উত্তর কলকাতা: পাইকপাড়া, ব্যারাকপুর
উদ্যোগের ‘অভাব’
থমকে রাস্তা
রাজারহাট থেকে মধ্যমগ্রাম বন্ধ হয়ে আছে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রাস্তা তৈরির কাজ। প্রকল্পটির জন্য ইতিমধ্যেই খরচ হয়ে গিয়েছে সাড়ে তিন কোটি টাকা। বরাদ্দের আরও সাড়ে তিন কোটি দেড় বছরের উপর ব্যাঙ্কে পড়ে আছে। কাজ বন্ধ দেড় বছরের উপর। যেটুকু কাজ হয়েছে, পড়ে থাকায় তার অনেকটাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। তদারককারী সংস্থা হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (এইচআরবিসি)-এর মতে, যেটুকু জট আছে সরকার একটু উদ্যোগী হলেই তা কাটানো সম্ভব। তবে অভিযোগ উঠেছে উদ্যোগের অভাবের।
মুখ্যমন্ত্রী চান, উন্নয়নে প্রতিটি কাজে গতি আসুক। কিন্তু বাস্তবে অনেক সময়েই তার অভাব দেখা দিচ্ছে। রাজারহাট থেকে মধ্যমগ্রাম রাস্তাটি হলে উত্তর শহরতলি থেকে দক্ষিণ শহরতলিতে যাতায়াতে অনেক সুবিধা হবে। পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তার জন্য গত বামফ্রন্ট সরকার বরাদ্দ করে ২০ কোটি টাকা। তৎকালীন প্রভাবশালী দুই মন্ত্রী-সহ আধ ডজন নেতার উপস্থিতিতে এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় ২০১০-এর ১১ এপ্রিল। কাজটা করানোর জন্য কিছু ঝুপড়ি সরানোর দরকার ছিল। জবরদখল হঠাতে গিয়ে প্রশাসন বাধার মুখেও পড়ে। তখন দখলদারদের মদত দেয় তৃণমূল কংগ্রেস বলে অভিযোগ। এর পরে ঠিক হয়, পাশেই দখলদারদের পুনর্বাসন দিয়ে তৈরি হবে রাস্তা। এর জন্য আবাসন দফতর সেখানে জমি অধিগ্রহণ ও চিহ্নিতকরণের কাজও করে বলে জানান এইচআরবিসি-র ভাইস চেয়ারম্যান সাধনরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর পরে শুরু হয় ভোটের প্রচার। রাস্তার কাজ বন্ধ থাকে। রাজ্যে নয়া সরকার আসার পরে প্রায় এক বছর কাটতে চললেও নতুন উদ্যমে কাজটা শুরু হচ্ছে না। কাজ কতটা হয়েছে? সাধনবাবু বলেন, “প্রায় এক কিলোমিটার অংশের রাস্তার কাজ আংশিক হয়েছে। যেটুকু হয়েছে, তার উপর আরও কয়েকটা স্তর দিতে হবে।” তিনি স্বীকার করেন, এই অবস্থায় পড়ে থাকলে যেটুকু কাজ হয়েছে, তার অনেকটাই নষ্ট হয়ে যাবে। কেন ফের উদ্যোগী হচ্ছেন না? তাঁর জবাব, “প্রকল্পটির সঙ্গে হিডকো, আবাসন দফতর জড়িত।
শুনেছি হিডকো-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বিষয়টি জানেন। দেখা যাক, উনি কী করেন।” দেবাশিসবাবুর ব্যাখ্যা, “হ্যাঁ, এটা নিয়ে বৈঠক ডাকতে হবে। রাস্তাটির কাজ ফের শুরু করা দরকার।”
বিধানসভা ভোটের আগে রাজারহাট অঞ্চলের জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে জনমত তৈরির ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন পূর্ণেন্দু বসু। এখন তিনি শ্রমমন্ত্রী। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার কাজ আটকে থাকা প্রসঙ্গে সোমবার তিনি বলেন, “ওটার বিশদ খবর নেই আমার কাছে। ওই অংশের বিধায়ক সব্যসাচী দত্তকে প্রশ্ন করুন।” সব্যসাচীবাবু বলেন, “আমাকে তো কেউ বলেননি রাস্তাটা আটকে আছে! বললে, দেখব!”

ছবি: সুদীপ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.