডিক্যাল মোড় সংলগ্ন ঠিকনিকাঠা এলাকায়। বাধা দিতে গেলে কৃষক সভার নেতা দিলীপ সরকারের মাথায় ভোজালি দিয়ে কোপ দেয় এক দুষ্কৃতী। ভোজালি আটকাতে গিয়ে ওই নেতার স্ত্রী জখম হয়েছেন। তার পরেই প্রতিবেশী দিবাকর সরকারের বাড়ির দরজা ভেঙে ডাকাতি করে ওই দুষ্কৃতীরা। প্রায় এক ঘন্টা ধরে দুটি বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। পুলিশ ডাকাতির খবর পেয়েও সময়মতো পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। অন্য এক ঘটনায় ওই রাতেই ফাঁসিদেওয়া থেকে ২ দুষ্কৃতীকে পাইপগান সহ ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন বাসিন্দারা।
দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “খবর পাওয়ার পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। স্থানীয় দুষ্কৃতীরা ওই ঘটনায় জড়িত কি না তা দেখা হচ্ছে। ফাঁসিদেওয়ায় দু’জন দুষ্কৃতী ধরা হয়েছে। একটি পাইপগান উদ্ধার করা হয়েছে। ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে ওই দুষ্কৃতীর যোগ এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।” ওই বাড়িতে যান সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদকণ্ডলীর অন্যতম সদস্য অশোক ভট্টাচার্য, জেলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জীবেশ সরকার। অশোকবাবু বলেন, “ডাকাতির সময় ওই বাড়ি থেকে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ অনেক দেরি করে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তা না হলে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা যেত। বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন রাতে বৃষ্টি হচ্ছিল। সেই সময় ওই দুষ্কৃতী দল ঠিকনিকাঠা গ্রামে হানা দেয়। দিলীপবাবু জানান, সম্প্রতি তাঁরা বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। রাত ২টা নগাদ ঘরের বাইরে আওয়াজ শুনে তাঁর ছোট ছেলে নীলোৎপল দরজা খুলে বাইরে বেরোতে যান। সেই সময় দরজা ঠেলে সাত জনের একটি দল ঘরের ভেতরে ঢুকে যায়। নীলোৎপল জানায়, দু’জনের হাতে পিস্তল ছিল, বাকিদের হাতে ভোজালি ছিল। ভেতরে ঢুকেই নীলোৎপলকে মারধর করে একটি ঘরে ঢুকিয়ে হাত বেধে ফেলে। পাশের ঘরে ঢুকে আলমারি ভেঙে সোনার অলঙ্কার, হীরা নেয়। চাবি দিয়ে আলমারির ড্রয়ার খুলে নগদ ৩৯ হাজার টাকা নেয় দুষ্কৃতীরা। তার পরেই দিলীপবাবুর স্ত্রী দীপা দেবীর হাত ও কান থেকে টেনে অলঙ্কার খুলতে গেলে বাধা দেন তিনি। এক দুষ্কৃতীকে টর্চ লাইট দিয়ে আঘাত করেন দিলীপবাবু। সেই সময় তাঁর মাথায় ভোজালি দিয়ে কোপ দেয় ওই দুষ্কৃতী। ভোজালি আটকাতে গেলে দীপা দেবীব বা হাতে কেটে যায়। হাতে আটটি সেলাই পড়েছে। দিলীপবাবুর বড় ছেলে দিবাকর সরকার সিটু’র জেলা কমিটির সদস্য। তিনি মেডিক্যাল মোড়ে তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে থাকেন। ডাকাতির সময় হাতের বাধন খুলে দিবাকরবাবুকে ফোন করে তাঁর ছোট ভাই। তিনি পুলিশকে খবর দেন। তিনি বলেন, “পুলিশকে খবর দেওয়ার পর অনেকটা সময় অপেক্ষা করি। পুলিশ পৌঁছয়নি। পরে আমি নিজেই বাড়ির দিকে রওনা হই।” দিলীপবাবুর বাড়িতে ডাকাতির পর দুষ্কৃতী দল দিবাকর সরকারের বাড়িতে হানা দেয়। দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে নগদ ২০ হাজার টাকা এবং বেশ কিছু সোনার অলঙ্কার নিয়ে যায়। |