ছাগল চুরির চেষ্টার অভিযোগে নয় মাসের গর্ভবতীকে মহিলাকে গাছে বেঁধে পুলিশের সামনেই মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। মালদহের রতুয়ার আড়াইডাঙ্গা এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যায় পুলিশ। কিন্তু পুলিশের সামনেই ঘটনাটি ঘটলেও অভিযুক্তদের ধরা দূরের কথা কোনও মামলা কেন করা হয়নি সেই প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারাই। পুলিশ গিয়ে ওই মহিলাকে উদ্ধার করলেও তিনি বা তাঁর হয়ে কেউ অভিযোগ না করায় মামলা করা হয়নি বলে পুলিশের দাবি। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেছেন, “কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পেলে পুলিশ তো যাবেই। আর গেলেই মামলা করতে হবে এমন তো নয়। আর এই ক্ষেত্রে কেউ অভিযোগ জানাননি।”
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, তসলিমা বিবি নামে ওই মহিলার বাড়ি রতুয়ার পরানপুরটারি এলাকায়। গত মঙ্গলবার দুপুরে লাগোয়া আড়াইডাঙ্গা এলাকায় একটি আমবাগানে বেঁধে রাখা ছাগলের পাল থেকে ওই মহিলা একটি ছাগল নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটা দেন বলে অভিযোগ। আমবাগানেই বসেছিলেন ছাগলের মালিক মদন ঘোষের পরিবারের বধূরা। তাঁরাই তসলিমা বিবিকে দড়ি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধোর করেন বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে সেখানে যায় স্থানীয় পুকুরিয়া ফাঁড়ির পুলিশ। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। উল্টে পুলিশের সামনেই ওই মহিলাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, তসলিমা বিবি দাবি করেন ৫ দিন আগে তাঁর একটি ছাগল চুরি হয়েছিল। ছাগলের পালে তিনি তাঁর খোয়া যাওয়া ছাগলটি রয়েছে কী না দেখতে গিয়েছিলেন। চুরি করার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। পুলিশ মহিলাকে উদ্ধার করার পর তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। তিনি সুস্থ রয়েছেন বলে পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে। পুকুরিয়া ফাঁড়ির ইনচার্জ আশুতোষ পাল বলেন, “তসলিমা বিবি কোনও অভিযোগ করতে চাননি। তাই কারও বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি।” মদন ঘোষের বৌদি অভিযুক্ত কবিতা ঘোষ বলেন, “তসলিমা আমরা ছাগল নিয়ে যাচ্ছিল। ওঁকে ধরার পর আমাকেই মারতে আসে। তখন রাগে ওঁর গালে দুটো চড় মেরে স্থানীয় কয়েকজনের সাহায্যে গাছে বেঁধে রাখি। মারধোর করা হয়নি। গর্ভবতী টের পেয়ে ওঁকে ছেড়েও দেওয়া হয়।” রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ঘটনার কথা জানেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বুধবার সারাদিন আড়াইডাঙ্গায় ছিলাম। কেউ কিছু জানায়নি। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” রতুয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএমের সহসভাপতি আবদুল কুদ্দুস বলেন, “ঘটনা জানা নেই। পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।” |