অস্বাভাবিক-দর্শন একটি সদ্যোজাতকে দেখতে ভিড় উপচে পড়ল আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে শেষমেশ বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ডাকতে বাধ্য হন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, ওই দিন সকালেই আরামবাগের দক্ষিণ নারায়ণপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল শিশুটি। কন্যা সন্তানটির শারীরিক গঠনে কিছু অস্বাভাবিকত্ব আছে। মুহূর্তে সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। দুপুরের পর থেকে আশপাশের ৫-৬টি গ্রামের মানুষ ভিড় করেন হাসপাতালে। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ও কর্মীরা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমসিম খান। জনস্রোত সামাল দিতে তাঁরাও খবর দেন পুলিশকে। বিকেল ৪টে নাগাদ পুলিশ এসে মা-মেয়েকে নিয়ে যায় আরামবাগ হাসপাতালে।
এখানেই শেষ নয়। পুলিশের পিছু নিয়েছিল জনতা। ভিড় বাড়তে থাকে মহকুমা হাসপাতাল চত্বরেও। এমনকী ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মা ও শিশুকে বের করে আনার সময়ে পুলিশকে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হয়েছে। একটা সময়ে লাঠি উঁচিয়ে জমায়েতের দিকে তেড়ে যায় পুলিশ। মহকুমা হাসপাতালেও পরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
আরামবাগের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিত দাস বলেন, “জন্মগত ভাবে শিশুটির চেহারা অস্বাভাবিক। তাকে দেখতে হাজার দেড়েক লোক জমে। অন্য রোগীদের তাতে অসুবিধা হচ্ছিল। আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। সে কারণেই পুলিশ ডাকতে হয়েছিল।”
শুক্রবার মহকুমা হাসপাতালের সুপার নির্মাল্য রায় জানান, শিশুটিকে রাখা হয়েছিল নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে। শুক্রবার তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে কলকাতার হাসপাতালে। শিশুটির চামড়া, চোখ-মুখ-সহ দেহের আরও কিছু অংশের গঠন সম্পূর্ণ হয়নি বলে জানিয়েছেন সুপার। হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ সুব্রত ঘোষের কথায়, “জিন-ঘটিত একটি অসুখের জেরেই এই পরিস্থিতি। ডাক্তারি পরিভাষায় এই রোগের নাম কনজেনিট্যাল ইকথায়োসিস।”
|