নিজস্ব সংবাদদাতা • ধূপগুড়ি |
কয়েক দফা আলোচনার পরেও আসন রফা নিয়ে ঐকমত্য না-হওয়ায় ধূপগুড়ি পুরসভার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার সন্ধ্যায় ধূপগুড়ি তৃণমূল অফিসে গিয়ে ওই তালিকা ঘোষণা করেন দলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তবে ৪টি আসন কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে রেখেই ওই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে বলে গৌতমবাবু দাবি করেছেন। প্রার্থী তালিকা ঘোষণড়ার পরে তৃণমূলের একটি শিবিরের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দেখানো হয়। কিছুক্ষণ দলীয় অফিসে হইচই চলে। পরে নেতাদের হস্ত৭েপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এলাকার তৃণমূল নেতা কমলেশ দত্ত বলেন, “আমাদের দলটি গনতান্ত্রিক। তাই সামান্য তর্ক-বিতর্ক হতে পারে। সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে” প্রসঙ্গত, ধূপগুড়ি পুরসভার মোট আসন ১৬টি। তার মধ্যে ১২টি আসনের প্রার্থীদের নাম জানিয়েছে তৃণমূল। দলীয় সূত্রের খবর, আলোচনার সময়ে কংগ্রেসের তরফে বারেবারেই ৫টি আসন চাওয়া হয়। |
ধূপগুড়িতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। ছবি: রাজকুমার মোদক |
কিন্তু, তৃণমূলের পক্ষ থেকে কংগ্রেসকে ৩টির বেশি আসন দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানানো হয়। শেষ পর্যন্ত তৃণমূল প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলেও ৪টি আসন ছেড়ে রেখে জোট গড়ার জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা চালাবে বলে জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমরা চাই জোট হোক। সে জন্য কংগ্রেসের জেলা সভাপতিকে তিনটি আসন ছাড়ার কথা বলি। তিনি চারটি আসন চেয়েছেন। আশা করি তারা তিনটি আসনে রাজি হবেন। যাই হোক, রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে তাই আলোচনা করে ৪ টি আসন ছেড়ে আপাতত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছি। আশা করি কংগ্রেস পরিবর্তনকামী মানুষের ইচ্ছেকে মর্যাদা দিয়ে জোটবদ্ধ ভাবে লড়ার কথা ভাববে।” গত পুরভোটে ধূপগুড়িতে অলিখিত ‘মহাজোট’ হয়। তাতে কংগ্রেস-তৃণমূল ছাড়াও বিজেপি সামিল হয়েছিল। ধূপগুড়ি পুরসভার ৯ টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল। ২ টি আসন কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। ৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজেপি। বামেরা ১১টি আসনে জয়ী হয়ে বোর্ড দখল করে। তৃণমূল ৩টি আসন, কংগ্রেস ও বিজেপি ১টি করে আসনে জয়ী হয়েছিল। জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসু বলেন, “গত পুরভোটে ধূপগুড়িতে অলিখিত মহাজোট হয়। এবার জোটে বিজেপি নেই। সে জন্য কংগ্রেসের তরফে ৬টি আসন চাওয়া হয়। তৃণমূল নেতৃত্ব কংগ্রেসকে ২টির বেশি আসন দিতে চাননি। তাই ঠিক হয়েছে, কংগ্রেস ধূপগুড়িতে একক শক্তিতেই লড়বে।” তবে মোহনবাবুর দাবি, “তৃণমূল অনড় মনোভাব না-দেখালে জোট হবে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অবশ্য জানান, গতবারের তুলনায় পুরভোটের প্রেক্ষাপট পাল্টেছে। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরক নেতৃত্বে রাজ্যে পরিবর্তন এসেছে। তাঁর নেতৃত্বে আস্থা রাখছেন মানুষ। ধূপগুড়ি কোনও বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। লাগোয়া ফালাকাটা বিধানসভা আমরা পেয়েছি। এবার ধূপগুড়ি পুরসভাও দখল করব।” তবে গৌতমবাবু জানান, কংগ্রেস জেদাজেদি ছেড়ে আলোচনায় সাড়া দিলে জোট হিসেবে ধূপগুড়িতে লড়তে অসুবিধে হবে না। এলাকার কংগ্রেস নেতাকর্মীরা অনেকেই প্রকাশ্যে জোটের পক্ষে সওয়াল করছেন। কংগ্রেসের ধূপগুড়ি টাউন কমিটি সভাপতি অজয় পাল বলেন, “আমরা মনেপ্রাণে চাইছি, জোট হোক। তবে গতবারের তুলনায় বেশি আসন চাইছি।” পক্ষান্তরে বামেরা প্রচারে নেমে পড়েছে। সিপিএম এবার ধূপগুড়িতে ফরওয়ার্ড ব্লককে একটি আসন ছেড়েছে। সিপিএম এর ধূপগুড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদক তুষার বসু বলেন, “আমরা ফের পুরসভা দখল করব।” |