আইপিএল ট্রফি জেতার আটচল্লিশ ঘণ্টা পর কলকাতা নাইট রাইডার্স অধিনায়ককে দরাজ সার্টিফিকেট দিলেন তাঁর অন্যতম পেস ভরসা ব্রেট লি। বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটারদের দিয়ে তৈরি দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা, লড়াকু মনোভাব এবং ড্রেসিংরুমের মেজাজ হাল্কা রাখার ক্ষমতাসব মিলিয়ে গৌতম গম্ভীরে মজে লি। “গম্ভীরকে দেখে আমি ভীষণ প্রভাবিত। ক্রিকেটার হিসেবে ও অসাধারণ। সব সময় বিপক্ষের চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য তৈরি,” বলে লি যোগ করেছেন, “মাঠের বাইরে আবার সতীর্থদের সঙ্গে ইয়ার্কিও মারতে পারে গম্ভীর। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, ওর ন্যায্য ব্যবহার এবং বিচারের জন্য গম্ভীরকে সবাই শ্রদ্ধা করে।” এখানেই শেষ নয়। অস্ট্রেলীয় পেসার আরও বলেছেন, “বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ক্রিকেটারদের একসঙ্গে নেতৃত্ব দেওয়া যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু গম্ভীর সেই কাজটা খুব ভাল করে করেছে।”
গত দু’বছর তিনি কেকেআরের অন্যতম বিখ্যাত মুখ। নাইট সংসারের কোন ব্যাপারটা তাঁর সবচেয়ে ভাল লাগে? “আমার মনে হয় কলকাতার দর্শকরা প্রচণ্ড ক্রিকেট-পাগল। ওরা ক্রিকেট খেলাটাকে উপভোগ করে। ব্যাট-বলের ভাল লড়াই দেখতে চায়। ইডেনে যে দিন পুণে ওয়ারিয়র্স খেলতে এল, কলকাতার দর্শকরা উঠে দাঁড়িয়ে ‘দাদা দাদা’ বলে চিৎকার করে যাচ্ছিল। সৌরভ যখন একটা ক্যাচ নিল তখন মনে হচ্ছিল গোটা মাঠটাই বুঝি ফেটে পড়বে! এত আওয়াজ হচ্ছিল!”
কেকেআরে যত তারকা ক্রিকেটারই খেলুন না কেন, আইপিএল দর্শকদের কাছে টিম মালিক শাহরুখ খানও কোনও অংশে কম আকর্ষণীয় নয়। কে বেশি বড় তারকা, ব্রেট লি না শাহরুখ খান? জবাব আসতে একটুও দেরি হয় না। “অবশ্যই শাহরুখ। স্ক্রিনে ওর মুখ ভেসে উঠলে দর্শকরা পাগল হয়ে যায়। কিন্তু এত ভালবাসা পেয়েও মানুষ হিসেবে শাহরুখের পা সব সময় মাটিতে থাকে। গোটা বিশ্বে ও বিখ্যাত। এমনকী শাহরুখ যখন অস্ট্রেলিয়া যায়, ওখানেও ওকে ঘিরে একই রকম পাগলামি হয়!”
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট অনেকটাই ব্যাটসম্যানের দিকে ঝুঁকে। তবে বিশ্বের অন্যতম সফল বোলার হিসেবে লি মনে করেন, কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে বোলারদেরও যথেষ্ট অস্ত্র রয়েছে। ‘ডেথ’ ওভারে বোলারদের কাছে যেমন সবচেয়ে বিষাক্ত অস্ত্র ইয়র্কার। “আমার মনে হয় ডেথ ওভারে একজন ব্যাটসম্যানের পক্ষে ইয়র্কারের মোকাবিলা করা বেশ কঠিন। বিশেষ করে স্টাম্পের নীচের দিকে যদি বল করা যায়, তা হলে বিশ্বের বড়-বড় ব্যাটসম্যানদেরও অসুবিধে হবে,” বলেছেন লি। তাঁর আরও ব্যাখ্যা, “নিখুঁত একটা ইয়র্কার করতে পারলে লড়াইয়ের নব্বই শতাংশ জিতে যাওয়া নিশ্চিত। টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটসম্যানরা নিজেদের স্ট্রোকপ্লে নিয়ে অনেক বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। তার বিরুদ্ধে ইয়র্কারই বোলারদের সেরা অস্ত্র।”
ভারতে প্রতিষ্ঠিত নিজের চ্যারিটি ফাউন্ডেশন নিয়ে কথা বলতে গিয়েও উচ্ছ্বসিত লি।“অবহেলিত বাচ্চাদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করছি। ফাউন্ডেশনের জন্য এর মধ্যেই ৭৫ হাজার ডলার তোলা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়াতেও আমি শিশু হাসপাতাল নিয়ে অনেক কাজ করি,” বলে লি যোগ করেছেন, “ভারত নিয়ে সব সময়ই আমার একটা উৎসাহ ছিল। এখানকার মানুষের কাছ থেকে আমি এত ভালবাসা পেয়েছি।” |