মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলনে নামার জন্য পশ্চিমবঙ্গের নেতাদের নির্দেশ দিলেন বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ী।
সম্প্রতি একটি জনমত সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থন উল্লেখযোগ্য হারে কমতে শুরু করেছে। সেই তুলনায় বামেদের সমর্থন বেড়েছে যৎসামান্য। অর্থাৎ রাজ্যে মানুষের একটা বড় অংশ দ্বিধাগ্রস্ত। জনসমর্থনের ক্ষেত্রে একটা ‘শূন্যতা’ সৃষ্টি হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেই শূন্যতা ভরানোর সুযোগ রয়েছে বিজেপির। গডকড়ী তাই পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের পাশাপাশি মমতার বিরুদ্ধেও জোরদার আন্দোলনে নামার নির্দেশ দিয়েছেন দলের সভাপতি রাহুল সিংহ ও অন্য নেতাদের।
|
রাহুল সিংহ |
|
নিতিন গডকড়ী |
গডকড়ী বলেন, “লোকসভা নির্বাচনে দিল্লিতে ক্ষমতায় আসতে হলে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে সমর্থন বাড়াতে হবে। গরিব, দলিত, আদিবাসী-সহ সংখ্যালঘুদেরও মন জয় করতে হবে।” গডকড়ীর নির্দেশে মুম্বইয়ে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের পরই জেলা সফরে বেরিয়েছেন রাহুল সিংহ। বর্ধমান, নদিয়া, শিলিগুড়ি সফরের পর ৩১ মে বন্ধের দিনে কোচবিহারে থাকবেন তিনি। বন্ধের দিন কাজে যোগ দিতে রাজ্য সরকার কঠোর নির্দেশ জারি করেছে। কিন্তু লালকৃষ্ণ আডবাণী-অরুণ জেটলিদের সঙ্গে পরামর্শ করে রাহুল সিংহরা রাজ্যে বন্ধ সর্বাত্মক করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। যদিও আডবাণীর পরামর্শ, “বন্ধ যেন সর্বার্থে শান্তিপূর্ণ হয়। বন্ধের নামে হিংসা বর্জন করতেই হবে।”
রাহুল সিংহ মঙ্গলবার বলেন, “রাজ্যের বেহাল আর্থিক অবস্থার কথা বলে প্রতি মুহূর্তে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে মমতা কেন্দ্রের দ্বারস্থ হন। অথচ সরকারের বর্ষপূর্তি উদ্যাপন থেকে শুরু করে আজ আইপিএল উদ্যাপন, কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ অপচয় করছে সরকার। আত্মঘাতী কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে সরকারের পয়সা থাকে না, অথচ অন্য ক্ষেত্রে বিপুল অর্থ ওড়ানো হচ্ছে।” দিল্লিতে বিজেপির মুখপাত্র নির্মলা সীতারামনও বলেন, “রাজ্যের আর্থিক প্যাকেজের জন্য মমতা দিল্লিতে দরবার করেন। আশা করি আইপিএল নিয়ে এই বিপুল ব্যয়বহুল উদ্যাপনের সময়েও তিনি রাজ্যের আর্থিক সঙ্কটের বিষয়টি মাথায় রাখবেন।”
‘সাম্প্রদায়িক’ তকমা ঝেড়ে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘুদের মন জয়ের চেষ্টাও করছে বিজেপি। ‘ইমাম-ভাতা’র পরিবর্তে তাই ‘বেকার-ভাতা’ দেওয়ার দাবি তুলছে রাজ্য বিজেপি। পুরোহিতদের ভাতা দেওয়ার দাবিও তারা আপাতত তুলছে না। তার বদলে মুসলিমদের দিয়েই ‘ইমাম-ভাতা’র বিরোধিতা করানো হচ্ছে। সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে রাজ্যে তৃণমূল ও সিপিএম এই বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখায় বিজেপির বাড়তি সুবিধা হয়েছে। রাহুল সিংহ বলেন, “বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যরাও এক বার সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষণের চেষ্টা করেছিলেন। এখন মমতা ফের চেষ্টা করছেন সেটিকে নতুন ভাবে আনার। আমরা এর বিরোধিতা করছি। বিষয়টি নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভ রয়েছে, জেলায় জেলায় তার প্রতিফলন ঘটছে।” |