|
|
|
|
|
|
|
আপনার সাহায্যে... |
|
কোলেস্টেরল বাড়তে দেবেন না
প্রস্টেট ক্যানসার ঠেকিয়ে রাখে।
সুজাতা মুখোপাধ্যায়কে জানালেন ইউরোলজিস্ট ডা. অমিত ঘোষ। |
|
|
রেড মিট বেশি খেলে নাকি প্রস্টেট ক্যান্সার হতে পারে?
পারে তো।
বয়স বাড়লে তাহলে রেড মিট বাদ?
ন’মাসে ছ’ মাসে খেতে পারেন। না খেলেও চলে। হার্ট, কোলেস্টেরল, প্রেশার সবের জন্যই ভাল।
অন্য আমিষ খাবার?
আমিষাশীদের তুলনায় নিরামিষাশীদের প্রস্টেট ক্যান্সার কম হয়। তবে প্রচুর তেল, ঘি, মাখন, বনস্পতি খেলে কিন্তু আবার সেই এক বিপদ।
কিন্তু মাছের তেল খাওয়া ভাল শুনেছি?
ঠিক শুনেছেন। ইলিশ, টুনা বা তৈলাক্ত মাছ খাওয়াও ভাল। ভাল কড লিভার অয়েল খাওয়া। তবে ক্যালোরি বেশি তো। একটু রয়েসয়ে।
আর কিছু?
টমেটো খুব ভাল। বিনস, সোয়াবিন, শুকনো ফল, বাদাম, ওট, ডাল, গ্রিন টি খান নিয়মিত। ভাল শাক-সব্জি, ফল, ভাল পাতা দিয়ে বানানো কালো চা। নিয়মিত মাছ খাওয়া দরকার। অল্পস্বল্প রেড ওয়াইনও খাওয়া যেতে পারে।
রোগ ঠেকাতে ব্যায়ামের ভূমিকা আছে?
হ্যা। দেখা গেছে যারা শুয়ে বসে থাকেন, তাদের এ রোগ বেশি হয়।
অর্থাৎ বয়স বাড়লে খাওয়া-দাওয়ার নিয়ম মানলে আর একটু-আধটু ব্যায়াম করলে প্রস্টেট ক্যান্সারের চান্স কম।
তা বলা যায়। তবে বাবা, কাকা, দাদু বা এ রকম ঘনিষ্ঠ কারও এ রোগ থাকলে বয়স ৫০ পেরোলে আরও কয়েকটি নিয়ম মানতে হবে।
যেমন?
প্রস্টেটের একটা ওষুধ খেতে হবে। সঙ্গে কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ।
কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ!
হ্যাঁ, প্রস্টেট ক্যান্সার ঠেকাতে এর বিরাট ভূমিকা।
ক্যান্সারের চান্স আছে কিনা না জেনেই এ সব ওষুধ খেতে হবে?
হ্যাঁ, একে বলে কেমো প্রোটেকশন।
তাহলে আর ক্যান্সার হবে না?
চান্স কমে যাবে। হলেও তার প্রকোপ কম থাকবে। প্রতিষেধক টিকার মতো আর কি!
কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা নেই, যা থেকে বোঝা যাবে ক্যান্সার হতে পারে কি না?
সে তো আছেই। ডাক্তার রেক্টাল এক্সামিনেশন করে দেখবেন প্রস্টেটের সাইজ ঠিক আছে কিনা। একটা বিশেষ সোনোগ্রাফি করতে হবে। করতে হবে রক্তের পিএসএ টেস্ট।
পিএসএ ৪-এর বেশি হলে ইউরোলজিস্ট পরীক্ষা করে দেখবেন ক্যান্সারের আশঙ্কা আছে কিনা।
পিএসএ ৪-এর বেশি মানে ক্যান্সার?
