সাফল্যের নানা মুখ |
সঙ্গীতার বাধা দারিদ্র
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটাশপুর |
প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়েই মাধ্যমিকে কৃতী সঙ্গীতা রায়। বাড়ি পটাশপুরের খাড়মালিপাটনা গ্রামে। বাবা পবিত্র রায় দোকানকর্মী। মা ছবিদেবী সংসার সামলানোর পাশাপাশি চাষের কাজেও হাত লাগান। দাদা প্রসেনজিতের সঙ্গে সঙ্গীতাও মাকে সাহায্য করে। স্কুলের শিক্ষক ও গ্রামের কোচিং সেন্টারের সাহায্যেই মাধ্যমিকে কৃতী সঙ্গীতা। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬১০। অধ্যাপনা করার স্বপ্ন দেখে সঙ্গীতা। সঙ্গীতার স্কুলের প্রধান শিক্ষক আশিস মিশ্র বলেন, “বাড়ির কাজ করতে না হলে সঙ্গীতা আরও ভাল ফল করত। ওর চাই অর্থ-সাহায্য ও পড়ার পরিবেশ।”
|
জিতেও শঙ্কা অপ্সরার
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
রূপকথা ভালবাসে অপ্সরা বালা। পছন্দ ঠাকুমার ঝুলি। গল্পের মতোই দারিদ্রের সঙ্গে লড়ে মাধ্যমিকে ৫৬৯ পেয়েছে রানি বিনোদমঞ্জরী রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের এই কৃতী ছাত্রী। সুভাষপল্লির বাসিন্দা অপ্সরার বাবা ভবসিন্ধুবাবু ভ্যান-চালক। মা অপর্ণাদেবী বিড়ি বাঁধেন। বাবা-মা কেউই প্রাথমিক স্কুলের গণ্ডি পেরোননি। বোন প্রীতি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। বিনোদমঞ্জরীর দিদিমণিদের অকুণ্ঠ সাহায্য পেয়েছে অপ্সরা। শহরের এক কোচিং সেন্টার নামমাত্র টাকায় তাকে পড়িয়েছে। কলা-বিভাগে পড়তে চায় অপ্সরা। ভবিষ্যতে হতে চায় আদর্শ-শিক্ষক। স্বপ্নপূরণ হবে তো, শঙ্কায় অপ্সরা।
|
লড়ে সফল প্রসেনজিৎ
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
অঙ্কের সমস্যার মতোই তার কাছে হার মেনেছে চূড়ান্ত দারিদ্র। বাড়অমৃতবেড়িয়া হাইস্কুলের ছাত্র প্রসেনজিৎ ঘোড়ই মাধ্যমিকে ৬৩২ পেয়ে আশা জাগিয়েছে দারিদ্র পীড়িত অন্যদের। এক চিলতে মাটির বাড়িতে বাবা-মা-বোনের সঙ্গে থাকে প্রসেনজিৎ। বাবা শ্রীমন্ত ঘোড়ই রিকসা চালান। তারই মধ্যে থেকে শুধু অঙ্ক, ইংরাজির টিউশনির খরচ দিতে পেরেছিলেন তিনি। কিন্তু পঞ্চম শ্রেণি থেকে শ্রেণিতে প্রথম হওয়া প্রসেনজিৎকে নিয়ে আশায় বুক বেধেছিল গোটা পরিবারই। ফেলুদা, আর ব্যোমকেশের ভক্ত প্রসেনজিৎ ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়।
|
গবেষক হতে চায় অরিন্দম
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাঁথি |
ভূপতিনগর থানার জুখিয়া কুমার নারায়ণ বিদ্যামন্দিরের অরিন্দম মণ্ডল এ বারের মাধ্যমিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম কৃতী। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৬৭ নম্বর। বাংলায় ৯১, ইংরাজিতে ৯২,অঙ্কে ৯৮, পদার্থবিজ্ঞানে ৯৯ ,জীববিজ্ঞানে ৯৯, ইতিহাসে ৯০ ও ভূগোলে ৯৮ পেয়েছে সে। ভবিষ্যতে গবেষক হতে চায় এই কৃতী ছাত্র। বাবা অশোক মণ্ডল রেলকর্মী। মা মৌসুমীদেবী স্কুল শিক্ষিকা। ছেলের সাফল্যে দারুণ খুশি অশোকবাবু বলেন, “কর্মসূত্রে বাইরে থাকি। ছেলের লেখাপড়াটা ওর মা-ই দেখাশুনা করতেন।’’ খুশির হাওয়া স্কুলেও। সহপাঠী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলেই অরিন্দমের সাফল্যে আপ্লুত। দিনে ১২ঘন্টা পড়াশোনা করত অরিন্দম। তবে কোনও গৃহশিক্ষক ছিল না। অরিন্দমের কথায়, “প্রধান শিক্ষক-সহ স্কুলের প্রতিটি শিক্ষক আর বাড়ি তে মা আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক চিত্তরঞ্জন বেরা বলেন, ‘‘ও অসম্ভব মেধাবী। একই সঙ্গে বিনয়ী। ও যে ভাল করবে, এমন আশাই ছিল।” সচিন তেন্ডুলকরের অসম্ভব ভক্ত অরিন্দম। প্রিয় খেলা ক্রিকেট। প্রিয় সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র। আর গোয়েন্দা গল্পের পোকা। টেলিভিশনে ডিটেক্টিভ সিরিয়াল আর সিনেমা হলে দেখা চাই-ই। তবে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার নয়, বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে গবেষক হতে চায় অরিন্দম।
|
|