বিরোধী ও শরিকদের পর কেন্দ্রের প্রভাবশালী মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনিও এ বার পেট্রোলের দাম বাড়ানোর কড়া সমালোচনা করে বসলেন। তেলের দাম নিয়ে সরকারের মধ্যেই যে স্পষ্ট দ্বিমত রয়েছে, তা প্রকাশ্যে চলে আসায় স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তি বেড়েছে কংগ্রেসের। সরকারের ভিতরে-বাইরে সমালোচনার মুখে পড়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকেছেন ৪ জুন। দল ও সরকারের তরফে যাতে আমজনতার কাছে অভিন্ন বার্তা যায়, সেই লক্ষ্যেই এই বৈঠক।
পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী জয়পাল রেড্ডি বা অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় বলে যাচ্ছেন, পেট্রোলের দাম সরকার নিয়ন্ত্রণ করে না। তবে টাকার দাম তলানিতে নেমে যাওয়ায় তেল সংস্থাগুলির হাতে দাম বাড়ানো ছাড়া অন্য পথ ছিল না। কার্যত, সেই যুক্তি খারিজ করে দিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি আজ তেল সংস্থাগুলির সমালোচনা করেছেন। তাঁর কথায়, “পেট্রোলের দাম এক লাফে এতটা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আদৌ ঠিক নয়। এমন পদক্ষেপ করার আগে তেল সংস্থাগুলির আরও মাত্রাজ্ঞানের পরিচয় দেওয়া উচিত ছিল।” |
কেরলের দক্ষিণ প্রান্তে নেইয়াতিঙ্কর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে শনিবার। সেখানেই এক নির্বাচনী সভায় এই কথা বলেন অ্যান্টনি। মানুষকে আশ্বস্ত করতে এ-ও জানান যে, রান্নার গ্যাস ও ডিজেলের দাম বাড়ানোর কথা ভাবছে না সরকার।
এমনিতেই পেট্রোলের বর্ধিত দাম (কিছুটা হলেও) কমিয়ে আনার জন্য চাপ রয়েছে সরকারের উপরে। এর মধ্যে সরকারেরই এক-এক জন আবার এক-এক রকম মন্তব্য করছেন এই প্রসঙ্গে। সরকারের প্রধানতম শরিক তৃণমূল তো সরাসরি পথে নেমেই প্রতিবাদ করেছে মূল্যবৃদ্ধির। যে কারণে বামেরা এবং কংগ্রেসের কিছু নেতা-নেত্রীও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ আবার গত ক’দিন ধরে প্রণববাবুর সঙ্গে এক সুরে সওয়াল করে যাচ্ছেন, কঠোর আর্থিক সিদ্ধান্তের পক্ষে। বলে যাচ্ছেন ভর্তুকি তুলে দেওয়ার কথা। তাঁর মতে, ভর্তুকি এক ‘বিকৃতি’। এরই মধ্যে আজ আবার ঠিক উল্টো অবস্থান নিলেন দলের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা।
কার্যত অ্যান্টনির মন্তব্যে সরকার ও কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমজনতার কাছে এতে একটা বিভ্রান্তিকর বার্তা যাচ্ছে বলে মনে করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতেই ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে একটি প্রস্তাব নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যাতে বলা হতে পারে, সব ক ’টি দল ও রাজ্য যেন রাজনৈতিক ভাবনার ঊর্ধ্বে উঠে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে। কারণ বিশ্বের আর্থিক সঙ্কটের থেকে ভারত বিচ্ছিন্ন নয়। এবং দেশের আর্থিক পরিস্থিতির জন্য বর্তমান সরকারকে দায়ী করাটাও অনুচিত। |