কিছু স্নান-কমন কথা
রুভূমির মধ্য দিয়ে ডেজার্ট ট্রেকিং করছেন। মনে ভাবছেন, কোনও পাঁচতারার বাথটাবে ডুবে আছেন। এতে কষ্টটা অনেক কমে যায়। ঠিক যেমন মেট্রো স্টেশনে দাঁড়িয়ে ভাবি, এক্ষুণি যদি এসি ট্রেনটা এসে যায় কী ভালই না হয়। এই সুকৌশলে গরমের সঙ্গে সমঝোতাটা মধ্যবিত্তের ভালই চলে।
কৃষ্ণের জলকেলি, মহেঞ্জোদারোয় জনসাধারণের স্নানাগার, ক্লিয়োপাত্রার গাধার দুধে স্নান এমন কত ফ্যান্টাসি সকলের মনেই থাকে। তো, ফ্যান্টাসির অভাবে শাওয়ার। গরম কালে বিভিন্ন শাওয়ারের প্রয়োজন স্বভাবতই বৃদ্ধি পায়। এই রকমই কতগুলি বিশেষ স্নানের সন্ধান দেওয়া যাক, এই আগুনে একটু সুবিধে হতে পারে।

পুদিনা স্নান
শরীরকে ঠান্ডা রাখার একটি বিশেষ গুণ পুদিনার মধ্যে আছে। স্নানের কিছু ক্ষণ আগে জলের মধ্যে যদি কিছু পুদিনা পাতা ফেলে রাখেন এবং সেই জলে স্নান করেন, তবে খুব ভাল হয়। এ ছাড়া পুদিনা তেল কয়েক ফোঁটা জলের মধ্যে দিয়ে রাখতে পারেন। পুদিনা ত্বকের যে কোনও সংক্রমণকে ঠেকাতে অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে। পুদিনার মধ্যে অ্যান্টিসেপ্টিকের সব গুণ রয়েছে। যাঁদের একটু সময় আছে, তাঁরা শুকনো পুদিনা পাতা ফুটিয়ে পুদিনার জল তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিন। এক বালতি জলে দশ থেকে পনেরো চামচ পুদিনা-জল মিশিয়ে স্নান করুন। শরীরের যে অংশগুলি বেশি ঘামে, সেগুলো তোয়ালে দিয়ে মুছবেন না। একটু সময় দিয়ে শুকিয়ে নিন। ভাল ফল পাবেন। গরম কালে বিশ্রী দুর্গন্ধের থেকে রেহাই পাবেন। ঘামাচি, অ্যালার্জিও হবে না। পুদিনার অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট গুণ অসামান্য। পুদিনাবাটা রক্তক্ষরণ বন্ধ করে।

গোলাপি স্নান
গোলাপজলে স্নানের রেওয়াজ বহু প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে। হামাম-এ নবাব গোলাপজলে শুয়ে আছেন আর পাপড়িগুলি ভেসে ভেসে আদর করে যাচ্ছে, এই ধরনের নবাবি জীবন-দৃশ্যের সঙ্গে আমরা বেশ পরিচিত। বাথ টাবের জলে সারা রাত গোলাপের পাপড়িগুলি ভিজিয়ে রাখুন। তবে পাপড়িগুলি সমান ভাবে ছড়াবেন। এক জায়গায় বেশি, অন্য জায়গাটা ফাঁকা, এমন যেন না থাকে। সকালে কয়েক ফোঁটা রোজ এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে দিন। পঁয়তাল্লিশ মিনিট পৃথিবীটা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখুন। সমস্ত আনন্দটা উপভোগ করুন। দেখবেন আরামের পারদ চড়বে। গোলাপের জলে স্নান করলে আপনার শরীরের সমস্ত মৃতকোষ দূর হয়ে যাবে এবং ট্যান ভাবটিও কেটে যাবে। আর আপনি হয়ে উঠবেন পেলব ও তরতাজা। গোলাপের মতোই।

মধুময় স্নান
মধুর সহজাত ময়েশ্চারাইজিং ক্ষমতা অপরিসীম। আপনিও যদি ময়েশ্চারাইজারের পরিবর্তে কয়েক ফোঁটা মধু মাখতে পারেন, আপনার ত্বক উজ্জ্বল থাকবে সারা দিন, এবং খসখসে বা টান ভাবও চলে যাবে। প্রথমে একটি পাত্রে কিছুটা ঠান্ডা জল, পরিমাণ মতো মধু এবং গোলাপের নির্যাস (রোজ এসেন্স) এক সঙ্গে মিশিয়ে তিন ঘণ্টা রেখে দিন। স্নান করার পর মধুমিশ্রিত জল দিয়ে হালকা মাসাজ করে নিন সমস্ত শরীরে। এর পর ঠান্ডা জলে পুনরায় স্নান করে নিন। এই ভাবে আপনার শরীরের সমস্ত নোংরা, ময়লা, দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে। মৃতকোষগুলি ধুয়ে যাওয়ার ফলে সমস্ত শরীরের ত্বক উজ্জ্বল হবে। আপনি ক্রমশ আপনার শৈশবের কোমল ত্বক ফিরে পাবেন।

দুধস্নান
দু’জনের দুধ স্নানের কথা আমরা জানি। ক্লিয়োপাত্রা এবং শিব। এর থেকেই বোঝা যায়, দু’জনেই ত্বক সম্বন্ধে কতটা সচেতন ছিলেন। দুধের ক্লেনজিং ক্ষমতা, অর্থাৎ ত্বক পরিষ্কার রাখার গুণ অসামান্য। এক দিন অন্তর এক দিন উট এবং গাধার দুধ এই ভাবে স্নানের পদ্ধতিটি পরিচালিত হত ক্লিয়োপাত্রার। প্রাচীন কালে রাজা-মহারাজা ছাড়াও সাধারণ বাড়িতেও দুধ দিয়ে স্নান করার নিয়ম ছিল। দুধের সঙ্গে সমপরিমাণে জল, মধু, ল্যাভেন্ডার, এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে রাখতে হবে। এতে শরীরের মৃতকোষ, জমে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড সমস্ত চলে যাবে। আপনি যদি দুধ পছন্দ না করেন, তবে জলের মধ্যে এক কাপ মিল্ক পাউডার মিশিয়ে বাথটবে রেখে দিন। দুধস্নান গরম কালে খুব উপকারী। শরীর ও মন দুইই ভাল থাকে এবং মানসিক আরামের একটি চমৎকার অবকাশ তৈরি হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.