|
|
|
|
রাষ্ট্রপতি ভোট নিয়ে জোর বিতর্ক সরকারের ঘরে-বাইরে |
দুই ক্যাবিনেট মন্ত্রক ফেরত চান করুণা |
শঙ্খদীপ দাস • নয়াদিল্লি |
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রস্তাবিত প্রার্থীকে সমর্থন জানাতে তাঁর যে কোনও দ্বিধা নেই, তা এক সপ্তাহ আগেই জানিয়ে দিয়েছেন করুণানিধি। এমনকী ডিএমকে সূত্রে বলা হচ্ছে, এ ব্যাপারে কালাইনারের বিশেষ মাথাব্যথাও নেই। কিন্তু একই সঙ্গে সনিয়া গাঁধীর দূত এ কে অ্যান্টনিকে করুণানিধি জানিয়ে দিয়েছেন, এ বার তাঁদের দু’টি ক্যাবিনেট মন্ত্রক ফিরে পেতে চাইছে ডিএমকে। সংসদের বাজেট অধিবেশনের পর এ ব্যাপারে যেন আলোচনা শুরু করেন কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।
স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারির অভিযোগে দেড় বছর আগে ডিএমকে নেতা আন্দিমুথু রাজাকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। রাজা এখনও তিহাড় জেলে। একই ভাবে দুর্নীতির অভিযোগে মন্ত্রিসভা তথা বস্ত্র মন্ত্রক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ডিএমকে-এর অন্য নেতা দয়ানিধি মারানকে। অতীতে টেলিকম মন্ত্রী থাকাকালীন মারান দুর্নীতি করেছিলেন বলে অভিযোগ। কিন্তু তখনই দলের অন্য কোনও নেতাকে মন্ত্রী করতে আগ্রহী ছিলেন না করুণানিধি। বরং মেয়ে কানিমোজিকে জামিনে মুক্ত করার ব্যাপারে তাঁর উদ্বেগ ছিল সবচেয়ে বেশি। ডিএমকে শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, কানিমোজি জামিনে মুক্ত হয়েছেন অনেক দিন হয়ে গেল। স্পেকট্রাম মামলাও এখন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ বার করুণানিধি দু’টি ক্যাবিনেট মন্ত্রিপদ ফিরে পেতে চাইছেন। কারণ, তামিলনাডুতে ডিএমকে এখন শুধু ক্ষমতাচ্যুতই নয়, ২৩৪টি আসনের বিধানসভায় দলের বিধায়ক সংখ্যা মাত্র ২৫। ফলে কেন্দ্রে দলের মন্ত্রীসংখ্যা বাড়লে রাজ্য রাজনীতিতে কিছুটা প্রভাব বাড়বে বলে মনে করছেন ডিএমকে নেতৃত্ব। তা ছাড়া, আর দু’বছর পরেই লোকসভা ভোট। দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের শুরুতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ডিএমকে-র তিন জন ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু এখন ক্যাবিনেট মন্ত্রী বলতে রয়েছেন করুণানিধি পুত্র আলাগিরি। সেই সঙ্গে ডি নেপোলিয়ন, এস গাঁধীসেলভন এবং এস এস পালানিমনিক্কম প্রতিমন্ত্রী হিসাবে রয়েছেন।
দিল্লিতে কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, করুণানিধির সেই দাবি সনিয়াকে জানিয়েছেন অ্যান্টনি। কংগ্রেসের এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, বাজেট অধিবেশনের পর সনিয়া সংগঠন এবং মন্ত্রিসভায় যে বড় রদবদল করতে চাইছেন সেই বার্তা ডিএমকে নেতৃত্বের কাছেও পৌঁছেছে। ফলে এই সুযোগটা এখন তাঁরাও নিতে চাইছেন।
প্রধানমন্ত্রী-সহ মোট ৮১ জন থাকতে পারেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ৩৩ জন ক্যাবিনেট মন্ত্রী, ৭ জন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী এবং ৩৪ জন প্রতিমন্ত্রী মিলিয়ে মোট ৭৮ জন মন্ত্রী রয়েছেন। ফলে আরও তিন জন মন্ত্রী করার সুযোগ এমনিতে রয়েছে। ডিএমকে-র দু’টি মন্ত্রক যেমন প্রাপ্য রয়েছে, তেমনই তৃণমূল কংগ্রেসেরও অন্তত একটি মন্ত্রক প্রাপ্য রয়েছে। কারণ কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী থেকে রেলমন্ত্রী পদে মুকুল রায় শপথ নেওয়ার পর, তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে নতুন কোনও মুখ আর মন্ত্রিসভায় আসেনি।
তবে প্রশ্ন হল, ডিএমকে কি এখন তাঁদের পুরনো দুই মন্ত্রক, অর্থাৎ টেলিকম ও বস্ত্র মন্ত্রক চাইছে? ডিএমকে সূত্রে বলা হচ্ছে, করুণানিধি এখন স্রেফ দু’টি মন্ত্রক ফিরে পাওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। রদবদল নিয়ে আলোচনা শুরু হলে তখন এ ব্যাপারে বিশদে কংগ্রেসকে জানাবেন করুণানিধি। একই সঙ্গে নতুন কাকে কাকে মন্ত্রী করা যেতে পারে, তা নিয়ে দল ও পরিবারের মধ্যে আলোচনা-ও শুরু করবেন।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, ডিএমকে-কে বস্ত্র মন্ত্রক ফিরিয়ে দিতে কোনও অসুবিধা দেখছেন না কংগ্রেসের অনেক নেতা। তবে নতুন করে টুজি লাইসেন্স নিলামের মুখে তাদের টেলিকম মন্ত্রক ফিরিয়ে দেওয়ার একটু অসুবিধা রয়েছে বলে তাঁরা মনে করছেন। দশ জনপথ ঘনিষ্ঠ কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, টুজি কেলেঙ্কারির পরে এই মন্ত্রক এখন সতর্কতার সঙ্গে পরিচালনা করা প্রয়োজন। বাজেট অধিবেশন শেষ হলে তবেই রদবদল এবং এই সব বিষয়ে আলোচনা গতি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। |
|
|
|
|
|