মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে শাহরুখ বাহিনী তখনও ঢোকেনি ইডেনে। গ্যালারিতে চোখ বুলিয়ে এক সিএবি-কর্তা বলছিলেন, “এটা বিকেল পাঁচটায় হলে তো লোক ধরাতে দু’টো ইডেনের দরকার পড়ত!”
বাস্তবিক, শাহরুখরা ঢোকার পরেও ইডেনের বাইরে দাঁড়িয়ে কয়েক হাজার লোক। তাঁদেরও গ্যালারিতে ডেকে নিতে পুলিশকে বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রোদের রক্তচোখের পরোয়া না করে শাহরুখ-সহ টিম কেকেআর-কে এত কাছ থেকে দেখার সুযোগটা আজ সত্যিই লুফে নিয়েছিল কলকাতা। কিংবা বলা ভাল, গোটা বাংলা। বর্ধমানের কলেজপড়ুয়া জয়ন্ত-সুহাসদের সঙ্গে রাজাবাজারের সদ্য-কিশোর মণীশ-অভিজিৎরা তাই এই প্রথম ইডেনের গেট পেরোলেন। মানিকতলার মা-মেয়ে সাবিত্রী দাস ও রঞ্জিতা দাসও আগে শুধু টিভিতেই ক্রিকেট-মাঠ দেখেছেন। সেক্টর ফাইভের পেশাদার তিথি সান্যাল-রিঙ্কি ভট্টাচার্যও কাজের দিনে ইডেনের জন্য সময় খুঁজে নিয়েছেন। এ দিন ওঁরা সকলেই গ্যালারির বেগুনি-সোনালি ঢেউয়ে মিশে গেলেন। |
সেই ঢেউটাই ইডেনের শিল্পীদের গলায় ‘আল্লা মেঘ দে, পানি দে’ শুনে বিশাল ছক্কার আমেজে ফেটে পড়ল হাততালিতে। আবার একটু পরে বলিউডের ডনকে নাচাতে বাংলা ব্যান্ড ধরল, ‘সোহাগ চাঁদ বদনি।’ শাহরুখ, জুহি, সাকিব, লক্ষ্মী, আবদুল্লা, ভাটিয়ারা আর স্থির থাকেন কী করে! প্রবল গরমে টালিগঞ্জের নায়ক-নায়িকাদের কাউকে কাউকে দেখে তখন ‘ওয়েট শার্ট কনটেস্ট’ চলছে বলে মনে হচ্ছিল!
পরে আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলার মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। অল্প কয়েক ঘণ্টার নোটিসে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে এসে তাঁরা যে ভাবে একে সার্থক ও সুন্দর করে তুলেছেন এবং সুন্দর ভাবে ফিরে গিয়েছেন, তাতে আমি তাঁদের বিশেষ ধন্যবাদ দিচ্ছি। এটাই আমাদের সংস্কৃতি।
মার্সিডিজের জানলায় আধখানা শরীর বার করে হাত নাড়তে নাড়তে ‘ডন’-এর প্রস্থানের পরেও আবেগে ইডেনের সবুজে গড়াগড়ি খেয়েছে জনতা। |