ঝড়ের পরে রাতভর জাগলেন জেলাশাসক
ড় পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে ভোর সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ‘অফিস’ করলেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র। জেলাশাসকের বাসভবনের অফিসেই রাতভর কন্ট্রোল রুম খুলে বিভিন্ন আধিকারিকদের সঙ্গে সমণ্বয়ের কাজ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নটা নাগাদ জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে শুরু হয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। জেলার বিভিন্ন ব্লকে বাড়িঘর তছনছ হওয়া থেকে শুরু করে গাছ পড়ে জাতীয় এবং রাজ্য সড়ক অন্তত ৫০টি জায়গায় অবরুদ্ধ হয়ে যায়। সাধারণ মানুষের জখম হওয়ার খবর আসতে থাকে রাত থেকেই। ঝড়ের দাপটে গাছ পড়ে নিউ জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার প্যাসেঞ্জার ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ বেড়ে যায় জেলা প্রশাসনের। একের পর এক খবর আসতে থাকায় জেলাশাসকের বাসভবনেই খুলে যায় জরুরি কন্ট্রোল রুম।
লিচুপাখুরিতে ঝড়-বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে বিধায়ক শঙ্কর মালাকার। ছবি তুলেছেন কিশোর সাহা।
জেলা পুলিশ সুপার সুগত সেনও রাতের মধ্যেই সব রিপোর্ট জানানোর নির্দেশ দেন ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার থানার ওসি, অফিসারদের। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝড়ের তাণ্ডব থামার পরে ক্ষয়ক্ষতি এবং একের পর এক রাস্তা আটকে যাওয়ার খবর আসতে শুরু করার পরেই একটি টিম তৈরি করে নেওয়া হয়। নিজের অফিসে বসে বিভিন্ন এলাকার খবর নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিডিওদের নির্দেশ দিতে থাকেন জেলাশাসক। প্রতিটি ব্লকে দুটি করে দল গড়ে দেওয়া হয়। একটি দল ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি বা এলাকা থেকে সাধারণ বাসিন্দাদের উদ্ধার কাজ শুরু করে। অন্য দলটি জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কে পড়ে যাওয়া গাছ সরানোর কাজে নামে। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত জেলা জুড়ে অন্তত দেড় হাজার সাধারণ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “ডিএম-এসপি নিজেদের মধ্যে ঘনঘন যোগাযোগ করতে থাকায় ব্লকের আধিকারিক এবং থানা স্তরের পুলিশ অফিসারদের মধ্যে সমণ্বয় গড়ে কাজের সুবিধে হয়েছে।” মাদারিহাটের কাছে লাইনচ্যুত হওয়া প্যাসেঞ্জার ট্রেনের যাত্রীদের উদ্ধার করে আলিপুরদুয়ারে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে জেলাশাসক রাত একটা নাগাদ ফোন করেন এনবিএসটিসির কোচবিহার ডিপোয়।
জলপাইগুড়িতে রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
জাতীয় সড়কের বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকার বিডিওদের রাস্তা পরিষ্কার করার তদারকির দায়িত্ব দেন জেলাশাসক। জেলাশাসকের নির্দেশ পেয়ে মালবাজার ও মাদারিহাটের বিডিও রাতভর নিজেরাই রাস্তা পরিষ্কারের কাজে নেতৃত্ব দেন। মালবাজারের বিডিও প্রেমবিভাস কাঁসারি বলেন, “জেলাশাসকের সঙ্গে সারা রাত দফায় দফায় টেলিফোনে কথা হয়েছে। বোলবাড়ি থেকে মালবাজার, ওদলাবাড়ির অন্তত ১০টি জায়গায় জাতীয় সড়কে গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। অসংখ্য গাড়ি দু’দিকে দাড়িয়ে থাকে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহায্যে রাতের বেলাতেই সব রাস্তা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে। ভোর পাঁচটা নাগাদ জেলাশাসককে শেষ রিপোর্ট করেছি।” বিডিও থেকে শুরু করে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের নিজেই টেলিফোন করেন জেলাশাসক। শুক্রবার সকালে জেলাশাসক বলেন, “বিডিওরা যেমন কাজ করেছেন, তেমনিই পুলিশও তৎপর ভুমিকা পালন করেছে। পুলিশ সুপারের সঙ্গে রাতভর দফায় দফায় কথা হয়েছে।” মাদারিহাটে ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার পরে আটকে পড়া যাত্রীদের জন্য রাতের বেলায় দোকান খুলে খাবারের ব্যবস্থা করেন বানারহাট থানার আইসি মাধবেন্দু রক্ষিত। মাদারিহাট থানার ওসি পঙ্কজ থাপার নেতৃত্বে পুলিশের যে দলটি গাড়ি নিয়ে উদ্ধারকার্য চালাতে শুরু করে, রাস্তায় গাছ পড়ে থাকায় সেই গাড়িই আটকে পড়ে মুজনাই এলাকায়। হাঁটাপথেই মাদারিহাট স্টেশনে পৌঁছয় পুলিশের দলটি। পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “প্রশাসন এবং পুলিশের মধ্যে ভাল সমন্বয় তৈরি হওয়াতেই রাতভর উদ্ধারকার্য ও পরিস্থিতি মোকাবিলা করা গিয়েছে। জেলাশাসকের সঙ্গে বারবার কথা হয়েছে। বিভিন্ন থানার আইসিও রাতভর কন্ট্রোল রুমে রিপোর্ট করেছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.