পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ
সন্দেহের বশে গাছে বেঁধে মারধর বধূকে
স্রেফ সন্দেহের বশে এক মহিলাকে গাছে বেঁধে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠল। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানার সাওড়াবেড়িয়া জালপাই গ্রামের ঘটনা। গ্রামবাসীর মারধরে গুরুতর জখম অনিতা মল্লিক নামে বছর পঁয়তাল্লিশের ওই বধূ তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর বাড়ি হলদিয়ার সুতাহাটা থানার হোড়খালি গ্রামে। সাওড়াবেড়িয়া জালপাই গ্রামের ১০ বাসিন্দার বিরুদ্ধে নন্দকুমার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন অনিতাদেবীর ছেলে। অভিযুক্তেরা সকলেই পলাতক।
এ দিকে, মঙ্গলবার রাতে ঘটনার সময় পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল বলে শুক্রবার জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন অনিতাদেবী নিজে। জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, “পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে।”
জেলা হাসপাতালে ভর্তি পেশায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী অনিতাদেবীর মাথায়, চোখে, হাতে আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট।
হাসপাতালে অনিতাদেবী
নিজস্ব চিত্র।
আতঙ্কিত অনিতাদেবী জানান, গত মঙ্গলবার বিকেলে ঠেকুয়ায় এক আত্মীয়বাড়িতে যাওয়ার জন্য তমলুক শহরের হাসপাতাল মোড়ে টেংরাখালিগামী বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। বাসস্টপে নমিতা মণ্ডল নামে সাওড়াবেড়িয়া জালপাই গ্রামের এক মহিলার সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। দু’জনেই একই বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। আর কেউ ছিল না। পুলিশ সুপারের কাছে দায়ের করা অভিযোগে অনিতাদেবীর দাবি, সেই সময় এক ব্যক্তি বাসস্টপে এসে তাঁদের ‘আচ্ছন্ন করে’ গলা, হাত, কান থেকে সোনার গয়না খুলিয়ে নেয়। বদলে গছিয়ে দিয়ে যায় জাল টাকার বান্ডিল। অনিতাদেবীর অভিযোগ, “বাসে উঠে সম্বিত ফেরায় আমরা দু’জনে কান্নায় ভেঙে পড়ি। আচমকাই নমিতা আমাকে দোষী সাব্যস্ত করে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে এবং জোর করে বাস থেকে নামিয়ে নিজের এলাকায় টেনে নিয়ে যায়।” এর পরেই অনিতাদেবীকে গাছে বেঁধে ওই গ্রামের লোকজন বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। অনিতাদেবী বলেন, “বিকেল ৫টা থেকে অত্যাচার চলে। পুলিশ রাতে একবার গেলেও উদ্ধার না করেই ফিরে যায়। খবর পেয়ে আমার আত্মীয়েরা ঘটনাস্থলে আসে। তাদের কথাও শোনা হয়নি।” অবশেষে ভোররাতে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে। তাঁকে নন্দকুমার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার কারণেই ওই বধূকে উদ্ধারে দেরি হয় বলে অভিযোগ। অনিতাদেবীর স্বামী স্বপন মল্লিক বলেন, “রাতে আমরা ওই গ্রামে গিয়ে দেখি উত্তেজিত কয়েকশো বাসিন্দা অশ্রাব্য ভাষায় হুমকি দিচ্ছে। কয়েক জন পুলিশকর্মী কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। উদ্ধারের কোনও চেষ্টাই করেননি তারা।” সাওড়াবেড়িয়া জালপাই-১ পঞ্চায়েতের প্রধান মানসরঞ্জন হাজরাও বলেন, “পুলিশ সক্রিয় ভূমিকা নিলে ওই মহিলাকে এ ভাবে অত্যাচারিত হতে হত না।” নন্দকুমার থানা থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, প্রথমে পাঁচ জন পুলিশকর্মী গিয়েছিলেন। উত্তেজিত জনতার সঙ্গে তারা পেরে উঠবেন না বুঝতে পেরেই ফিরে আসেন। পরে বিরাট পুলিশবাহিনী গিয়ে বধূকে উদ্ধার করে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.