অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিষদের দাবিতে এ বার আন্দোলনে নামল বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন। আজ উপত্যকার তিন জেলা সদরে জেলাশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করা হয়। পরে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের উদ্দেশে স্মারকপত্র পাঠান তাঁরা।
বরাক উপত্যকার সার্বিক উন্নতির আশায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিষদ গঠনের জন্য প্রথম দাবি ওঠে ২০০৫ সালে। বহুভাষিক সমন্বয় সমিতি গঠন, দফায় দফায় নাগরিক সম্মেলন, সভা-সমিতির মাধ্যমে জনমত গঠন ইত্যাদি কাজই এত দিন হয়েছে। আজ অবস্থান ধর্মঘটের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে আন্দোলন। বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কাছাড় জেলা সমিতির সভাপতি তৈমুর রাজা চৌধুরীর কথায়, দাবি আদায় না-হওয়া পর্যন্ত তা পর্যায়ক্রমে চলতে থাকবে। তিনি বলেন, ক’দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নাগরিক সম্মেলন ডাকা হবে। সর্বস্তরের মানুষের মতামত নিয়ে পরবর্তী আন্দোলনসূচি চূড়ান্ত করা হবে।
বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের নেতাদের বক্তব্য, এই অঞ্চলের উন্নতির জন্য চাই নিজের হাতে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার রূপায়ণ। কেন্দ্রীয় বরাদ্দ সরাসরি উপত্যকায় চান তাঁরা। রাজ্য সরকারের কাছে মাধ্যমে তা আসায় এখানে উন্নয়ন থমকে পড়ছে বলে তাঁদের দাবি। বিদর্ভের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সেখানেও একই ধরনের অভিযোগ ছিল। অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিষদ গঠনের মধ্য দিয়ে এখন এলাকাটি উন্নতির মুখ দেখছে। সংগঠনটির দাবি, বরাকেও বিদর্ভ মডেলে পরিষদ গঠন করা হোক।
বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের এই আন্দোলনে আরও দুটি দাবি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সেগুলি হল, ভারত-বাংলাদেশ ট্রানজিট রুটে রেলপথে মহিশাসন ও সড়কপথে সুতারকান্দিকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং কেন্দ্র-আলফা শান্তি আলোচনায় বরাকের স্বার্থ সুরক্ষা। সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরুণ দাসের আশঙ্কা, কেন্দ্র-আলফা শান্তিচুক্তিতে অসমকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বরাক উপত্যকার মানুষের ভাগ্য বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। কাশ্মীরের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে অসমে। তখন বরাকবাসীর অস্তিত্বের সঙ্কট দেখা দিতে পারে। জমি ক্রয়-বিক্রয় থেকে শুরু করে সব দিকেই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির আশঙ্কাও তাঁরা করছেন। তাই শান্তি আলোচনায় বরাকের প্রতিনিধিত্বের জন্য অনেক দিন থেকে দাবি করছে সংগঠনটি। |