উত্তর কলকাতা: পাইকপাড়া, ব্যারাকপুর
দুর্ভোগের যাতায়াত
জঞ্জাল-সরণি
প্রশস্ত রাস্তা। কিন্তু তার একটা অংশ জুড়ে জঞ্জালের স্তূপ আর নর্দমার ময়লা। ফলে গাড়ি ও পথচারীদের চলাচলে তীব্র সমস্যা হচ্ছে। এই অবস্থা সোদপুরের সঙ্গে মধ্যমগ্রাম সংযোগকারী রাস্তার ঘোলা বাজার সংলগ্ন এলাকার। অভিযোগ, এই এলাকাটি পানিহাটি পুরসভার মধ্যে পড়ে। পুরসভাকে বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি।
ব্যারাকপুরে উড়ালপুলের কাজ চলার জন্য বিটি রোড, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে ও যশোহর রোড সংযোগকারী সোদপুর থেকে মধ্যমগ্রাম যাওয়ার এই রাস্তাটি এখন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। ঘন জন বসতির মধ্যে দিয়ে যাওয়া এই রাস্তাটি খুবই ব্যস্ত থাকে। রাস্তার দু’দিকেই অসংখ্য দোকানপাট। ফুটপাথ নেই। ফলে পথচারীদেরও রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু সেই রাস্তার একটি অংশের অনেকটা জুড়ে আবর্জনা জমে থাকে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, সমস্যা দীর্ঘ দিনের। পুরসভাকে বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি। জমে থাকা জঞ্জাল থেকে দূষণও ছড়াচ্ছে।
অভিযোগ, জঞ্জাল ফেলার নির্দিষ্ট কোনও ব্যবস্থা পানিহাটি পুরসভা গড়ে তুলতে পারেনি। রামচন্দ্রপুরের ভাগাড়ে জঞ্জাল ফেলা বন্ধ হওয়ার পরে সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে। জঞ্জালের স্তূপ পোড়াতে গিয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় রীতিমতো দমকল ডাকতে হয়েছিল। তা পরেও এই রাস্তায় জঞ্জাল ফেলা বন্ধ হয়নি। রাস্তার ধারে জঞ্জাল ফেলতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের তাড়ায় সাফাইকর্মীদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, জঞ্জাল অপসারণের বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা না নিয়ে পুরসভা খোলা জায়গায় দিনের পরে দিন জঞ্জাল ডাঁই করে রাখছে। জোরে হাওয়া দিলে জঞ্জাল উড়ে যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়ছে। গাড়ি যাওয়ার সঙ্গেও সঙ্গেও জঞ্জাল উড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় স্কুল শিক্ষক অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ক’দিন আগে মোটরসাইকেলে স্কুলে যাওয়ার সময় ঘোলা বাজারের কাছে রাস্তার ধারে জমানো ময়লার স্তূপ থেকে নোংরা উড়ে এসে আমার মুখের উপর পড়ল। কোনও রকমে দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচলেও সে দিন আর স্কুলে যাওয়া হল না।’’
পানিহাটি রাজ্য সাধারণ হাসপাতাল বা পানিহাটি পুরসভা পরিচালিত মাতৃসদনের সামনেও ময়লা আর নর্দমা থেকে তোলা পাঁক পড়ে থাকে। আবার ঘোলা থানার কাছে রাস্তার পাশে বাজার বসে। সেই বাজারের ময়লাও জমে রাস্তার ধারে। স্থানীয় ব্যবসায়ী আশিস দাস বলেন, ‘‘আমরা পেটের দায়ে রাস্তার পাশে ব্যবসা করি। জমা ময়লা ভ্যাটে ফেলার কথা। কিন্তু এখানে গোটা রাস্তাই ভ্যাট।
সবাই পুরসভার জমানো ময়লার উপরেই ময়লা ফেলেন।’’
শঙ্কিত বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই ভাবে দিনের পরে দিন চললে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠবে। রাতে ঠিকমতো লক্ষ না করে চললে জমিয়ে রাখা জঞ্জাল বা পাঁকে পা পড়ে দুর্বিষহ অবস্থা হয়। সমস্যার কথা স্বীকার করে পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল (জঞ্জাল) রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পানিহাটির ভাগাড়টি কিছু দিন বন্ধ থাকাতেই সমস্যা গুরুতর হয়েছে। তার উপর ক’দিন ধরে সাফাই গাড়িগুলির চালকেরাও ঠিকমতো আসছিলেন না। ফলে রাস্তার ধারে জমা আবর্জনা দিনের পরে দিন বেড়ে দূষণ ছড়াচ্ছে। আমাদের চিন্তায় ফেলেছে। দ্রুত জঞ্জাল অপসারণে উদ্যোগী হব।’’




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.