|
|
|
|
আঙুল দিল্লির দিকে |
সরকার বাঁচলেও ঝাড়খণ্ডে জোটে ধরল চিড় |
সঞ্জয় চক্রবর্তী • রাঁচি |
জোট বাঁচলেও ঝাড়খণ্ডের শাসক জোটে চিড় ধরলই। জোট শরিকদের মধ্যে ‘লঘু’ হয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অর্জুন মুন্ডার সেই দাপুটে কর্তৃত্বও। অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। এবং এর জন্য রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব আঙুল তুলছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকেই। ঝাড়খণ্ডের রাজ্যসভা ভোটে বিজেপি-র পরাজয় ও নির্বাচন-উত্তর পরিস্থিতিতে রাজ্যের জোট রাজনীতি নিয়ে সর্বভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডার খুব শীঘ্রই দিল্লি যাওয়ার কথা। রাজ্য বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, জাতীয় নেতাদের কাছে দলের এই মনোভাবের কথা স্পষ্ট করেই জানাবেন অর্জুন মুন্ডা।
রাজ্যসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর রাজ্যের শাসক গোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিজেপির গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। বিশেষত রাজ্য সরকারের জোটসঙ্গীদের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক যে একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে, ভোটের ফলে প্রমাণ মিলেছে তার-ও। এ ক্ষেত্রে রাজ্যসভার নির্বাচনে সরকারের দুই বড় শরিক বিজেপি এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-র লড়াইয়ে সরকারের তৃতীয় শক্তি, আজসুর বিজেপির বিরোধিতাই তার জ্বলন্ত উদাহরণ। বিজেপি-র পক্ষে আরও উদ্বেগের বিষয়, এই ভোটে জাতীয় দলের ‘দাদাগিরি’-র প্রেক্ষিতে আঞ্চলিক দলের ‘গাঁটবন্ধন’-কে শক্তিশালী করার স্লোগান তুলেছে শিবু সোরেনের ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা।
বস্তুত, জোটসঙ্গীদের উপরে বিজেপির বিন্দুমাত্র নিয়ন্ত্রণ না-থাকার ঘটনাই প্রকাশ পেয়েছে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যসভার ভোটে। যদিও বিষয়টিকে ঠিক এ ভাবে দেখতে রাজি নন রাজ্য বিজেপি-রই একাংশ। তাদের মতে, রাজ্যসভার ভোটে জেএমএমকে হারিয়ে বিজেপি প্রার্থীর জয় সুনিশ্চিত করার মতো কোনও পরিকল্পনাই নিতে পারেনি দল। মূলত জেএমএমের রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির কৌশলেই পারেনি।
বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য শিবলাল ঘোষ আজ স্পষ্টই বলেছেন, “দলীয় প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে জেএমএম গোড়া থেকেই বিজেপির উপর ধারাবাহিক রাজনৈতিক চাপ তৈরি করেছে। এমনকী বিজেপি প্রার্থী প্রত্যাহারের দাবিতে জোটধর্ম পালনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে জেএমএমকে সমর্থন করার জন্য নরমে-গরমে ক্রমাগত বিজেপিকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছিল জেএমএম। জোট সরকারের ‘সুস্থিতি’ রক্ষার শর্ত হিসেবে জেএমএমকে সমর্থনের দাবি করে পরোক্ষে সরকারে অস্তিত্ব নিয়ে প্রচ্ছন্ন হুমকিও দেওয়া হয়েছিল বিজেপিকে।” এই নেতাদের মতে, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সরকারের ‘অকাল মৃত্যু’ রোধ করাই হয়ে উঠেছিল রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের প্রধান কাজ। আর বিজেপির হার স্বীকার করা ছাড়া জোট সরকার বাঁচানোর বিকল্প কোনও পথও ছিল না।
দলীয় প্রার্থীর পরাজয়ের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দীনেশানন্দ গোস্বামী বলেন, “জোটসঙ্গীদের সমর্থন না-পাওয়ায় আমরা হেরে গিয়েছি। এই হারের থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে চলতে হবে।” জোট সরকার বাঁচানোর প্রশ্ন এড়িয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতির বক্তব্য, “অনৈতিকতার পথ ধরে কয়েকজন নির্দল প্রার্থীর ভোট আমরা জোগাড় করতে হয়তো পারতাম। কিন্তু ভোটে জয়ী হওয়ার জন্য নীতি বিসর্জন দিয়ে অসাধু পন্থা আমরা
গ্রহণ করিনি।” |
|
|
|
|
|