অর্থ ফেরতে দীপকের সংস্থাকে চিঠি
এক বছরেও হয়নি লোধা শিশুদের রক্ষণাগার
স্বাস্থ্য দফতরের পর এ বার অনগ্রসর শ্রেণি-কল্যাণ দফতরের ‘কোপে’ পড়ল সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। একটি প্রকল্পে ওই সংস্থাকে দেওয়া অর্থ ফেরত চেয়ে চিঠি পাঠাল সংশ্লিষ্ট দফতর। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, শুক্রবারই ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। যা শুনে সংস্থার অন্যতম সদস্য নন্দদুলাল ভট্টাচার্য বলেন, “চিঠি পেলে অর্থ ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। আর কিছু বলার নেই।” অনগ্রসর শ্রেণি-কল্যাণ দফতরের জেলা আধিকারিক শান্তনু দাস বলেন, “অর্থ বরাদ্দ হলেও সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট প্রকল্পের কাজ হয়নি। তাই অর্থ ফেরত চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।” জানা গিয়েছে, এ ক্ষেত্রে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, চিঠি পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে সুদ-সহ অর্থ ফেরৎ দিতে হবে। প্রশাসনের এই পদক্ষেপ নিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহলেও শোরগোল পড়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, লোধা শিশুদের থাকার জন্য পশ্চিম মেদিনীপুরে সব মিলিয়ে ৭৮টি ‘লোধা শিশু রক্ষণাগার’ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ৬টি সংস্থাকে এই রক্ষণাগার তৈরির বরাত দেওয়া হয়। এক-একটি কেন্দ্র তৈরির জন্য ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। মেদিনীপুরের ‘সেন্টার ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অব হায়ার এডুকেশন’ নামে দীপকবাবুর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ১১টি রক্ষণাগার তৈরির বরাত পায়। দীপকবাবুই সংস্থাটির চেয়ারম্যান। এই সংস্থাই শহর লাগোয়া রাঙামাটিতে একটি বেসরকারি হাসপাতাল ও প্যারামেডিক্যাল কলেজও পরিচালনা করে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরের এক নির্দেশে ওই বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ ও ডায়ালিসিস ইউনিট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে পরিকাঠামোয় গলদ ছিল। যদিও নির্দেশ মতো দু’টি ইউনিট বন্ধ রেখে এখন পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রের দাবি। ইউনিট দু’টি ফের চালু করতে চেয়ে আবেদনও করা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে। এখনও অবশ্য অনুমতি মেলেনি।
তারই মধ্যে ফের ‘বিড়ম্বনায়’ পড়েলেন দীপক সরকার। তাঁর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সূত্রেরই খবর, যে ১১টি কেন্দ্র তৈরির বরাত এসেছিল, তার মধ্যে মাত্র একটি কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। বাকি ১০টির কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য গত বছরের জুলাই মাসে সংস্থাকে অগ্রিম হিসেবে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। সেই অর্থ পড়েই রয়েছে। এই সংস্থা খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার সামরাইপুর, ঘোলাগেড়িয়া, সাঁকোয়া এলাকায় লোধা শিশু রক্ষণাগার তৈরির বরাত পায়। প্রকল্পে প্রতিটি এলাকায় ১৫ ফুট লম্বা ও ১২ ফুট চওড়া একটি ঘর ও বারান্দা তৈরির কথা। ৯০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু কেন প্রায় এক বছরেও কাজ শুরু করা গেল না? সংস্থার বক্তব্য, প্রত্যন্ত গ্রামে সরঞ্জাম পৌঁছনোর ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে আবার ঠিকাদারও বদল করতে হয়। জানা গিয়েছে, কেন সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হল না, তা জানতে চেয়ে জেলা অনগ্রসর শ্রেণি-কল্যাণ দফতর থেকে আগেও এক দফা চিঠি দেওয়া হয়েছিল দীপকবাবুর সংস্থাকে। জবাবে সংস্থার পক্ষ থেকে সমস্যার কথা তুলে ধরে আরও কিছু সময় প্রয়োজন বলে জানানো হয়। সেই সঙ্গে এও জানানো হয়, দফতর চাইলে অর্থ ফেরত দেওয়া হবে।
অনগ্রসর শ্রেণি-কল্যাণ দফতর অবশ্য আর সময় দিতে রাজি হয়নি। তাই শুক্রবারই সংস্থার কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। দফতরের জেলা আধিকারিক বলেন, “বাকি সংস্থাগুলি কাজ শুরু করেছে। কিছু কেন্দ্র তৈরির কাজ শেষও হয়ে গিয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখেই ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছ থেকে অর্থ ফেরত চাওয়া হয়েছে।” সংস্থাটির চেয়ারম্যান দীপক সরকারের বক্তব্য, “চিঠির ব্যাপারে এখনও কিছু জানি না। না জেনে মন্তব্য করব না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.