|
|
|
|
১০০ দিনের কাজে সাফল্য ভীমপুরের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শালবনি |
একটা সময়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। শালবনিও তার ব্যতিক্রম নয়। জঙ্গলমহলের এই ব্লকে কাজ সে ভাবে এগোচ্ছিলই না। তবে এখন সেই পরিস্থিতি আর নেই বলেই দাবি প্রশাসনের। ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, গত ৫-৬ মাসে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ দ্রুত এগোচ্ছে। গত এক বছরে এই ব্লকে ৩৯টি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। সব মিলিয়ে আরও ৬০১টি প্রকল্পের কাজ চলছে। যে ৩৯টি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে, তার মধ্যে আবার ১৮টিই লালগড় লাগোয়া ভীমপুরের। একটা সময় যে এলাকায় মাওবাদীদের প্রভাব ছিল। ‘সশস্ত্র’-বাহিনী বন্দুক নিয়ে ঘুরে বেড়াত। যে সব প্রকল্পের কাজ চলছে, তা শেষ হলে এলাকার উন্নয়নে গতি আসবে বলেই দাবি ব্লক প্রশাসনের। শালবনির বিডিও জয়ন্ত বিশ্বাস বলেন, “একটা সময়ে কিছু সমস্যার জন্য ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ বেশ কিছু এলাকায় ব্যাহত হয়। তবে এখন আর সমস্যা নেই। ভাল ভাবেই প্রকল্পের কাজ এগোচ্ছে।”
এই প্রকল্পে মূলত রাস্তা সংস্কার, পুকুর কাটা, বাঁধ সংস্কারের কাজই হচ্ছে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০১১-’১২ আর্থিক বছরে শালবনির ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে এই প্রকল্পে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৭২ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা। ৩ হাজার ৪৬৫টি পরিবার কাজ করতে চেয়ে আবেদন করেছিল। সকলকেই কাজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এখানকার ১০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে সিপিএমের দখলে ছিল ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত। তৃণমূলের দখলে ৩টি। ভীমপুর, সাতপাটি ও লালগেড়িয়া। রাজ্যে পালাবদলের পরে অনাস্থা এনে সিপিএমের দখলে থাকা দেবগ্রাম পঞ্চায়েতটিও দখল করেছে তৃণমূল। ২০০৯ সাল থেকেই এই ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় মাওবাদীদের প্রভাব বাড়ে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত। স্বাভাবিক ভাবেই এখানে উন্নয়নের কাজও ব্যাহত হয়। রাজ্যে পালাবদলের পরেও প্রথমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। কারণ, কিছু পঞ্চায়েতে অচলাবস্থা তৈরি হয়। কোথাও প্রধান, কোথাও গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যরা উন্নয়ন বৈঠকে অনুপস্থিত থাকতেন। এই পরিস্থিতির কথা মানছেন বিডিও-ও। তবে তাঁর কথায়, “এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। কাজে বাধা এলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।”
ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, গত এক বছরে দেবগ্রাম পঞ্চায়েতে একশো দিনের প্রকল্পে ২টি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। ৮টি প্রকল্পের কাজ চলছে। বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ৫টি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। ১৪টির কাজ চলছে। শালবনিতে ৯৫টি প্রকল্পের কাজ চলছে। বাঁকিবাঁধে একটি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। ৭৯টির কাজ চলছে। লালগেড়িয়ায় ৪০টি প্রকল্পের কাজ চলছে। ভীমপুরে ১৮টি প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। ১২৬টির কাজ চলছে। অন্য দিকে, সাতপাটিতে ৫টি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। ৭টির কাজ চলছে। গড়মালে ৬টির কাজ শেষ হয়েছে। ২১টি প্রকল্পের কাজ চলছে। কাশীজোড়ায় ২টি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। ৮৩টির কাজ চলছে। কর্ণগড়ে ১২৮টি প্রকল্পের কাজ চলছে। কাজের এই অগ্রগতি সন্তোষজনক বলেই মনে করছে ব্লক প্রশাসন। বিডিও বলেন, “সময়ের মধ্যে কাজ শেষের উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।” পরিস্থিতি দেখে খুশি শালবনির তৃণমূল বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোও। এক সময়ে ভীমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন শ্রীকান্ত। তাঁর কথায়, “উন্নয়নে গতি এসেছে। দ্রুত পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে। ইতিমধ্যেই মানুষ উন্নয়নের সুফল পেতে শুরু করেছেন।” |
|
|
|
|
|