উচ্ছেদ হয়েছে রাস্তার দু’ধারে ফুটপাথের যাবতীয় অবৈধ দোকান ও ঝুপড়ি। শুধু রয়েছে ফুটপাথ ‘দখল’ করে থাকা দলীয় কার্যালয়গুলি। অভিযোগ, উচ্ছেদের সময়ে সমস্ত অবৈধ দোকান গুঁড়িয়ে দিলেও তৃণমূল ও সিপিএমের দলীয় কার্যালয় ভাঙার ‘সাহস’ হয়নি প্রশাসনের। অবৈধ দোকান ভাঙার সময়েই ওই পার্টি অফিসগুলি কেন ভাঙা হল না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়েরা।
যশোহর রোডের বাঙুর মোড় থেকে লেকটাউন হয়ে পাতিপুকুর রেলব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার দু’দিকের চেনা ছবিটা অনেকটাই পাল্টেছে। অবৈধ ঝুপড়ি, দোকান কার্যত কিছুই নেই। পাতিপুকুর রেলব্রিজের নীচে তৈরি হচ্ছে আন্ডারপাস। ভবিষ্যতে ওই এলাকায় গাড়ির গতি আরও বাড়বে। মানুষ যাতে কোনও বাধা ছাড়াই ফুটপাথ দিয়ে চলতে পারেন, তাই ওই রাস্তার দু’দিকের ফুটপাথ দখলমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। তবে উচ্ছেদ অভিযানের প্রায় এক মাস পরেও ‘কাঁটা’ দলীয় কার্যালয়গুলি। আরও অভিযোগ, রাজনৈতিক নেতাদের ছবি লাগানো দোকানগুলিও ভাঙা হয়নি। |
বাঙুর থেকে একটু এগিয়ে বরাট বাসস্ট্যান্ডের পাশেই দক্ষিণ দমদম শহর যুব তৃণমূলের ২০ নম্বর ওয়ার্ড অফিস। আশপাশের বহু দোকান ভাঙা হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছে অফিসটি। অন্য দিকে, যশোহর রোডের তেঁতুলতলা মোড়ের কাছে ফুটপাথেই উত্তর ২৪ পরগনা সিটুর ট্যাক্সি ইউনিয়নের অফিস। পাশেই অস্থায়ী চায়ের দোকান ছিল রাজু মণ্ডলের। তাঁর প্রশ্ন, “আমাদের মতো গরিব দোকানদারদের উচ্ছেদ হতে হল। কিন্তু পার্টি অফিসগুলি তো রয়েই গেল। আমরা কেন ফের ফুটপাথে বসব না?”
১৭ মার্চ রাতে বিধাননগরের মহকুমা শাসকের নেতৃত্বে উচ্ছেদ হয়। তার আগে মহকুমা শাসকের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের আলোচনাও হয়। তা-ও অফিস ভাঙা হল না কেন? বিধাননগরের মহকুমা শাসক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলি কিছু সময় চেয়েছিল। দলীয় অফিস ভাঙার জন্য তাদের নির্দিষ্ট সময় দিয়েছি। তার মধ্যে ভাঙা না হলে আমরাই ভেঙে ফেলব।”
রাজনৈতিক দলগুলির অবশ্য তাদের দলীয় কার্যালয় ভাঙার ব্যাপারে তেমন হেলদোল নেই। এলাকার তৃণমূল বিধায়ক সুজিত বসু বলেন, “বিতর্ক তৈরি হবে বলেই এখনও দলীয় কার্যালয়গুলি ভাঙা হয়নি।” অন্য দিকে, এলাকার সিপিএম নেতা তথা কাউন্সিলর পলাশ দাস বলেন, “উচ্ছেদ যে হবে জানতাম না। আমাদের সর্বদলীয় আলোচনায় ডাকা হয়নি। একটি চিঠি পেয়েছিলাম মাত্র। কী ভাঙা হয়েছে আর কী হয়নি, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।” |