দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
সোনারপুর
যন্ত্রণার উড়ালপুল
বাসিন্দাদের দাবি ছিল উড়ালপুলের। সে দাবি মিটেছে। কিন্তু অভিযোগ, সেই উড়ালপুলই এখন বাসিন্দাদের যন্ত্রণার কারণ হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ বাতিস্তম্ভের আলো জ্বলে না। রাতে গাড়ি পার্ক করা থাকে। মাঝেমধ্যে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। চলে অসামাজিক কাজকর্মও। এমন অবস্থা সোনারপুর উড়ালপুলের।
সোনারপুর উড়ালপুল নির্মাণ করে কেএমডিএ। এর পরে উড়ালপুলটি পূর্ত দফতরের হাতে তুলে দেওয়ার কথা। অভিযোগ, এখনও সেই কাজ করে উঠতে পারেননি কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সোনারপুর থানার পাশ থেকে আচার্য প্রফুল্লনগর (এপি) পর্যন্ত বিস্তৃত এই উড়ালপুলটির দীর্ঘ দিন ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। যাতায়াতের সুবিধার জন্য তাঁরাই এই উড়ালপুলের দাবি করেছিলেন।
সাধের উড়ালপুলই এখন বাসিন্দাদের যন্ত্রণার কারণ। তাঁদের অভিযোগ, প্রতি দিনই উড়ালপুলের অধিকাংশ বাতিস্তম্ভের আলো জ্বলে না। রাত বাড়লেই উড়ালপুলের অনেকটা জুড়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। এই জন্য মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে বলে বাসিন্দারা জানান। স্থানীয় বাসিন্দা রজতাভ বসু বলেন, “উড়ালপুলে বেআইনি ভাবে গাড়ি পার্ক করা থাকে। অনেকে অবৈধ পার্কিংয়ের ব্যবসা করেন। এর জন্য অনেক বার দুর্ঘটনাও ঘটেছে। সমাধানে কেউ উদ্যোগী হননি।” রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা সূত্রে খবর, সোনারপুর উড়ালপুলটি পুরসভার এক্তিয়ারভুক্ত নয়। তাই এ বিষয়ে পুরসভার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। পুরসভার উপ পুরপ্রধান এবং সোনারপুর (উত্তর) বিধানসভার বিধায়ক তৃণমূলের ফিরদৌসি বেগম বলেন, “ওই উড়ালপুল দেখভালের দায়িত্ব পুরসভার নয়, কেএমডিএর।” যদিও প্রাক্তন পুরপ্রধান সিপিএমের কমল গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়: ‘‘২০০৪-এ এই উড়ালপুল তৈরি হয়। দেখভালের দায়িত্ব পূর্ত দফতর অথবা কেএমডিএ-র। তবে পুরসভারও দায়িত্ব থেকে যায়।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাত বাড়লেই উড়ালপুলে বহিরাগতদের আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। চলে মাদক দ্রব্যের বেচাকেনা। তা ছাড়া নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ চলে গভীর রাত পর্যন্ত। আর এক বাসিন্দা রীতা রায় বলেন, “রাত বাড়লেই অসামাজিক কাজ শুরু হয়। কোনও নজরদারির ব্যবস্থা নেই। সন্ধ্যার পরে উড়ালপুল দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় করে।” দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার প্রবীণকুমার ত্রিপাঠী বলেন, “এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনার পূর্ত দফতরের হাইওয়ে ডিভিশনের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবাশিস ঘোষ বলেন, “সোনারপুর উড়ালপুলের সব ধরনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কেএমডিএ-র।” কিন্তু কেএমডিএ সূত্রে খবর, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তহবিলের দরকার হয়। কিন্তু কেএমডিএ-র এ রকম তহবিল নেই। এটি পূর্ত দফতরকে হস্তান্তর করার কথা। নানা পদ্ধতিগত কারণে তা আটকে আছে। কেএমডিএ-র জনসংযোগ আধিকারিক সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সোনারপুর উড়ালপুলটি নিয়ে কিছু সমস্যা আছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.