ঘরে ঘরে ফ্রিজ, কদরহীন কুঁজো
রেফ্রিজারেটরের বিক্রি বাড়ায় কুঁজো শিল্পীদের মাথায় হাত পড়েছে। প্রচন্ড গরম পড়লেও মাটির কুঁজো বিক্রি করতে না পেরে ইংরেজবাজারের শোভানগরের পালপাড়ার কুমোরেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পরিস্থিতি এমন যে তাঁরা আর কুঁজো বানাবেন না বলেও ঠিক করেছেন। পরিবর্তে মাটির গ্লাস, হাড়ি বানাবেন। এদিকে ঘর ও উঠোন ভর্তি তৈরি কুঁজো কী ভাবে বিক্রি করবেন তা ভেবে চিন্তায় পড়েছেন। শোভানগরের মদন মণ্ডল, ফেকন মন্ডলদের কথায়, “ফ্রিজের বিক্রির বেড়ে যাওয়ায় এখন ঠান্ডা জল খাওয়ার জন্য কুঁজো বা কলসির বিক্রি কমেছে। প্রতি বছর এই সময়ে আমাদের এলাকা থেকে ১০ হাজারেরও বেশি কুঁজো বিক্রি হত। সেখানে এবার ৫০০ বেশি কুঁজো বিক্রি করতে পারিনি। প্রচুর কুঁজো তৈরি করে বসে আছি। কী হবে ভগবান জানে।” ওই কুমোরদের হিসাব অনুসারে, গরমে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ কুঁজো বিক্রি হত। ১২ টাকা থেকে ১৫ টাকায় এক একটি কুঁজো বিক্রি হয়।
ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়
শহুরে ছোঁয়ায় সবাই বেশি দাম দিয়ে ফ্রিজ কিনছেন। ফ্রিজের বিক্রি কি হারে বেড়েছে মালদহ জেলা ইন্ডাস্ট্রিয়াল মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক উত্তম সাহার কথাতেই স্পষ্ট। তিনি বলেন, “এপ্রিল মাস থেকে জেলায় ফ্রিজের বিক্রি ৪০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।” মালদহের শোভানগরের মাটির কুঁজো বিখ্যাত। অন্যান্য মাটির কুঁজোর সঙ্গে শোভানগরের কুজোর পার্থক্য রয়েছে। এখানকার কুঁজো তৈরির সময় মাটির সঙ্গে বালি মেশানো থাকায় কুজোর জল অনেকক্ষণ ঠান্ডা থাকে। এই কুঁজোর গলা সরু ও লম্বা হয়। পুরো কুঁজোটাই ছাঁচে তৈরি হয়। প্রথমে একটি ছাঁচে কুঁজোর নিচের অংশ তৈরি করা হয়। পরে উপরের অংশ তৈরি করা হয়। এরপর দুইটি অংশ জুড়ে দিয়ে লম্বা ও সরু গলা আকৃতির কুঁজো তৈরি করে কাঠে কয়লার আগুনের নিচে ফেলে রাখা হয়। কুমোরেরা জানান, একটা কুঁজো তৈরি করতে একঘন্টা সময় লাগে। এক একদিনে একজন কুমোর ১৫ থেকে ১৬টি কুঁজো তৈরি করতে পারে। শোভানগরের পালপাড়ার ১৫-১৬টি পরিবার প্রতিবছর ১০ থেকে ১২ হাজার মাটির কুঁজো তৈরি করেন। এই কুঁজোর আগে বাংলাদেশে ব্যাপক চাহিদা ছিল। কিন্তু সীমান্তের কড়াকড়ির জন্য এখন বাংলাদেশে কুঁজো যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার পরেও চাহিদা কম ছিল না। মানিকচক, চাঁচল, গাজল, হরিশ্চন্দ্রপুর, রতুয়া, কালিয়াচকে ব্যাপক চাহিদা ছিল। সেই চাহিদা ও গরমের আঁচ পেয়ে এবছর পালপাড়ার কুমোরেরা ১২ হাজারের বেশি মাটিরকুঁজো তৈরি করেন। কিন্তু খদ্দের না মেলায় মাথা হাত পড়েছে শোভানগরের পালপাড়ার শিল্পীদের। প্রতিটি পাল বাড়িতেই ঘর এবং উঠোনে কুঁজো ডাঁই হয়ে পড়ে রয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.