মনোনয়নেই স্পষ্ট বিভাজনের ইঙ্গিত
রাজ্যের ছ’টি পুরসভার অধিকাংশতেই শাসক শিবিরে যে জোট যে হচ্ছে না, শুক্রবার কংগ্রেস ও তৃণমূলের মনোনয়ন পেশের গতিপ্রকৃতিতে তার স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া গেল। বীরভূমের নলহাটি এবং পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া ও পাঁশকুড়া পুরসভার সব ক’টি আসনেই মনোনয়নপত্র পেশ করেন তৃণমূল প্রার্থীরা। আবার, নদিয়ার ‘কুপার্স ক্যাম্প নোটিফায়েড এরিয়া’য় ৯০ শতাংশ আসনেই মনোনয়নপত্র পেশ করেছে কংগ্রেস।
জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি পুরসভায় চারটি আসন কংগ্রেসকে ছেড়ে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে তৃণমূল। শেষপর্যন্ত কংগ্রেস তা মেনে নেয় কি না, সেটাই দেখার।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন আগামী সোমবার। দেখার এ-ও যে, তার মধ্যে নলহাটি, হলদিয়া, পাঁশকুড়া ও কুপার্স ক্যাম্পে তৃণমূলের বিপক্ষে কংগ্রেস বা কংগ্রেসের বিপক্ষে তৃণমূল প্রার্থী দেয় কি না। প্রার্থী দিলেও জোটের ছবি শেষ পর্যন্ত স্পষ্ট হবে আগামী শুক্রবার, ১১ তারিখ, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে। দুর্গাপুরে অবশ্য তাঁরা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধেই লড়বেন বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
হলদিয়ার ১৭টি আসনেই তৃণমূল মনোনয়ন পেশ করলেও তাঁরাই ‘চূড়ান্ত’ প্রার্থী কি না, তা নিয়ে এখনও ‘সংশয়’ রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেনের বক্তব্য, “দলীয় ভাবে চূড়ান্ত প্রার্থী-তালিকা জানানো হবে সোমবার।” সব আসনে প্রার্থী দিচ্ছেন জানিয়েও ‘জোটের স্বার্থে’ কংগ্রেসকে দু’টি ওয়ার্ড ছাড়া হতে পারে বলেও তাঁর ইঙ্গিত।
পাঁশকুড়ায় মোট ওয়ার্ড ১৭টি তৃণমূলের পক্ষে ১৮ জন মনোনয় জমা দিয়েছেন। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের দু’জন মনোনয়ন জমা দিলেও পরে এক জনের নাম প্রত্যাহার করা হবে বলে দলীয় নেতৃত্ব জানিয়েছেন। তমলুকের বিধায়ক তথা রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র জানান, এখনও তিনটি ওয়ার্ড কংগ্রেসকে ছেড়ে ‘জোটের দরজা’ খোলা রাখার চেষ্টা হচ্ছে। কংগ্রেস চারটি ওয়ার্ড দাবি করেছে। জোট করেই গত পাঁচ বছর পাঁশকুড়ার পুরবোর্ড চালাচ্ছে কংগ্রেস-তৃণমূল।
আসনরফা নিয়ে টানাপোড়েনে জোট নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ধূপগুড়িতেও। এ দিন সন্ধ্যায় দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। মোট ১৬টি আসনের মধ্যে চারটি কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গৌতমবাবু বলেন, “রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে চারটি আসন ছেড়ে তালিকা ঘোষণা করেছি। আশা করি, কংগ্রেস মানুষের ইচ্ছার মর্যাদা দিয়ে জোটবদ্ধ ভাবে লড়ার কথা ভাববে।”
নলহাটি পুরসভার ১৫টি আসনেও মনোনয়ন পেশ করেছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। পুরভোটের মুখে নলহাটির একটি রেল প্রকল্পের শিলান্যাস ঘিরে এমনিতেই শাসকজোটের দুই শরিকের সম্পর্ক ‘তিক্ত’ হয়েছে। মনোয়ন পর্বে তা আরও বাড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে। বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কটাক্ষ, “প্রণববাবুর ছেলে, কংগ্রেস বিধায়ক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় যদি আমাদের দলের পুরপ্রধান, সাংসদ, মন্ত্রী বা জেলা চেয়ারম্যানকে জোটের কথা বলতেন, তা হলে দু’তিনটে আসন হয়তো ছেড়ে দিতাম!”
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মির পাল্টা বক্তব্য, “কংগ্রেস ভিক্ষার দান নিয়ে পুরসভায় লড়াই করবে না! ১৫টি আসনেই সোমবার কংগ্রেস মনোনয়ন জমা দেবে।”
‘কুপার্স ক্যাম্প নোটিফায়েড এরিয়া’য় অবশ্য ১২টি আসনের মধ্যে ১১টিতে এ দিন মনোনয়ন জমা দেন কংগ্রেস প্রার্থীরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন নদিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর সিংহ। তাঁর অভিযোগ, “ওরা (তৃণমূল) জোটের বড় শরিক। অথচ জোট নিয়ে কোনও ভূমিকা নেয়নি। উল্টে কংগ্রেস পরিচালিত বোর্ডের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে।”
বর্তমানে কুপার্সে ক্ষমতায় কংগ্রেসই। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক আবির বিশ্বাস অবশ্য বলেন, “জোট নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। ওটা উচ্চ নেতৃত্বের বিষয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.