আরে না। তবে ইউরোলজিস্ট দেখাতে হবে। তাঁর মনে সন্দেহ হলে বায়োপ্সি করা হবে।
কখন এই সব পরীক্ষা করাতে হবে?
কষ্ট হলে। অর্থাৎ থেমে থেমে সরু ধারায় প্রস্রাব, প্রস্রাব আটকে আটকে যাওয়া বা হঠাৎ পুরো আটকে যাওয়া, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত। তবে পরিবারে এই ক্যান্সার থাকলে বা খাওয়া-দাওয়া ঠিকঠাক না হলে বয়স ৫০-এর ঘরে এলেই করে নেওয়া ভাল। |
|
৫০-এ কেন? এ তো বেশি বয়সের অসুখ! ৬০-৭০-এর আগে হয় বলে তো শুনিনি।
আজকাল হচ্ছে। সত্যি বলতে কী প্রস্টেট ক্যান্সার বাড়ছে হু হু করে।
তাহলে তো মহা বিপদ!
তেমন মারাত্মক বিপদ কিন্তু নয়। রোগ ঠেকানোর ব্যবস্থা করলে, শুরুতেই রোগ ধরে চিকিৎসা শুরু করে দিলে রোগ সেরে যায়।
সেরে যায়?
কম বয়সে, রোগের প্রাথমিক অবস্থায় অপারেশন করে দিলেই ঝামেলা শেষ।
এই অপারেশনের পর স্বাভাবিক বিবাহিত জীবন যাপন করা যায়?
সেক্স নার্ভ বাঁচিয়ে অপারেশন করা যায়।
রোগ খানিকটা এগিয়ে গেলে?
রেডিওথেরাপি করা হয়।
তার তো শতেক সাইড এফেক্ট!
সে দিন আর নেই। ভাল মেশিনে, ভাল রেডিও থেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে করলে কোনও কষ্টই বলতে গেলে হয় না। সামান্য দু’চারটে যা হয়, ওষুধে সেরে যায়।
রোগ ছড়িয়ে পড়লে?
বোন স্ক্যান করে যদি দেখা যায় রোগ হাড়ে ছড়িয়ে গেছে, তাহলে হরমোন থেরাপি করা হয়। টেস্টিস কেটে বাদ দিলেও কাজ হয়।
দেরিতে ধরা পড়লে চিকিৎসা করে আর লাভ আছে?
অবশ্যই আছে। এটাই তো প্রস্টেট ক্যান্সারের সুবিধে। শুরুতে ধরা গেলে রোগমুক্তি, আর দেরিতে ধরা পড়লেও ভোগান্তিহীন জীবন।
সে জীবনটাই বা কত দিনের! অ্যাডভান্স প্রস্টেট ক্যান্সার মানে তো মৃত্যুর পরোয়ানা!
ভুল ধারণা। ভাল করে চিকিৎসা করালে এমনও হতে পারে মৃত্যু হল হার্ট অ্যাটাকে, স্ট্রোকে বা অন্য কোনও কারণে। ক্যান্সারে নয়।
৮০ বছর বয়সে যদি রোগ ধরা পড়ে?
চিকিৎসা না করালে বেশি ভোগান্তি।
কী রকম?
প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যেতে যেতে অ্যানিমিয়া হবে। প্রস্রাব আটকে মারাত্মক অবস্থা হতে পারে। তাছাড়া এ রোগ হাড়ে ছড়ায়। মারাত্মক ব্যথা হবে। হিপ বা শিরদাঁড়া ভেঙে গেলে প্যারালিসিস অবশ্যম্ভাবী।
চিকিৎসায় এই ভোগান্তি একটু পিছিয়ে দেওয়া যাবে, তাই তো?
ভোগান্তি হবে না। রেডিওথেরাপি করলে ব্যথা যন্ত্রণা, রোগ সবই কমবে।
|
যোগাযোগ- ৯৯০৩৭৭০০০৪/ ৯৮৩০০১০০০৪ |
|
|
|
|
|